Single Use Plastic

জরিমানা আদায়ও থমকে, ‘নিষিদ্ধ’ প্লাস্টিকের দেদার ব্যবহার চলছেই

আইন হলেও আজও শহর কলকাতার বাজার-দোকানে দেদার ব্যবহৃত হচ্ছে পাতলা প্লাস্টিক। পরিবেশকর্মীদের অভিযোগ, এই সমস্ত প্লাস্টিক যত্রতত্র পড়ে থেকে বিপদ ডেকে আনে।

Advertisement

মেহবুব কাদের চৌধুরী

কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৮:২৯
Share:

রমরমা: পার্ক সার্কাসের বাজারে এখনও চলছে ‘নিষিদ্ধ’ প্লাস্টিকের দেদার ব্যবহার। —নিজস্ব চিত্র।

আইন শুধু খাতায়-কলমেই! ২০২২ সালে ১২০ মাইক্রনের কম ঘনত্বের প্লাস্টিকের ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছিল কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ। অথচ, তার এক বছর পরেও শহরের উত্তর থেকে দক্ষিণে এখনও ‘নিষিদ্ধ’ প্লাস্টিকের রমরমা চোখে পড়ার মতো। পুরসভার তরফে স্রেফ দায়সারা প্রচার করেই কাজ সারা হচ্ছে বলে অভিযোগ। কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের নির্দেশ পেয়ে প্রথমে পুরসভা ঠিক করেছিল, প্লাস্টিক ব্যবহারে যাঁরা নিয়মভঙ্গ করবেন, সেই সমস্ত বিক্রেতাকে ৫০০ টাকা ও ক্রেতাদের ৫০ টাকা করে জরিমানা করা হবে। পুরসভার বাজার দফতরের তরফে সেই জরিমানা আদায় করার কথা ছিল। কিন্তু আজ পর্যন্ত সেই জরিমানা আদায় করা হয়নি।

Advertisement

তবে, বাজারে এখনও ১২০ মাইক্রনের কম পুরু প্লাস্টিকের ব্যবহার নিয়ে মেয়র পারিষদ (পরিবেশ) স্বপন সমাদ্দারের সাফাই, ‘‘প্লাস্টিক বাইরের রাজ্য থেকে এ রাজ্যে ঢুকছে। ওই প্লাস্টিক কে আটকাবে? নিষিদ্ধ প্লাস্টিকের বিক্রি বন্ধ করতে কেন্দ্রীয় সরকার কঠোর আইন প্রণয়ন না করলে পাতলা প্লাস্টিক বন্ধ করা খুব মুশকিল।’’

আইন হলেও আজও শহর কলকাতার বাজার-দোকানে দেদার ব্যবহৃত হচ্ছে পাতলা প্লাস্টিক। পরিবেশকর্মীদের অভিযোগ, এই সমস্ত প্লাস্টিক যত্রতত্র পড়ে থেকে বিপদ ডেকে আনে। বিশেষত, নিকাশি নালার গালিপিটে তা আটকে গিয়ে বর্ষায় জল জমছে এলাকায়। পরিবেশকর্মীরা জানাচ্ছেন, আগের তুলনায় এখন ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধির অন্যতম কারণই হল, প্লাস্টিকের ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় নিকাশির পথ অবরুদ্ধ হয়ে যাওয়া। অথচ, ২০২২ সালে কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের নির্দেশিকা পেয়ে প্রথম প্রথম পুরসভার তরফে প্রচার চালানো হয়েছিল। পরে সেই প্রচার বন্ধ হয়ে যায়। এমনকি, পুরসভার প্রতিশ্রুতি মতো পাতলা প্লাস্টিক ব্যবহারকারী ক্রেতা-বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে জরিমানা নেওয়ার কাজটাও শুরু করা হয়নি।

Advertisement

কিন্তু কেন? পুর পরিবেশ বিভাগের আধিকারিকদের পাল্টা যুক্তি, শহরে পুকুর ভরাট ঠেকানো, হেরিটেজ ভবন রক্ষার দায়িত্ব-সহ একাধিক কাজ ওই বিভাগের মাত্র ২০ জন কর্মী-আধিকারিকের কাঁধে রয়েছে। তাঁদেরই এক জনের অভিযোগ, ‘‘এত কম লোকবল নিয়ে দফতরের একাধিক কাজ সামলানো মুশকিল হয়ে পড়েছে।’’ আবার পাতলা প্লাস্টিকের ব্যবহার ঠেকাতে জরিমানা আদায়ের ক্ষেত্রে বাজার ও লাইসেন্স বিভাগকেও পরিবেশ বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় রেখে কাজ করার কথা বলা হয়েছিল। অভিযোগ, গত এক বছরে সেই কাজও বিন্দুমাত্র হয়নি। যদিও মেয়র পারিষদের (পরিবেশ) যুক্তি, ‘‘শুধু জরিমানা করে কাজের কাজ হবে না। নিষিদ্ধ প্লাস্টিক বন্ধে কেন্দ্রকে কঠোর ব্যবস্থা নিতেই হবে। যাতে কারখানায় পাতলা প্লাস্টিক তৈরি পুরোপুরি বন্ধ করা যায়।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement