নববর্ষে শব্দদূষণ রুখতে রাজ্য পুলিশের ডিরেক্টর জেনারেল (ডিজি)-কে চিঠি দিলেন পরিবেশকর্মীরা। প্রতীকী ছবি।
নববর্ষে শব্দদূষণ রুখতে রাজ্য পুলিশের ডিরেক্টর জেনারেল (ডিজি)-কে চিঠি দিলেন পরিবেশকর্মীরা। ডিসেম্বরে এবং নববর্ষ উদ্যাপনে যে ভাবে চার দিকে ডিজে-র উপদ্রব চলে ও জোরে মাইক বাজানো হয়, তা নিয়ন্ত্রণের আবেদন জানানো হয়েছে ওই চিঠিতে।
পরিবেশকর্মীদের একাংশের বক্তব্য, প্রতি বছরই শীতের মরসুমে পিকনিক, উৎসব লেগে থাকে। সেই সমস্ত জায়গায় উদ্দাম ভাবে ডিজে চালানো হয়। শব্দবিধি না মেনে বাজানো হয় মাইক। শুধু পিকনিকই নয়, শীতে যে সব উৎসব-অনুষ্ঠান হয়, তার সিংহভাগ জায়গাতেই বিধিভঙ্গের এমন ঘটনা লক্ষ করা যায়। সেই কারণে তা বন্ধ করতে আবেদন জানিয়েছেন তাঁরা।
পরিবেশকর্মীদের সংগঠন ‘সবুজ মঞ্চ’-এর সাধারণ সম্পাদক নব দত্ত জানাচ্ছেন, উৎসব-উদ্যাপন নিয়ে তাঁদের কিছু বলার নেই। সেটা তো থাকবেই। কিন্তু তা করতে গিয়ে যে ভাবে শব্দ-তাণ্ডব চলে, সেটা সমস্যার কারণ। তাঁর কথায়, ‘‘প্রতিবেশীর অসুবিধা বা বাড়ির বয়স্ক সদস্যদের অসুবিধার কথা চিন্তা না করে তারস্বরে মাইক চালালাম, ডিজে বাজালাম, এটাই রীতি হয়ে গিয়েছে। সঙ্গে শব্দবাজি তো আছেই। পুলিশ এ বিষয়ে কড়া পদক্ষেপ না করলে হবে না।’’
এই সূত্রেই উঠে এসেছে মাইক্রোফোন-সহ সব শব্দযন্ত্রে বাধ্যতামূলক ভাবে সাউন্ড লিমিটর (শব্দের প্রাবল্য নিয়ন্ত্রণের জন্য) লাগানোর বিষয়টিও। সংগঠনের আবেদন, সরকারি অনুষ্ঠানই হোক বা অন্য কোনও অনুষ্ঠান, সমস্ত জায়গাতেই শব্দযন্ত্রে সাউন্ড লিমিটর লাগানো রয়েছে কি না, তা নিশ্চিত করা হোক। সেই সঙ্গে আয়োজকদের জন্য স্পষ্ট নির্দেশও থাকুক।
প্রসঙ্গত, গত মাসেই রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ জানিয়েছিল, রাজ্যে যত শব্দযন্ত্র প্রস্তুতকারী সংস্থা রয়েছে তাদের তালিকা তৈরি করে পুলিশ-প্রশাসনের কাছে পাঠানো হয়েছে। যাতে ওই সংস্থার তৈরি শব্দযন্ত্রে সাউন্ড লিমিটর রয়েছে কি না, তা যাচাই করে দেখতে পারে স্থানীয় পুলিশ-প্রশাসন। পর্ষদ জানিয়েছিল, সারা রাজ্যে প্রায় ২৫ হাজার শব্দযন্ত্র প্রস্তুতাকারীর তথ্য জোগাড় করা হয়েছে। থানাভিত্তিক এমন ভাবে সেই তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে, যাতে তালিকা দেখেই সংশ্লিষ্ট সংস্থা সম্পর্কে সব জানতে পারা যায়।
পর্ষদের এক কর্তা জানান, শব্দমাত্রা যাতে ৬৫ ডেসিবেলের মধ্যে থাকে, তার জন্য সব চেষ্টা করা হচ্ছে। তাঁর কথায়, ‘‘এ ব্যাপারে আমরা প্রতিনিয়ত পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছি।’’