—ফাইল চিত্র।
গত লোকসভা ভোটের দিন শহরের কোথায় কী গোলমাল হয়েছিল, পুলিশের কাছে তা জানতে চাইল নির্বাচন কমিশন। সূত্রের খবর, ওই দিন গোলমালের পরে পুলিশ কী ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিল, কোনও মামলা রুজু করেছিল কি না বা সেই মামলার বর্তমান অবস্থা কী— তা-ও লালবাজারের তরফে থানাগুলির কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে কোনও বুথে ভোটের সময়ে কোনও রকম অশান্তি হয়েছিল কি না, তা-ও জানাতে বলা হয়েছে থানাগুলিকে।
পুলিশ সূত্রের খবর, চলতি সপ্তাহেই নির্বাচন কমিশনের তরফে লালবাজারের কাছে এই সংক্রান্ত তথ্য চেয়ে ইমেল পাঠানো হয়েছে। সেই ইমেল থানাগুলিকে পাঠিয়েছে লালবাজার।
ইতিমধ্যে শহরের বেশ কিছু থানা ওই সংক্রান্ত তথ্য লালবাজারের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছে, যা এর পরে পাঠানো হবে নির্বাচন কমিশনের কাছে।
আরও পড়ুন: নেত্রী মমতা বললেন, ‘অনেকে আমার মৃত্যু চায়’, শুনেই বৈঠকে কান্না বক্সির
নির্বাচন কমিশন সূত্রের খবর, ভোটের প্রস্তুতির অন্যতম অঙ্গ হিসেবে আইনশৃঙ্খলার ক্ষেত্রে ‘ভালনারেবল’ বা ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ ভোটকেন্দ্র কোনগুলি, তার ‘ম্যাপিং’-এরে কাজ করা হচ্ছে। ভোটের আগে-পরে কয়েক দিন এবং ভোটগ্রহণের দিন কোথায় কী অশান্তি হয়েছিল এবং কী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছিল— এই সংক্রান্ত তথ্য এবং হিসেব থাকবে ওই ম্যাপিংয়ে। সেই অশান্তির প্রভাব ওই ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে বা ভোটে পড়েছিল কি না, তা-ও ওই ম্যাপিংয়ের মাধ্যমে জানা যাবে। এই ম্যাপিং তৈরি করতে শেষ কয়েকটি নির্বাচনে কোন ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে বেশি বা কম ভোট পড়েছে, নেই হিসেবও পুলিশ ও প্রশাসনের থেকে নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন।
আরও পড়ুন: থাকলে থাকুন, নইলে লুটেরাদের দলে যান, নাম না করে শুভেন্দুকে বার্তা মমতার
পুলিশের একাংশের মতে, ওই তথ্য চাওয়ার মধ্যে দিয়েই আসন্ন বিধানসভা ভোটের প্রস্তুতি শুরু করে দিল নির্বাচন কমিশন। নির্ধারিত সময়ে বিধানসভার ভোট হতে আর বাকি রয়েছে প্রায় চার মাস। তাই এখন থেকেই শান্তিপূর্ণ ভাবে ভোট করার লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশন কাজ শুরু করে দিয়েছে বলে মনে করছেন পুলিশকর্তারা। এক পুলিশ আধিকারিকের মতে, ‘‘নির্বাচন নির্ধারিত সময়ে হলে এখন হাতে আর চার মাস রয়েছে। হাতে সময় থাকলেও বসে থাকতে রাজি নয় কমিশন। তাই এই তথ্য চাওয়ার মধ্যে দিয়ে মনে করা হচ্ছে যে, তারা ভোটের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে।’’ পুলিশ জানিয়েছে, আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে এই প্রথম থানার কাছ থেকে এই সংক্রান্ত নথি চাইল নির্বাচন কমিশন। এক পুলিশকর্তা জানান, সাধারণত ভোটের মাস দুয়েক আগে পুলিশের কাছ থেকে এই সংক্রান্ত তথ্য জানতে চায় কমিশন। তবে এ বার আগেভাগেই সেই তথ্য সংগ্ৰহ করছে তারা।
লালবাজার সূত্রের খবর, নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে ইতিমধ্যেই বেশ কিছু থানার ওসি এবং অতিরিক্ত ওসিদের বদলি করা হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী, কোনও জেলা বা ডিভিশনে তিন বছরের বেশি কাজ করা পুলিশকর্মীদের ভোটের সময়ে সেখানে রাখা যায় না। এ কথা মাথায় রেখেই গত সপ্তাহে ৭৯ জন ইনস্পেক্টরকে বদলি করেছে লালবাজার।
থানায় কর্মরত সাব-ইনস্পেক্টর এবং আসিস্ট্যান্ট কমিশনারদের (এসি) ক্ষেত্রেও এই একই নিয়ম প্রযোজ্য। তাই বর্তমানে এসি বা সাব-ইনস্পেক্টরেরা কোন থানায় কত দিন ধরে রয়েছেন, তার তালিকাও তৈরি করেছে লালবাজার। মনে করা হচ্ছে, খুব শীঘ্রই সেই সংক্রান্ত বদলির নির্দেশিকাও বার করবে তারা।