আরম্ভ: সোমবার ধর্মতলা থেকে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর পূর্বমুখী সুড়ঙ্গ খোঁড়ার কাজ শুরু করল টানেল বোরিং মেশিন। নিজস্ব চিত্র
এসপ্লানেড থেকে শিয়ালদহের দিকে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর পূর্বমুখী সুড়ঙ্গের কাজ শুরু হল। সোমবার সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ একটি সংক্ষিপ্ত অনুষ্ঠানের পরে ওই সুড়ঙ্গ খোঁড়ার কাজ শুরু করে টানেল বোরিং মেশিন (টিবিএম) ‘উর্বী’।
ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর কাজের প্রথম পর্বে হাওড়া ময়দান থেকে এসপ্লানেড পর্যন্ত সুড়ঙ্গ নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে গত বছর মার্চেই। সেই কাজ করেছিল ‘রচনা’ ও ‘প্রেরণা’। দ্বিতীয় পর্বে এসপ্লানেড থেকে শিয়ালদহ পর্যন্ত সুড়ঙ্গ তৈরির কাজ করছে ‘উর্বী’ ও ‘চণ্ডী’ নামে দু’টি টিবিএম। এর আগে গত ২৫ জানুয়ারি ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর পশ্চিমমুখী সুড়ঙ্গ খোঁড়ার কাজ শুরু হয়েছিল। মেট্রো সূত্রের খবর, পশ্চিমমুখী
সুড়ঙ্গ (এই লাইন দিয়ে সল্টলেক থেকে হাওড়া ময়দান অভিমুখে ট্রেন চলবে) কাটার মেশিন ‘চণ্ডী’ এসপ্লানেডের ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো স্টেশন থেকে প্রায় ৬০-৭০ মিটার দূরত্ব ইতিমধ্যে অতিক্রম করেছে। এখন সেটি রয়েছে উত্তর-দক্ষিণ মেট্রো লাইনের নীচে। আজ, মঙ্গলবার সকালের মধ্যে এসপ্লানেড মেট্রো স্টেশন চত্বর অতিক্রম করে এস এন ব্যানার্জি রোডের দিকে এগোবে ‘চণ্ডী’। এর পরে এস এন ব্যানার্জি রোড ধরে কিছুটা এগিয়ে সুবোধ মল্লিক স্কোয়ার থেকে সুড়ঙ্গ বাঁ দিকে বাঁক নিয়ে লেনিন সরণি ছুঁয়ে শিয়ালদহ অভিমুখে যাওয়ার কথা।
ইস্ট-ওয়েস্টের পূর্বমুখী সুড়ঙ্গ (হাওড়া থেকে সল্টলেক অভিমুখে ট্রেন চলবে এই পথে) খননের জন্য ‘উর্বী’ অবশ্য ‘চণ্ডী’র সঙ্গে ৭০-৮০ মিটার দূরত্ব বজায় রেখে এ দিন কাজ শুরু করেছে। দু’টি মেশিনের মধ্যে এই ব্যবধান বজায় রেখে পর্যায়ক্রমে সুড়ঙ্গ কাটার কাজ করা হবে বলে মেট্রো সূত্রে জানানো হয়েছে। সুড়ঙ্গ নির্মাণ সংস্থার প্রজেক্ট ডিরেক্টর রূপক সরকার এ দিন বলেন, ‘‘পূর্বমুখী সুড়ঙ্গ নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। সব রকম সতর্কতা বজায় রেখে সুড়ঙ্গ খোঁড়ার কাজ করা হচ্ছে।’’
মেট্রো সূত্রের খবর, এসপ্লানেড থেকে শিয়ালদহের পথে মাটির নীচে একাধিক ইস্পাতের খুঁটি থাকায় দীর্ঘদিন সুড়ঙ্গ তৈরির কাজ শুরু করা যায়নি। প্রায় ৮-৯ মাস ধরে চেষ্টা চালিয়ে ছোট পাইলট সুড়ঙ্গ তৈরি করে প্রথমে একাধিক ইস্পাতের খুঁটি কেটে পরিষ্কার করা হয়। এর পরেই শুরু হয়েছে ইস্ট-ওয়েস্টের সুড়ঙ্গ খননের কাজ। আগামী ১৪ মাসের মধ্যে ২.৪৯ কিলোমিটার দীর্ঘ ওই সুড়ঙ্গ নির্মাণের কাজ শেষ করার কথা রয়েছে ‘উর্বী’ ও ‘চণ্ডী’র। তবে তার আগেই অবশ্য সেক্টর ফাইভ থেকে সল্টলেক স্টেডিয়ামের মধ্যে মাটির উপরে তৈরি লাইন দিয়ে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো চলাচল শুরু হওয়ার কথা।
মেট্রো কর্তাদের দাবি, দু’টি সুড়ঙ্গই যাতে বর্তমান মেট্রোপথের নীচের অংশ অতিক্রম করে যায়, সে দিকে নজর রেখেই বিভিন্ন সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছেন তাঁরা। এ জন্য এসপ্লানেডে মেট্রোর গতি কমিয়ে ঘণ্টায় ১০ কিলোমিটার করা হয়েছে। রোবটচালিত বিশেষ নজরদারির ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে, যাতে সুড়ঙ্গ খননের ফলে ধসের সম্ভাবনা দেখা দিলে তা আঁচ করা যায়।