আহা কী আনন্দ..: নির্মীয়মাণ মণ্ডপ ঘিরে খেলায় মেতেছে খুদেরা। বুধবার, মল্লিকবাজারে। ছবি: দেশকল্যাণ চৌধুরী
কোথাও ত্রিপল টাঙিয়ে কোনও মতে বৃষ্টি আটকে চলছে মণ্ডপের কাজ। কোথাও আবার মণ্ডপসজ্জা চলছে স্থানীয় ক্লাবঘরে বা নির্মীয়মাণ মণ্ডপের ভিতরে। চলতি মাসে লাগাতার বৃষ্টির ফলে পুজোর আগে সময়ের মধ্যে আদৌ কাজ শেষ করা যাবে কি না, তা নিয়ে চিন্তা বাড়ছে উদ্যোক্তাদের। সেই সঙ্গেই রয়েছে বর্ষার শেষ প্রহরে ঘাটতি মেটানো নিয়ে আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস। ফলে দুর্গাপুজোর বাজেট বৃদ্ধির আশঙ্কায় রয়েছেন উদ্যোক্তাদের অনেকেই।
পুজোর আর ৪০ দিনও বাকি নেই। তবে এ বছর দুর্গাপুজো ইউনেস্কোর স্বীকৃতি পাওয়ায় দিনকয়েক আগেই পুজোর বাদ্যি বাজানোর পরিকল্পনা করেছেন অধিকাংশ উদ্যোক্তা। সেই মতো চলছে প্রস্তুতিও। কিন্তু বাদ সেধেছে লাগাতার বৃষ্টি। জুলাইয়ে নির্ঝঞ্ঝাটে কাজ এগোনো গেলেও চলতি মাসের টানা বৃষ্টিতে সব কাজই মোটামুটি থমকে। চিন্তা বাড়িয়েছে আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস। ফলে পুজোর আগেকাজ শেষ করতে গিয়ে খরচ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কাও ক্রমশ বাড়ছে। উদ্যোক্তাদের একাংশ জানাচ্ছেন, বৃষ্টিতে যেমন সময় নষ্ট হচ্ছে, তেমনই কাজ শেষ করতে আরও বেশি কারিগরের কথা ভাবতে হচ্ছে। ফলে বৃষ্টির ধাক্কায় পুজোর বাজেট যে বাড়বে, সে ব্যাপারে প্রায় নিশ্চিত তাঁরা।
আপাতত মণ্ডপে ত্রিপল টাঙিয়ে কাজ এগোনোর চেষ্টা চালাচ্ছেন উত্তর কলকাতার গৌরীবেড়িয়া সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটির পুজো উদ্যোক্তারা। কমিটির যুগ্ম সম্পাদক মান্টা মিশ্র বলেন, ‘‘বৃষ্টিতে শিল্পী ও কারিগরদের পক্ষেও কাজ করা সমস্যার। আপাতত তাই অন্দরসজ্জার কাজ শেষ করানোয় জোর দিচ্ছি। বৃষ্টি কমলে লোক বাড়িয়ে মণ্ডপের বাইরের কাজ শেষ করা হবে। এখন আর বাজেটের কথা ভাবলে হবে না।’’
বৃষ্টিই যে এ বার আসল ‘শত্রু’, তা মেনে নিয়ে দক্ষিণ কলকাতার চেতলা অগ্রণীর আহ্বায়ক সমীর ঘোষ বলছেন, ‘‘ভরা বৃষ্টিতে কোনও মতে তাঁবু খাটিয়ে কাজ এগোনো হচ্ছে। বাধ্য হয়ে কিছু কাজ শিল্পীর কারখানা থেকেও করাতে হচ্ছে।’’ দেশপ্রিয় পার্ক পুজো কমিটির সম্পাদক সুদীপ্ত কুমারের কথায়, ‘‘আমাদের পুজো মাঠে হয়, তাই সমস্যাও আমাদের সব চেয়ে বেশি। কয়েক দিন ধরে বাইরের কাজ করাতেই পারছি না। কাজ শেষ করতে বাজেট যে বাড়বে, তা ধরেই নিয়েছি।’’
তবে বৃষ্টির মোকাবিলায় এ বার আগেভাগেই প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিলেন লেক টাউনের শ্রীভূমির উদ্যোক্তারা। পুজোর মুখ্য কোঅর্ডিনেটর দিব্যেন্দু গোস্বামী বলেন, ‘‘প্রতি বছরই বৃষ্টি কমবেশি সমস্যায় ফেলে। এ বার তাই ক্লাবের দোতলায় মণ্ডপের যাবতীয় কাজ করা হচ্ছে। ফলে বৃষ্টিতে কাজ আটকে নেই।’’ তবে পরে কী হবে, সে কথা এখনই ভাবতে নারাজ তিনি। বলছেন, ‘‘পরিস্থিতি বুঝে বিকল্প ব্যবস্থা হয়ে যাবে।তাতে যদি পুজোর বাজেট বাড়ে, তা হলে বাড়ুক!’’