এই গরমে কলকাতা পুলিশের ট্র্যাফিক বিভাগের কর্মীরা যাতে অসুস্থ হয়ে না পড়েন, তার জন্য একাধিক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে লালবাজার। ফাইল ছবি।
তীব্র গরমে নাজেহাল অবস্থা কলকাতা থেকে গোটা দক্ষিণবঙ্গের। বেলা বাড়তেই চড়চড়িয়ে বাড়ছে রোদের তাপ। যার ফলে দুপুরের দিকে রাস্তায় বেরোনোই দুষ্কর হয়ে উঠেছে। তবে, এই আবহাওয়াতেও শহরের যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে রাস্তায় দাঁড়িয়ে কাজ করেন কলকাতা পুলিশের ট্র্যাফিক বিভাগের কর্মীরা। তাই তাঁরা যাতে অসুস্থ হয়ে না পড়েন, তার জন্য একাধিক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে লালবাজার। এ বার ট্র্যাফিক পুলিশকর্মীদের চাহিদার কথা মাথায় রেখে প্রতিটি ট্র্যাফিক সিগন্যাল কিয়স্কে দেওয়া হচ্ছে মাটির কলসি। যাতে প্রবল গরমেও ঠান্ডা জল খেতে পারেন কর্মরত পুলিশকর্মীরা।
লালবাজার জানিয়েছে, শহরের বুকে ২৫টি ট্র্যাফিক গার্ডের চারশোরও বেশি ট্র্যাফিক সিগন্যাল কনসোল বক্স বা কিয়স্ক রয়েছে। যেখান থেকে শহরের রাস্তায় যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হয়। সব ক’টি সিগন্যাল কনসোল বক্স বা কিয়স্কেই একটি করে ১৫ লিটারের মাটির কলসি দেওয়া হবে। সোমবার থেকে বিভিন্ন গার্ডে ওই কলসি পৌঁছে দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে সেই কাজ শেষ হয়ে যাবে।
এক সময়ে শহর হোক বা গ্রাম, জল ঠান্ডা রাখতে প্রায় সর্বত্রই চাহিদা ছিল মাটির কলসির। গরমকালে জল ঠান্ডা রাখতে সেটাই ছিল প্রধান উপায়। বর্তমানে ঘরে ঘরে ফ্রিজ চলে আসায় মাটির কলসির চাহিদা ততটা আর নেই। পুলিশ জানিয়েছে, ফ্রিজে জল রাখলে তা যে হেতু খুব বেশি ঠান্ডা হয়ে যায়, তাই সেই জল খাওয়াটা রাস্তায় কর্তব্যরত পুলিশকর্মীদের স্বাস্থ্যের পক্ষে ভাল নয়। আবার মাটির কলসির জল ঠান্ডা হলেও তা ফ্রিজের মতো তীব্র ঠান্ডা হয় না। মাটির পাত্রে জল রাখলে সেই জলের গুণমান বজায় থাকে। আবার মাটির কলসি তৈরি করতে প্লাস্টিকের বোতলের মতো রাসায়নিক ব্যবহার করা হয় না। তা ছাড়া, কিয়স্ক বা কনসোল বক্সে ফ্রিজ রাখা সম্ভবও নয়। তাই সব দিক ভেবেচিন্তে গরমে পুলিশকর্মীদের তৃষ্ণা মেটাতে ওই কলসি ব্যবহারেরই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে লালবাজার জানিয়েছে।
শহর জুড়ে রাস্তার মোড়ে মোড়ে তাপপ্রবাহের মধ্যে কর্তব্যরত পুলিশকর্মীদের স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখে গত সপ্তাহেই কলকাতার নগরপাল বিনীত গোয়েল তাঁদের হাতে ওআরএস, রোদচশমা, ছাতা তুলে দিয়েছিলেন। এক পুলিশকর্তা জানান, শুধু ট্র্যাফিক পুলিশ নয়, সিভিক ভলান্টিয়ার থেকে শুরু করে গ্রিন পুলিশকর্মী, যাঁরাই রাস্তায় নেমে ট্র্যাফিক সামলানোর গুরুদায়িত্ব পালন করেন, তাঁদের সকলেরই ডিউটি ছ’ঘণ্টা করা হয়েছে। যাতে তাঁরা গরমে কিছুটা বিশ্রাম পান।