দু’জন স্থায়ী কর্মীর বদলি এবং ১,৪০০ অস্থায়ী পদের অবলুপ্তির প্রতিবাদে ধর্না বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন খাদ্য ভবনের কর্মীদের একাংশ। — নিজস্ব চিত্র।
কলকাতায় খাদ্য ভবনের ভিতরে কর্মীদের একাংশের আন্দোলন চলছে। দু’জন স্থায়ী কর্মীর বদলি এবং ১,৪০০ অস্থায়ী পদের অবলুপ্তির প্রতিবাদে ধর্না বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন তাঁরা। সেই বিক্ষোভই ক্রমে বড় আকার ধারণ করছে। আন্দোলনকারীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, মহার্ঘ ভাতা (ডিএ)-র দাবিতে আন্দোলন করায় দুই স্থায়ী কর্মীকে বদলি করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেই সরব সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ।
সংগঠনের তরফে জানানো হয়েছে, দুই কর্মীর বদলি প্রত্যাহার করতে হবে। ১,৪০০ স্থায়ী পদ অবলুপ্তি করা চলবে না। তা না করা পর্যন্ত তাদের প্রতিবাদ চলবে। তাদের তরফে আরও জানানো হয়েছে, ডিএ নিয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে সংঘাত চলছে। কর্মবিরতি চলছে। খাদ্য দফতরে তার প্রভাব পড়েছে। ‘প্রতিহিংসাবশত’ দফতরের কর্মীদের বদলি করা হয়েছে।
সম্প্রতি খাদ্য ও সরবরাহ দফতর নির্দেশিকা জারি করে খাদ্য ভবনের দুই কর্মী সৌমেন্দ্র নারায়ণ বসু এবং দেবু সিংহকে বদলি করার কথা জানিয়েছে। তাঁরা দু’জনেই রয়েছেন ডিএ আন্দোলনের প্রথম সারিতে। রাজ্য প্রশাসনের তরফে সৌমেন্দ্রকে পূর্ব বর্ধমান এবং দেবুকে পশ্চিম বর্ধমানে বদলি করা হয়েছে। খাদ্য ভবনের আন্দোলনকারীদের একটি হোয়াট্সঅ্যাপ গ্রুপে সেই বদলির প্রসঙ্গের উল্লেখ করে আন্দোলনকে জোরদার করার সওয়াল করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছিল। গত সপ্তাহে ওই হোয়াট্সঅ্যাপ গ্রুপের বেশ কিছু মেসেজ কর্মচারীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে আনন্দবাজার অনলাইন ওই হোয়াট্সঅ্যাপ মেসেজগুলির সত্যতা যাচাই করেনি।
মেসেজে গত ‘সোমবারের পরিকল্পনা’ হিসাবে সেখানে লেখা হয়, ‘‘ডিআর এবং ডিপিএস-কে (ডিরেক্টর পর্যায়ের আধিকারিক) তাঁদের চেম্বারে আটকে রেখে খাদ্যশ্রী ভবনের যে ক’টি ঢোকা-বেরোনোর পথ আছে, সেগুলি বন্ধ করে দিতে হবে। মন্ত্রী, সচিব-সহ অন্যান্য আধিকারিকবৃন্দ যাতে ঢুকতে না পারেন সেই ব্যবস্থা করলে প্রচার বেশি হবে।’’
নিরাপত্তা নজরদারি এড়িয়ে কী ভাবে কার্যকর হবে সেই পরিকল্পনা? বলা হয়েছে, ‘‘ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে কাজটা করতে হবে। প্রত্যেক দলে কমপক্ষে ৩০ জন লোক দরকার। বাকি বেশ কিছু লোক সব ক’টি দলের সঙ্গে যোগাযোগ বজায় রাখবে। জল ও খাবার পৌঁছে দেবে এবং সময়ানুযায়ী গৃহীত সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেবে। সব মিলিয়ে ২৫০ জন স্বেচ্ছাসেবী দরকার এটা সফল করার জন্যে।’’ গ্রুপে একটি মেসেজে লেখা হয়েছে, ‘‘এমন শিক্ষা দিতে হবে যাতে ভবিষ্যতে বদলির অর্ডার (নির্দেশিকা) বার করতে ভয় পায়।’’
যদিও আন্দোলনকারীদের তরফে জানানো হয়েছিল, তাদের আন্দোলনকে বদনাম করার কেউ বা কারা চেষ্টা করছে। খাদ্য ভবনে যাঁরা আন্দোলন করছেন, যৌথ সংগ্রামী মঞ্চ তাঁদের পাশে রয়েছে। আন্দোলনকারীদের সেই বিক্ষোভ ক্রমেই বড় আকার ধারণ করল।