বাম যুবনেত্রী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
আরজি করে হামলা এবং ভাঙচুরের ঘটনার সময় বাম যুব সংগঠন ডিওয়াইএফআইয়ের পতাকা দেখা গিয়েছে বলে জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই দাবি উড়িয়ে দিলেন বাম যুবনেত্রী তথা ডিওয়াইএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক মিনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। তাঁর স্পষ্ট জবাব, তাঁদের পতাকা শুধু ডিওয়াইএফআইয়ের দফতরের পাওয়া যায় না। কিনতেও পাওয়া যায়।
আরজি করের মহিলা চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনার প্রতিবাদে বুধবার রাতে পথে নেমেছিলেন অনেকেই। কলকাতার বিভিন্ন প্রান্তে ছিল জমায়েত। সে সময়েই একদল ব্যক্তি আরজি করের ভিতরে ঢুকে পড়েন। ভাঙচুর করা হয় হাসপাতালের কয়েকটি জায়গায়। ভেঙে দেওয়া হয় আন্দোলকারীদের মঞ্চ। বাদ যায়নি পুলিশের কিয়স্ক এবং ফাঁড়ি। ভাঙা হয় পুলিশের গাড়িও। সেই তাণ্ডবের একাধিক ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এসেছে। কে বা কারা হামলা চালিয়েছেন, কেন হামলা চালিয়েছেন, তা তদন্ত করে দেখছে কলকাতা পুলিশ।
তার মধ্যেই একাংশ দাবি করতে শুরু করে, হামলাকারীদের দলে ছিলেন ডিওয়াইএফআইয়ের কর্মী-সমর্থকেরা। ভিডিয়োতে নাকি সংগঠনের পতাকা হাতে দেখা গিয়েছে কয়েক জনকে (যদিও সেই সব ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন)। শুক্রবার ডোরিনা ক্রসিংয়ে তৃণমূলের প্রতিবাদ মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী একই কথা বলেন। পুলিশ সূত্রে খবর, ঘটনার সময়ে হাসপাতালের বাইরে ওই ধরনের কিছু পতাকা দেখা যায়। কিন্তু ভিতরে বাম পতাকা থাকার প্রমাণ মেলেনি।
শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর কথা তুলে মিনাক্ষীকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘আমাদের পতাকা শুধু আমাদের অফিসে পাওয়া যায় না। বড়বাজারেও কিনতে পাওয়া যায়। যখন আমরা সংগঠনের পতাকা কাঁধে তুলে নিই, তখন তা নিয়ে দায়বদ্ধ থাকি।’’ তাঁর কথার প্রসঙ্গ টেনেই মিনাক্ষীকে প্রশ্ন করা হয়, তা হলে কি অন্য কেউ ডিওয়াইএফআইয়ের পতাকা নিয়ে হামলা চালিয়েছিলেন? তার উত্তরে মিনাক্ষী বলেন, ‘‘আমি জানি না। পুলিশ তা তদন্ত করে দেখুক। আমাদের ট্রেনিং আছে আন্দোলন করার। উন্মত্ত জনতাকে নিয়ন্ত্রণ করার ট্রেনিং যাদের আছে তারা ব্যর্থ হল কেন?’’
শুক্রবারের সাংবাদিক বৈঠকে মিনাক্ষী-সহ বাম যুব-মহিলা সংগঠন বেশ কিছু প্রশ্ন তুলেছে। কে প্রথমে পরিবারকে আত্মহত্যার তত্ত্ব বলে ফোন করেছিল? কার অনুমতিতে ফোন করা হয়েছিল? কেন মৃতার দেহ দেখার জন্য তাঁর পরিবারকে তিন ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়েছিল? সিভিক ভলান্টিয়ারকে কারা আরজি করে জমিদারি করার ব্যবস্থা করে দিয়েছিল? মিনাক্ষী বলেন, ‘‘দোষীকে শিখণ্ডী করে দোষীদের আড়াল করার চেষ্টা হচ্ছে।’’
আরজি করের চিকিৎসক খুনের ঘটনার তদন্তভার সিবিআইকে দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট। পুলিশ তদন্ত সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য সিবিআইয়ের হাতে তুলে দিয়েছে। ইতিমধ্যেই বেশ কয়েক জনকে ডেকে জেরাও করেছে তারা। সেই সিবিআই তদন্ত নিয়ে মিনাক্ষী বলেন, ‘‘সিবিআইয়ের ট্র্যাক রেকর্ড ভাল নয়। নজর থাকবে সিবিআইয়ের উপরও।’’ তাঁর দাবি, ‘‘তদন্ত করে দোষীদের শাস্তি দেওয়া হোক।’’