সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের পুজো নামেই পরিচিত একডালিয়া এভারগ্রিন। ফাইল চিত্র।
পুজোর প্রাণপুরুষ যিনি, তিনি আর নেই। সে কারণেই এ বার রেড রোডে দুর্গাপুজোর কার্নিভালে অংশ নিচ্ছে না দক্ষিণ কলকাতার অন্যতম নামী পুজো ‘একডালিয়া এভারগ্রিন’, যা ‘সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের পুজো’ নামেই বেশি পরিচিত।
গত বছর ৪ নভেম্বর প্রয়াত হন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। তাঁর বাৎসরিক অনুষ্ঠান এখনও হয়নি। সে কারণেই কোনও আড়ম্বর চাইছেন না পুজো কমিটির উদ্যোক্তারা। সুব্রতের প্রয়াণের কারণেই এ বার কার্নিভালে তাঁরা অংশ নিচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন একডালিয়া কর্তৃপক্ষ।
ক্লাবের অন্যতম কর্মকর্তা স্বপন মহাপাত্র বলেছেন, ‘‘সুব্রতদা ছিলেন একডালিয়ার প্রাণপুরুষ। তাঁর উদ্যোগেই পুজো হত। তাঁর প্রয়াণের পর শারদোৎসবের আয়োজন করা আমাদের জন্য কষ্টকর ছিল। কিন্তু রীতি মেনে পুজো বন্ধ করা যায় না। তাই করতে হয়েছে।’’ যতটা না করলে নয়, তেমন ভাবেই এ বার পুজো সেরেছে একডালিয়া। পুজো বাদে দুর্গোৎসবে অন্য যে সব কর্মসূচি থাকে, সেগুলি এ বার করা হয়নি। সুব্রতর বাৎসরিক কাজ না হলে, এই আয়োজন না করার সিদ্ধান্ত সর্বসম্মতিক্রমে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ওই ক্লাব কর্তা। তবে আগামী বছর কার্নিভাল হলে, তাতে অংশ নেওয়ার ব্যাপারে নতুন করে ভাবনা-চিন্তা করা হবে বলে ক্লাব সূত্রে খবর।
কলকাতার পুজোয় ভিড়ের টক্কর দেওয়ার নিরিখে বরাবরই শীর্ষে থাকে একডালিয়ার পুজো। এ বারও জনজোয়ার দেখা গিয়েছে একডালিয়ায়। সাবেক প্রতিমা আর এক মন্দিরের আদলে মণ্ডপসজ্জা, ঝাড়বাতি— এ বারও মন টেনেছে দর্শনার্থীদের। কিন্তু সুব্রত না থাকায় ফাঁকা ফাঁকা লেগেছে একডালিয়ার পুজো উদ্যোক্তাদের। একাদশীর রাতে বিসর্জন হয়েছে দুর্গাপ্রতিমার।
এ বারও একডালিয়ার পুজো উদ্বোধন করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীও বলেছিলেন, ‘‘সুব্রতদা নেই, এটা ভাবতেই পারি না।’’ পুজো উদ্বোধনের দিনই সেখানে সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের আবক্ষ মূর্তির উন্মোচন করেন মমতা। তবে মূর্তিটি পছন্দ হয়নি মুখ্যমন্ত্রীর। ওই মূর্তি বদলানোর কথা বলেছেন বলে জানান ক্লাব কর্তা স্বপন মহাপাত্র।
বস্তুত, প্রায় দু’বছর পর আবার রেড রোডে পুজো কার্নিভাল হচ্ছে। ইউনেসকো-র বিশেষ স্বীকৃতি মেলার পর এই আয়োজন আরও বড় মাপের করা হচ্ছে। সেখানে একডালিয়ার পাশাপাশি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রায় থাকছে না সেলিমপুর পল্লির প্রতিমাও।