বেহালায় ছোট ধাপা, নির্বিকার পুরসভা

ভৌগোলিক অবস্থানের বিচারে এই এলাকার গুরুত্ব যথেষ্ট। আশপাশে রয়েছে তিনটি স্কুল। পাঠকপাড়া রোড সংলগ্ন প্রায় ৩৫ কাঠা ওই জমির উপর দিয়ে রোজ হাজার দুয়েক লোক যাতায়াত করেন।

Advertisement

দেবাশিস ঘড়াই

শেষ আপডেট: ০২ জুন ২০১৮ ০২:৩৬
Share:

নরক: পাঠকপাড়া রোডের এখানেই ফেলে যাওয়া হয় আবর্জনা থেকে মৃত পশু। ছবি: অরুণ লোধ

বাড়ির উল্টো দিকে খালি জমি। সেখানেই ফেলা হয় যাবতীয় জঞ্জাল। বাদ নেই পশুর দেহও। সে সবের দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ বাসিন্দা থেকে পথচারীরা। এলাকায় ঢুকলে টের পাওয়া যায়, ধাপার বাইরেও এ শহরের আরও এক ‘ছোট ধাপা’ রয়েছে বেহালার পাঠকপাড়া রোডে।

Advertisement

ভৌগোলিক অবস্থানের বিচারে এই এলাকার গুরুত্ব যথেষ্ট। আশপাশে রয়েছে তিনটি স্কুল। পাঠকপাড়া রোড সংলগ্ন প্রায় ৩৫ কাঠা ওই জমির উপর দিয়ে রোজ হাজার দুয়েক লোক যাতায়াত করেন। এ নিয়ে বাসিন্দারা বারবার স্থানীয় কাউন্সিলর থেকে কলকাতা পুরসভায় চিঠিও দিয়েছেন। তার পরেও পরিস্থিতির পরিবর্তন হয়নি।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, সমস্যার সূত্রপাত প্রায় ৩০ বছর আগে। ব্যক্তিগত মালিকানাধীন একটি পুকুর ছিল সেখানে। ধীরে ধীরে তা বোজানো শুরু হয়। ভরাট করার পরে সেখানে আবর্জনা ফেলা হতে থাকে। এমনকি বাইরে থেকে এসে মরা গরু, কুকুর-বিড়ালও ফেলে যান অনেকে। স্থানীয় এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘ডায়মন্ড হারবার রোড থেকে মাত্র চার মিনিট দূরত্ব। প্রতিদিন বিসদৃশ ভাবে নোংরা স্তূপ হয়ে পড়ে থাকে।’’

Advertisement

কেন ওই জায়গায় কিছু করা যাচ্ছে না? স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, আগে পুকুর থাকায় পুরসভার নথিতে এটি ‘ওয়াটারবডি’ হিসেবে নথিভুক্ত হয়ে রয়েছে। এখনকার নিয়ম অনুযায়ী, জলাশয় বা পুকুরে কোনও নির্মাণ করা বেআইনি। তাই বহুতল তৈরি করাও সম্ভব হচ্ছে না। ফলে ওই জায়গায় কী করা হবে, তা নিয়ে আতান্তরে স্থানীয় বাসিন্দারা।

বাসিন্দাদের বক্তব্য, বর্ষা আসন্ন। ফলে আবর্জনায় জল জমে ডেঙ্গির জীবাণু বহনকারী মশার আঁতুড়ঘর তৈরির আশঙ্কা রয়েছে। এলাকা নিয়মিত পরিষ্কার না হওয়ায় বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক বাড়ছে। স্থানীয় সূত্রের খবর, জমিটির একাধিক মালিক। কিন্তু তাঁদের শরিকি মতপার্থক্য থাকায় জমি নিয়ে কী করা হবে, সে বিষয়ে সর্বসম্মত সিদ্ধান্তে আসা যাচ্ছে না। যদিও এক মালিকের কথায়, ‘‘জমি নিয়ে কোনও আইনি জটিলতা নেই। শরিকেরা সকলে একজোট না হওয়ায় সেখানে কী করা হবে, সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া যাচ্ছে না!’’ তিনি জানান, মূলত রাতের অন্ধকারে এসে অনেকে আবর্জনা ফেলে দিয়ে যান। চেষ্টা করেও এ নিয়ে কিছু করা যাচ্ছে না।

স্থানীয় কাউন্সিলর সঞ্চিতা মিত্র জানান, ওই জমি নিয়ে সমস্যা বহু দিনের। কী ভাবে তা মেটানো যাবে, তার সুরাহা করা যাচ্ছে না। সঞ্চিতা বলেন, ‘‘পুরসভাকে একাধিক বার জানানো হয়েছে। কোনও লাভ হয়নি। সামনেই ডেঙ্গির মরসুম। অথচ ওয়ার্ডে কারও ডেঙ্গি হলে তার দায় আমার উপরেই পড়বে। এই সমস্যা কী ভাবে সমাধান করা যায়, সত্যিই জানি না!’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement