ইডি ডিরেক্টর রাহুল নবীন (বাঁ দিকে)-এর হাতে নিজের বই তুলে দিচ্ছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।
বিভিন্ন কেন্দ্রীয় বাহিনীর কর্তাদের সঙ্গে মঙ্গলবার বৈঠকে বসলেন এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-র ডিরেক্টর রাহুল নবীন। কলকাতায় ইডির দফতর সিজিও কমপ্লেক্সে হল সেই বৈঠক। বৈঠকে ছিলেন সিআরপিএফ, এনআইএ, এসএসবি, সিআইএসএফ, আইটির কর্তারা। ইডি সূত্রে খবর, সন্দেশখালির ঘটনার পর অফিসারদের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত এই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সে কারণেই এই বৈঠক। এর পরেই বিকেল সাড়ে ৫টা নাগাদ তিনি রাজভবনে যান। আধ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে রাজ্যপালের সঙ্গে বৈঠক করেন নবীন।
সোমবার মধ্যরাতে কলকাতায় পৌঁছন রাহুল। মঙ্গলবারই বৈঠকে বসেন। ইডি সূত্রে খবর, মূলত সন্দেশখালির ঘটনা নিয়েই এই বৈঠক। সন্দেশখালিতে তৃণমূল নেতা শাহজাহান শেখের ‘অনুগামী’ বলে পরিচিত কয়েক জনের হাতে গত শুক্রবার আক্রান্ত হন ইডির তিন আধিকারিক। তার পরেই ইডি অফিসারদের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত রাহুল কলকাতায় এসেছেন বলে খবর। ইডির সঙ্গে অভিযানে সব সময় থাকেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানেরা। সে কারণে, তিনি কথা বলেছেন বিভিন্ন কেন্দ্রীয় বাহিনীর কর্তাদের সঙ্গেও। পাশাপাশি, রেশন এবং নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে তদন্তের অবস্থা এবং অগ্রগতি তিনি খতিয়ে দেখেন বলে খবর।
নবীন যে রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করেছেন, তা নিয়ে রাজভবনের তরফে বিবৃতি প্রকাশ করা হয়নি। তিনিও সাংবাদিকদের কিছু না জানিয়েই বেরিয়ে গিয়েছেন। শুক্রবারের ঘটনা নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিলেন রাজ্যপাল। রাজভবনের শান্তিকক্ষে জমা পড়া অভিযোগের ভিত্তিতে তিনি মুখ খুলেছিলেন। তার পরে ইডি কর্তার আসা তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
গত শুক্রবার সকালে উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালিতে রেশন দুর্নীতির তদন্তে তৃণমূল নেতা শাহজাহানের বাড়িতে হানা দেয় পাঁচ ইডি আধিকারিকের একটি দল। সরবেড়িয়া গ্রামে শাহজাহানের বাড়িতে ইডি আধিকারিকেরা পৌঁছনোর আগেই ঘিরে ফেলেন গ্রামবাসীরা। তার মধ্যে তৃণমূল নেতার বাড়ির সামনে গিয়ে তাঁকে ডাকাডাকি করেন ইডি আধিকারিকেরা। ভিতর থেকে সাড়াশব্দ না মেলায় দরজা ভাঙার চেষ্টা হয়। ঠিক সেই সময়েই তাঁদের ঘিরে ফেলে মারধর শুরু হয় বলে অভিযোগ। সরিয়ে দেওয়া হয় কেন্দ্রীয় বাহিনীকেও। এর পর ইডি আধিকারিকদের ধাওয়া করে এলাকা ছাড়তে বাধ্য করেন শাহজাহানের অনুগামীরা। ভাঙচুর চলে গাড়িতে। সেই সময়েই তিন ইডি আধিকারিক জখম হন। তাঁদের সল্টলেকের বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে চিকিৎসা হয়। একই ভাবে বনগাঁতেও প্রাক্তন পুরপ্রধান শঙ্কর আঢ্যের বাড়িতে তল্লাশি চালাতে গিয়ে ইডি আধিকারিকেরা আক্রান্ত হন বলে অভিযোগ। সন্দেশখালির ঘটনায় এফআইআর করে ইডি। তাদের তরফে জানানো হয়, এফআইআর করা সত্ত্বেও সন্দেশখালির ঘটনায় এফআইআরের কপি দেয়নি পুলিশ। রাজ্য পুলিশের ভারপ্রাপ্ত ডিজি রাজীব কুমার সোমবার বলেছেন, যাঁরা যাঁরা আইন নিজের হাতে তুলে নিয়েছেন, তাঁদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে কঠিনতম পদক্ষেপ করা হবে। যাঁরা আইন ভেঙেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধেও পদক্ষেপ করা হবে।