এসপ্ল্যানেডের নীচ দিয়ে এগোচ্ছে মেট্রোর সুড়ঙ্গ

মেট্রো সূত্রের খবর, এই প্রথম কোনও সুড়ঙ্গপথ এখনকার মেট্রোপথের নীচ দিয়ে তৈরি হচ্ছে।

Advertisement

ফিরোজ ইসলাম

শেষ আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০১৮ ০২:০৫
Share:

মেট্রো চলাচল চালু রেখেই চলছে কাজ।

এসপ্ল্যানেডে মাটির প্রায় ৩০ মিটার নীচে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর সুড়ঙ্গপথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল ইস্পাতের পাঁচটি স্তম্ভ (এইচ পাইল)। ওই বাধা সরিয়ে ফেলতে ছোট আকারের ‘পাইলট’ সুড়ঙ্গ কাটার কাজ মাস দু’য়েক আগেই শুরু হয়। শুক্রবার রাতে সেই সুড়ঙ্গ এসপ্ল্যানেড মেট্রো স্টেশনের পরিসরের মধ্যে ঢুকে পড়েছে।

Advertisement

মেট্রো সূত্রের খবর, এই প্রথম কোনও সুড়ঙ্গপথ এখনকার মেট্রোপথের নীচ দিয়ে তৈরি হচ্ছে। মেট্রো চলাচল চালু রেখেই ওই কাজ করতে হচ্ছে। যদিও বেশির ভাগ কাজই করা হচ্ছে গভীর রাতে, তবু বর্তমান মেট্রোপথের তলা দিয়ে সুড়ঙ্গ খোঁড়ার কাজকে চ্যালেঞ্জ বলেই মনে করছেন মেট্রোর কর্তারা।

সব কিছু নিরাপদ এবং নির্ঝঞ্ঝাট রাখতে এসপ্ল্যানেড মেট্রো স্টেশনকে রাখা হয়েছে কড়া নজরদারির মধ্যে। ক্র্যাক মিটার, টিল্ট মিটার-সহ বসানো হয়েছে একাধিক যন্ত্রপাতি। এসপ্ল্যানেড থেকে চাঁদনি চক পর্যন্ত অংশে দমদমমুখী মেট্রোর গতিও বেঁধে দেওয়া হয়েছে সর্বোচ্চ ২০ কিলোমিটারে। উল্টো দিকের মেট্রো যে হেতু এসপ্ল্যানেডে গতি কমিয়ে স্টেশনে ঢোকে, তাই ওই পথে এখনও কোনও বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়নি।

Advertisement

গ্রাফিক: প্রবাল ধর

এই সুড়ঙ্গ তৈরির কাজ মেট্রোর কাছে চ্যালেঞ্জ কেন?

কারণ, সামনে ইস্পাতের স্তম্ভ থাকায় ‘টানেল বোরিং মেশিন’ (টিবিএম) ব্যবহারের সুযোগ নেই। তার বদলে ছোট আকারের ‘এক্সক্যাভেটর’ ব্যবহার করে খুব সন্তর্পণে ওই কাজ করতে হচ্ছে। ‘আর্চ’ আকৃতির ওই সুড়ঙ্গ কিছুটা এগোলেই সঙ্গে সঙ্গে ধস ঠেকানোর ব্যবস্থা করতে হচ্ছে। প্রযুক্তিগত ভাবে সুড়ঙ্গ খোঁড়ার এই পদ্ধতিকে ‘নিউ অস্ট্রিয়ান টানেলিং মেথ়ড’ (এনএটিএম) বলে।

মাস দু’য়েক আগে ওই সুড়ঙ্গ খোঁড়ার কাজ শুরু হলেও এসপ্ল্যানেড স্টেশনের নীচের মাটি খুব নরম হওয়ায় সমস্যায় পড়তে হয় সুড়ঙ্গ নির্মাণ সংস্থাকে। তার পরে ওই সমস্যা সামলে সুড়ঙ্গ বর্তমান মেট্রোপথের নীচে এসে পৌঁছয়।

মেট্রো সূত্রের খবর, প্রায় চার দশক আগে মাটির নীচে এসপ্ল্যানেড স্টেশন তৈরির সময়ে এস এন ব্যানার্জি রোড এবং রানি রাসমণি রোডের মধ্যে সংযোগ তৈরির জন্য ইস্পাতের পাত ব্যবহার করা হয়েছিল। ওই সময়ে ইস্পাতের পাতের ভার রাখার জন্যই ওই স্তম্ভগুলি তৈরি করা হয়। কিন্তু মেট্রো স্টেশন তৈরি হয়ে যাওয়ার পরে মাটির গভীরে থাকা স্তম্ভগুলিকে আর কেটে পরিষ্কার করা হয়নি। আর তাতেই বিপত্তি দেখা দেয় ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর সুড়ঙ্গ নির্মাণের কাজে।

ওই স্তম্ভগুলি কেটে পরিষ্কার করতেই প্রায় ৮০ মিটার লম্বা এবং সাড়ে তিন মিটার ব্যাসের ছোট আকারের একটি সুড়ঙ্গ তৈরি করতে হচ্ছে। মূল সুড়ঙ্গ মেট্রোপথের নীচের অংশ পেরিয়ে যাওয়ার পরে আরও তিনটি শাখা সুড়ঙ্গ তৈরি করতে হবে।

মেট্রো আধিকারিকদের মতে, এই সুড়ঙ্গ কেটে স্তম্ভ পরিষ্কারের কাজ শেষ করতে ডিসেম্বর মাস পেরিয়ে যাবে। তার পরেই এসপ্ল্যানেড থেকে শিয়ালদহ পর্যন্ত সুড়ঙ্গ নির্মাণের কাজ শুরু করতে পারবে টিবিএম।

কিন্তু পাইলট সুড়ঙ্গের কী হবে? এক মেট্রোকর্তা বলেন, “সব রকম বাধা দূর হলে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি বার করে এনে ওই সুড়ঙ্গ ধীরে ধীরে নরম কংক্রিট দিয়ে বুজিয়ে ফেলা হবে। যাতে ওই পথ দিয়ে টিবিএম সহজেই এগিয়ে যেতে পারে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement