ছবি: সংগৃহীত
মহানগরে মেট্রো চালু হয়েছে প্রায় তিন দশক আগে। কিন্তু হুইলচেয়ারে চেপে মেট্রোয় উঠবেন, এমন কথা স্বপ্নেও ভাবেন না বহু প্রতিবন্ধী নাগরিক। কলকাতা মেট্রো রেল নিগমের কর্তারা এ বার বলছেন, ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর পরিষেবা থেকে সরিয়ে রাখা হবে না এই মানুষগুলিকেও। রাস্তা থেকে সটান হুইলচেয়ারে চেপে যাতে ট্রেনের কামরায় পৌঁছে যেতে পারেন, সে ব্যবস্থা করছেন তাঁরা। প্রতি কামরায় দু’টি করে হুইলচেয়ারের জন্য বিশেষ জায়গাও রাখা হচ্ছে।
ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্পের চিফ ইঞ্জিনিয়ার বিশ্বনাথ দেওয়ানজি জানান, গোটা দুনিয়াতেই লন্ডন মেট্রোর খুব নাম। কিন্তু সেখানেও সব স্টেশনে রাস্তা থেকে প্ল্যাটফর্ম পর্যন্ত হুইলচেয়ার নিয়ে পৌঁছনোর ব্যবস্থা নেই। আসলে পুরনো মেট্রোগুলিতে এই ব্যবস্থা করা হয়নি। কিন্তু সিঙ্গাপুর-সহ যে সব শহরে নতুন ভাবে মেট্রো তৈরি হচ্ছে, সেখানে হুইলচেয়ারে চেপে যাতে বিনা বাধায় ট্রেনে ওঠা-নামা করতে পারেন, তার ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে।
শনিবার ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্পের কাজের অগ্রগতির কথা জানাতে সাংবাদিক বৈঠক ডেকেছিল নিগম। সেখানে সংস্থার এমডি সতীশ কুমার জানান, ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর প্রতি স্টেশনে সিঁড়ি, লিফট ও চলমান সিঁড়ি, তিনটিরই ব্যবস্থা থাকবে। বর্তমানে মেট্রো স্টেশনে কোনও শৌচাগার নেই। ফলে বৃদ্ধ, মহিলা ও অসুস্থরা অনেক সময়েই সমস্যায় পড়েন। ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর স্টেশনে শৌচাগার থাকবে বলেও জানান তিনি।
নিগমকর্তাদের মতে, শুধু লিফট দিয়েই প্রতিবন্ধীদের ট্রেন পর্যন্ত পৌঁছনো সম্ভব নয়। এর জন্য স্টেশন চত্বর এমনকী, সামনের ফুটপাথকেও পরিকল্পিত ভাবে তৈরি করতে হবে। দিল্লি মেট্রোয় লিফট রয়েছে।
কিন্তু সেখানে সব স্টেশনে প্রতিবন্ধীরা পৌঁছতে পারেন না। কারণ, বহু ক্ষেত্রেই রাস্তা থেকে ফুটপাথে ওঠার জন্য কোনও ঢাল বা র্যাম্প নেই। তেমনই স্টেশনে ঢোকার মুখেও সিঁড়ি ভাঙতে হয়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে সেই সব বাধাও রাখা হবে না বলে নিগমের দাবি।
অনেকে অবশ্য বলছেন, প্রতি কামরায় মাত্র দু’টি হুইলচেয়ার রাখার জায়গা কি যথেষ্ট? সকাল-সন্ধ্যার ব্যস্ত সময়ের ভি়ড়ে কি প্রতিবন্ধীরা ঠিক মতো যেতে পারবেন?
নিগম সূত্রের ব্যাখ্যা, সমীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, প্রতি কামরায় দু’জনের বেশি হুইলচেয়ারে বসা প্রতিবন্ধী যাত্রী উঠবেন না। তবে কোনও কোনও দিন তার ব্যতিক্রমও হতে পারে। ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর কামরাগুলিতে জায়গাও তুলনামূলক ভাবে বেশি থাকবে। ভিড় হলেও প্রতিবন্ধীরা উঠতে পারবেন। সহযাত্রীরা যথেষ্ট মানবিক হবেন বলেই আশা করছেন নিগমকর্তারা।