অসম্পূর্ণ: সল্টলেক এবং রাজারহাট-গোপালপুরের মধ্যে গাড়ি নিয়ে যাতায়াতের এই সেতুর কাজই থমকে রয়েছে। নিজস্ব চিত্র
দীর্ঘসূত্রতা ছিলই। সঙ্গে যুক্ত হয়েছে অতিমারির সময়ে শ্রমিকের অভাব, বর্ষায় খালের জল বেড়ে যাওয়া। সব মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত তৈরি হতে পারল না কেষ্টপুর খালের উপরে গাড়ি চলাচলের সেতু। অথচ স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে এর প্রয়োজনীয়তা তৈরি হয়েছে বহু বছর ধরেই।
বিধাননগর ও রাজারহাট-গোপালপুর, এই দুই পুরসভা মিলিয়ে কয়েক বছর আগেই বিধাননগর পুরসভা তৈরি হয়েছিল। অথচ রাজারহাট-গোপালপুর এলাকা থেকে মূল বিধাননগর তথা সল্টলেকে পৌঁছতে এখনও বহু পথ ঘুরতে হয়। লেক টাউনের কাছে বেলি ব্রিজ তৈরি হলেও সেটি দিয়ে সল্টলেকে গাড়ি ঢোকে। কিন্তু সল্টলেক থেকে ভিআইপি রোডের দিকে আসতে হলে উল্টোডাঙা হয়েই পৌঁছতে হয়। তাই ভিআইপি রোড হয়ে কেষ্টপুরের মধ্যে দিয়ে সল্টলেকের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা তৈরি করতেই ওই সেতুর পরিকল্পনা করা হয়েছিল। যেটি কেষ্টপুর এবং ২০৬ খেয়াঘাটের মধ্যে যোগাযোগ রক্ষা করবে।
সেচ দফতরের আশা, আগামী বছর ওই সেতু চালু করা সম্ভব হবে। যদিও ১ বছর ৯ মাসের এই প্রকল্পের কাজের মেয়াদ অনেক দিন আগেই শেষ হয়ে যাওয়ার কথা মেনে নিচ্ছে সেচ দফতর। বিলম্বের পিছনে অবশ্য কয়েকটি কারণ রয়েছে বলেও দাবি সেচ দফতরের। আধিকারিকেরা জানান, শুরুতে যে নকশা মেনে সেতু তৈরির কথা ছিল, পরে তার পরিবর্তন করতে হয়। ফলে নির্মাণকাজে দেরি হয়েছে। আবার অতিমারির জেরে গত দেড় বছর ধরে শ্রমিক পাওয়ারও সমস্যা হচ্ছিল। এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘ট্রেন বন্ধের কারণে শ্রমিকেরা আসতে পারেননি। এখন পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় আবার কাজ চালু করা গিয়েছে।’’ বর্তমানে অতিবৃষ্টি সেতু নির্মাণের কাজে বাধা সৃষ্টি করছে। সেচ দফতরের চিফ ইঞ্জিনিয়ার নয়নজ্যোতি ঘোষের কথায়, ‘‘ভারী বৃষ্টির কারণে খালে জলের তল বেড়ে গিয়েছে। ঝালাইয়ের কাজ করতে সমস্যা হচ্ছে।’’
রাজারহাট-গোপালপুরের প্রাক্তন বিধায়ক তথা প্রাক্তন মন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসুর আমলেই ওই সেতু তৈরির প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছিল। পূর্ণেন্দুবাবু বলেন, ‘‘আমি মন্ত্রী থাকাকালীন কাজ চলছিল। ওই সেতুটির খুব প্রয়োজন রয়েছে ওই এলাকায়।’’
বাম আমলে এক বার কেষ্টপুর খালের উপরে একটি সেতু তৈরির চেষ্টা হয়েছিল। সেই কাজের জন্য এলাকার বাসিন্দাদের থেকেও আর্থিক সাহায্য নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু রাস্তার থেকে উচ্চতা অনেক বেশি হওয়ায় সেতুর কাজ বন্ধ করে দিতে হয়। বিধাননগরের ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের কোঅর্ডিনেটর বিকাশ নস্করের কথায়, ‘‘বাম আমলের ওই সেতু তৈরি করতে গিয়ে অর্থের অপচয় হয়েছে। আশা করা যায় নতুন সেতুর কাজ দ্রুত শেষ হবে। আমরা সেচ দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি।’’