টেলিমেডিসিন ব্যবস্থা তো এ রাজ্যে চালু ছিলই। এ বার তারই পথ ধরে আসছে ই-আইসিইউ। এই ব্যবস্থার সুবিধে এই যে, ডাক্তার দূরে থাকলেও মুমূর্ষু রোগীর চিকিৎসা থাকবে হাতের নাগালেই। দেশের যে-কোনও প্রান্তে বসে প্রত্যন্ত জেলার আইসিইউ-এ ভর্তি রোগীর উপরেও নজর রাখতে পারবেন চিকিৎসকেরা। কলকাতায় এমনই ই-আইসিইউ পরিষেবা চালু করছে একটি বেসরকারি হাসপাতাল।
এখনও পর্যন্ত এ দেশে বেসরকারি ক্ষেত্রে ই-আইসিইউ রয়েছে মাত্র দু’টি। চেন্নাই ও দিল্লির দু’টি বেসরকারি হাসপাতাল এই ব্যবস্থা আগেই চালু করেছে। এ বার কলকাতা তৃতীয় মহানগর, যেখানে অচিরেই সেই পরিষেবা পৌঁছে যাচ্ছে। ওই হাসপাতালে কাল, বুধবার এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন।
কী সুবিধে হবে এতে?
উদ্যোক্তাদের বক্তব্য, বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দূরে রয়েছেন, অথচ রোগীর এখন-তখন অবস্থা— প্রায়ই এমন পরিস্থিতি দেখা দেয়। এবং এ-সব ক্ষেত্রে অনেক সময়েই নানা বিপর্যয়ের আশঙ্কা থাকে। ই-আইসিইউ চালু থাকলে সেই আশঙ্কা অনেকটাই কমবে। হাসপাতালে হাজির যে-কোনও ডাক্তার এই সাইবার ব্যবস্থার সাহায্যে দূরে থাকা বিশেষজ্ঞদের সহায়তা নিতে পারবেন।
মেডিকা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটের অধিকর্তা অরিন্দম কর জানান, প্রাথমিক ভাবে তাঁদের হাসপাতালে এই পরিষেবা শুরু হচ্ছে। তাঁরা রাজ্য জুড়ে দ্রুত এটি ছড়িয়ে দেওয়ার কথাও ভাবছেন। রাজ্য সরকার জেলায় জেলায় আইটিইউ খোলার কথা বলছে। অথচ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের বড়ই অভাব। ‘‘এই পরিস্থিতিতে ই-আইসিইউয়ের সাহায্যে প্রত্যন্ত এলাকাতেও বিশেষজ্ঞের পরামর্শ ও প্রয়োজনীয় পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার সুযোগ থাকবে। আমরা শীঘ্রই এ ব্যাপারে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের কাছে আবেদন করব,’’ বললেন অরিন্দমবাবু।
ওই মেডিকা-কর্তা জানান, এখন থেকে তাঁদের হাসপাতালের আইসিইউ, আইটিইউ-এ কাগজপত্রে কোনও তথ্য থাকবে না। রোগের লক্ষণ থেকে শুরু করে এক্স-রে, ইসিজি, সিটি স্ক্যান ইত্যাদি রিপোর্ট, চিকিৎসা প্রক্রিয়া— সবটাই কম্পিউটারে তোলা থাকবে। বিশেষজ্ঞেরা তো রোগীকে পরীক্ষা করবেনই। কিন্তু কোনও সময়ে তাঁরা যদি হাসপাতালে হাজির না-থাকেন, সেই সব ক্ষেত্রেও রোগীদের চিকিৎসায় যাতে কোনও রকম ত্রুটি বা গাফিলতি না-ঘটে, সেই কারণেই এই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। সেই সঙ্গে থাকছে অ্যালার্মের ব্যবস্থাও। রক্তচাপ, অক্সিজেনের মাত্রা বা অন্য কোনও মাপকাঠি বিপদসীমার কাছাকাছি পৌঁছলে অ্যালার্ম বেজে উঠবে।