প্রতীকী ছবি।
পূর্ব কলকাতায় জলাভূমি ভরাট করে বেআইনি নির্মাণের অভিযোগ বারবারই ওঠে। এ বার রাজ্যের পরিবেশ দফতর জলা ভরাটের বিভিন্ন ঘটনার একটি তালিকা প্রকাশ করে সেই অভিযোগের সত্যতা প্রমাণ করল। সোমবার বিধাননগরে পরিবেশ দফতরের অফিসে একটি বৈঠক ডাকেন ওই দফতরের প্রধান সচিব প্রভাতকুমার মিশ্র। সেখানে
জানানো হয়, ২০০৭ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত পূর্ব কলকাতায় জলাভূমি ভরাট করে বেআইনি নির্মাণের অভিযোগে দুই ২৪ পরগনা এবং কলকাতার বিভিন্ন থানায় মোট ৩৫৭টি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। কিন্তু কোনও ক্ষেত্রেই কিছু করা যায়নি। বরং জলাভূমি ভরাট করে বেআইনি নির্মাণ বেড়েই চলেছে।
এ দিনের বৈঠকে দুই ২৪ পরগনা, কলকাতা পুরসভা, বিধাননগর পুরসভা ও পুলিশের পদস্থ কর্তাদের ডেকে পাঠানো হয়েছিল। সকলকেই বলা হয়েছে, পুলিশে দায়ের হওয়া অভিযোগের ভিত্তিতে যে মামলা শুরু হয়েছে, সেগুলির কী অবস্থা, তা জানানো হোক। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে সেই কাজ করতে বলা হয়েছে। তখন আবার বৈঠক ডাকা হবে। পরিবেশ দফতরের তালিকায় দেখা গিয়েছে, সব চেয়ে বেশি অভিযোগ এসেছে দুই ২৪ পরগনা থেকে। কলকাতা পুরসভার অধীনে থাকা পাঁচটি এলাকায় জলাভূমি
ভরাট করে বেআইনি নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। ওই সমস্ত এলাকা রয়েছে প্রগতি ময়দান থানার ৫৮টি মৌজায়। জলাভূমি ভরাট করে কোথাও বাড়ি, কোথাও বহুতল, কোথাও বা গ্যারাজ তৈরি হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে রিপোর্টে। এ বিষয়ে কলকাতার পুর কমিশনার বৈঠকে জানিয়েছেন, কলকাতার মৌজা বলে উল্লেখ করা থাকলেও ঠিক কোন জায়গায় জলাভূমি ভরাট করে বেআইনি নির্মাণ হয়েছে, তা চিহ্নিতকরণের কাজ করতে গিয়ে বিভ্রান্তি বেড়েছে। সেই কারণে ‘ইস্ট কলকাতা ওয়েটল্যান্ডস ম্যানেজমেন্ট অথরিটি’র (ই কে ডব্লিউ এম এ) কর্মীকে ওই কাজে দরকার বলে বৈঠকে জানান তিনি।
পরিবেশ দফতরের চিফ টেকনিক্যাল অফিসার নীরজ সিঙ্ঘল বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন, যে কোনও মূল্যেই ওই সব জায়গায় জলাভূমি আবার ফিরিয়ে দিতে হবে। সেই মতো কলকাতা ও দুই ২৪ পরগনার প্রশাসন ও পুলিশকে কঠোর হতে বলা হয়েছে। মামলা চললে তার কী অবস্থা, অবৈধ নির্মাণ ভাঙার আদেশ দেওয়া হয়ে থাকলে তা কেন আটকে রয়েছে, সে সব খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে।’’ কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘‘পরিবেশের সুরক্ষা নিয়ে পুরসভা সজাগ আছে।’’ যদিও ওই সব নির্মাণের সিংহভাগ বাম আমলের বলেই দাবি তাঁর।