ছবি: পিটিআই।
এক দিকে এম বি রোড, যশোর রোড, রেললাইন। অন্য দিকে বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে। আশপাশের তুলনায় পুর এলাকাটি অনেকটাই নিচু। সেই সঙ্গে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেখানে গজিয়ে উঠেছে বহুতল। কিন্তু নিকাশি বলতে সেই সাবেক কালের খোলা নর্দমা। এই সব কারণের জন্যই ভারী বৃষ্টি হলেই দীর্ঘ সময় ধরে জল জমে থাকছে উত্তর দমদম পুর এলাকায়।
রবিবার রাত থেকে চলা ভারী বর্ষণে তাই উত্তর দমদম পুরসভার একাধিক জলমগ্ন ওয়ার্ড থেকে এখনও জল নামেনি। একই অবস্থা দমদম ও দক্ষিণ দমদম পুর এলাকাতেও। এ দিন উত্তর দমদমের ২, ৩, ৭, ৮, ১১, ১২, ১৮, ২১ নম্বর ওয়ার্ড-সহ প্রায় ১৩-১৪টি ওয়ার্ডের একাধিক এলাকায় জল দাঁড়িয়ে রয়েছে। পুরসভার দাবি, পাম্প চালানো হলেও আশপাশের খাল টইটম্বুর থাকায় কোনও কাজ হচ্ছে না। তবে পুর আধিকারিকদের দাবি, বৃষ্টি না হলে আজ, বুধবারের মধ্যে অধিকাংশ জায়গা থেকেই জল নেমে যাবে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, এলাকায় একের পর এক বহুতল তৈরি হয়েছে। কিন্তু নিকাশির উন্নতি হয়নি। মান্ধাতা আমলের নিকাশি পরিকাঠামো অতিরিক্ত জল বহনে সক্ষম নয়। ফলে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টি হলেই এলাকা জলের তলায় চলে যায়। এ জন্য বাগজোলা, সোনাই, নোয়াই, ক্যান্টনমেন্ট, কেষ্টপুর খাল অবিলম্বে সংস্কারের দাবি জানাচ্ছেন তাঁরা।
এই সমস্যার কথা কার্যত স্বীকার করে উত্তর দমদম পুরসভার মুখ্য প্রশাসক বিধান বিশ্বাস জানান, এলাকাগুলির ভৌগোলিক অবস্থান অনেকটা বাটির মতো। তাই খালগুলি জলে ভরে থাকায় সমস্যা বেড়েছে। তবে নিকাশির সংস্কার নিয়ে ইতিমধ্যেই পর্যালোচনা হয়েছে। প্রয়োজনীয় পরিকল্পনা করে তা রূপায়িত করা হবে।
দমদম পুরসভার অধিকাংশ জায়গা থেকেই জল নেমে গিয়েছে বলে পুর কর্তৃপক্ষের দাবি। তবে, কমলাপুর, গোরাবাজার, পি কে গুহ রোড সংলগ্ন কিছু এলাকায় এখনও জল রয়েছে। পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য বরুণ নট্ট জানান, অধিকাংশ জায়গা থেকেই জল নেমে গিয়েছে। বৃষ্টি না হলে বাকি এলাকাগুলি থেকেও দ্রুত জল সরে যাবে। তার পরেই ব্লিচিং সরানো এবং মশা নিয়ন্ত্রণের কাজে জোর দেওয়া হবে।
তবে দক্ষিণ দমদমের বহু এলাকায় মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত জল দাঁড়িয়ে রয়েছে। ভিআইপি রোডে সার্ভিস রোড, দমদম পার্ক, কালিন্দী, জ’পুর, মাঠকল থেকে শুরু করে ১২, ১৩, ১৪, ১৭, ১৮, ১৯, ২০ নম্বর ওয়ার্ডের একাধিক জায়গা এখনও জল থইথই। যদিও পুরসভার দাবি, জল নামতে শুরু করেছে। তবে খালগুলি জলে ভরে থাকায় জল নামার গতি অনেকটাই শ্লথ। বৃষ্টি আর না হলে বুধবারের মধ্যে জল সরানো যাবে বলে দাবি পুরকর্তাদের।
এলাকার বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, খালের পাশাপাশি নিকাশি ব্যবস্থার উন্নতি এবং তা নিয়মিত সংস্কারের প্রয়োজন রয়েছে। এ নিয়ে পুরসভার মুখ্য প্রশাসক জানিয়েছেন, পুরসভার নিকাশি নালার সমস্যা থাকলে তা সংস্কার করা হয়। কিন্তু এ বার যে পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে তাতে খালগুলি জলে ভরে থাকায় জল সরাতে সময় লাগছে। খাল সংস্কারের বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই রাজ্য প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট দফতরের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে বেল জানিয়েছেন মুখ্য প্রশাসক।