ফাইল চিত্র।
ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর পরিষেবা শিয়ালদহ স্টেশন পর্যন্ত সম্প্রসারণের জন্য কমিশনার অব রেলওয়ে সেফটির দেওয়া ছাড়পত্রের মেয়াদ আগামী ২৩ জুন ফুরিয়ে যাচ্ছে। ফলে, চলতি সপ্তাহেই ছাড়পত্রের মেয়াদ বৃদ্ধির আর্জি জানিয়ে কমিশনার অব রেলওয়ে সেফটিকে চিঠি দিতে চলেছেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ। কিন্তু কবে ওই পরিষেবা চালু করা যাবে, তা নিয়ে তাঁরা সম্পূর্ণ অন্ধকারে।
গত ফেব্রুয়ারি মাসে ফুলবাগান থেকে শিয়ালদহ পর্যন্ত ২.৩ কিলোমিটার অংশে পরিষেবা সম্প্রসারণের বিষয়ে অনুমতি চেয়ে রেলওয়ে সেফটি কমিশনারের কাছে পরিদর্শনের আর্জি জানান মেট্রো কর্তৃপক্ষ। মার্চ মাসের ১৬ এবং ১৭ তারিখে প্রস্তুতি খতিয়ে দেখেন রেলওয়ে সেফটি কমিশনার। সপ্তাহখানেকের মধ্যেই কিছু শর্ত সাপেক্ষে পরিষেবা শুরু করার অনুমতিও দিয়ে দেন তিনি। সেই সময়ে মেট্রো কর্তৃপক্ষ বাংলা নববর্ষে পরিষেবা শুরুর বিষয়ে নিজেদের আগ্রহের কথা রেল বোর্ডকে জানিয়ে চিঠি দেন বলে খবর। তার পর থেকে বেশ কয়েক বার এ নিয়ে জল্পনা ছড়ালেও পরিষেবা শুরু করা যায়নি। শেষ বার গত ৩০ মে রেলমন্ত্রীর কলকাতা সফরের আগে এ নিয়ে তৎপরতা শুরু হয়। কিন্তু পরে মোদী সরকারের আট বছর পূর্তি ঘিরে দেশব্যাপী অনুষ্ঠানের তোড়জোড়ে বিষয়টি ঢাকা পড়ে যায়। ওই ঘটনার পরে তিন সপ্তাহ কেটে গেলেও ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর শিয়ালদহ স্টেশনের উদ্বোধন নিয়ে রেল বোর্ডের কাছ থেকে নতুন বার্তা পায়নি মেট্রো।
মেট্রো সূত্রের খবর, কমিশনার অব রেলওয়ে সেফটির দেওয়া ছাড়পত্রের মেয়াদ বৃদ্ধির আর্জি জানিয়ে এর আগেও চিঠি দিতে হয়েছে তাঁদের। কিন্তু, এ বারের মতো পরিস্থিতিতে পড়তে হয়নি। এর আগে সল্টলেক স্টেডিয়াম থেকে সেক্টর ফাইভ পর্যন্ত প্রথম বার পরিষেবা চালুর সময়েও ছাড়পত্রের মেয়াদ বাড়াতে হয়েছিল। কিন্তু তখন মেট্রোর নিজস্ব প্রস্তুতিতে কিছু ঘাটতি ছিল। চালকদের প্রস্তুতির সমস্যাও ছিল। কিন্তু এখন চালকেরা আগের চেয়ে অনেক বেশি তৈরি। শিয়ালদহ স্টেশনে পরিষেবা দেওয়ার জন্য কর্মীদের বদলি করে আনার কাজও সম্পূর্ণ হয়েছে। এই অবস্থায় স্টেশনের উদ্বোধন না হওয়ায় যাত্রীরা যেমন পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন, তেমনি মেট্রোর আয়ের সুযোগও মার খাচ্ছে। মেট্রোর নিজস্ব হিসেব অনুযায়ী শিয়ালদহ পর্যন্ত পরিষেবা চালু হলে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোয় যাত্রী সংখ্যা আগের তুলনায় কয়েক গুণ বাড়বে। সেই সম্ভাবনার কথা মাথায় রেখে স্টেশনের নাম ভাড়া দেওয়ার
কাজও সারা।
রেল এবং মেট্রোর আধিকারিকদের একাংশের মতে, সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহের আবর্তেই থমকে রয়েছে উদ্বোধনের বিষয়টি। রাজ্যে এখন বড় নির্বাচনের মতো উপলক্ষ না থাকাই হয়তো রেল বোর্ডকে প্রকল্পটি নিয়ে কিছুটা উদাসীন করে তুলেছে বলে আশঙ্কা করছেন আধিকারিকদের একাংশ।