উত্তর কলকাতার নতুন বাজারে তেমন সরবরাহ নেই মাছের। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য।
মাথার ঘাম পায়ে ফেলে বাজারে গিয়েও মনের মতো মাছের দেখা মিলছে না। শহরের মাছবাজারে ঘুরলে দেখা যাচ্ছে, বহু বিক্রেতা মাছের পসরা নিয়ে বসছেনই না। যাঁরা বসছেন, তাঁরাও যে পরিমাণ মাছ সাধারণত আনেন, তার থেকে অনেক কম আনছেন। বেশির ভাগ মাছ বিক্রেতার দাবি, শুধু মাছের জোগানই কম নয়, এই গরমে মাছের চাহিদাও তুলনামূলক কম। মাছের জোগান স্বাভাবিক হতে আরও মাস দু’-এক লাগতে পারে বলে মনে করছেন মাছ ব্যবসায়ীরা।
মানিকতলা বাজারে দীর্ঘ দিন ধরে মাছ বিক্রি করেন প্রদীপ মণ্ডল। প্রদীপ বলেন, ‘‘শুধু গরমের কারণেই জোগান কম নয়, এই সময়ে মাছের ডিম ছাড়া হয় বলে নদী, সাগরে ট্রলার নিয়ে মাছ ধরাও নিষিদ্ধ। কারণ, ট্রলারের আওয়াজে বা ডিজেল নদী বা সমুদ্রের জলে মিশে গেলে মাছের প্রজননে ক্ষতি হতে পারে। ফলে তোপসে, পমফ্রেটের মতো সামুদ্রিক মাছের জোগানও এখন বেশ কম।’’
ভেড়ির চাষিরা জানাচ্ছেন, গরমে ভেড়ির মাছের জোগানও কমেছে। তেঘরিয়া বাজারের মাছ বিক্রেতা রাজকুমার মণ্ডল বলেন, ‘‘এই সময়ে নতুন করে মাছ চাষের জন্য
ভেড়িগুলো তৈরি করা হয়। যারা ভেড়ি লিজ নেন, তাঁদের মেয়াদও সাধারণত এই সময়ে শেষ হয়। নতুন বছরে
যাঁরা লিজ নেন, তাঁরা চাষ শুরু করার পরে সেই মাছ বাজারে আসতে মাস দু’-এক লাগে।’’
গড়িয়াহাট বাজার সমিতির সাধারণ সম্পাদক দিলীপ মণ্ডল বলেন, ‘‘গরমে অনেকেই মাছ ভেড়ি থেকে শহরের বাজারে আনছেন না। খালবিল শুকিয়ে যাওয়ায় জ্যান্ত মাছের জোগানও কম। যাঁরা জ্যান্ত মাছ বিক্রি করেন, তাঁদের ভেড়ি থেকে মাছ আনতে খরচ অনেক বেশি পড়ছে। জ্যান্ত মাছ বিক্রি না হলে বরফ দিয়ে রাখা হয়। গরমে সেই বরফ দিয়েও সব দিন রাখা যাচ্ছে না। মাছ পচে গেলে পুরোটাই লোকসান। ফলে ভেড়ির ট্যাংরা, ভেটকির জোগানও কম।’’
পাতিপুকুর পাইকারি বাজারের মাছ বিক্রেতাদের মতে, মাছের জোগান কিছুটা স্বাভাবিক রেখেছে ভিন্ রাজ্যের রুই, কাতলা। দিলীপের দাবি, ‘‘এই গরমে বাজারমুখী ক্রেতাও কমেছে। ফলে জোগানের পাশাপাশি মাছের চাহিদাও কমেছে। দু’টিই কম থাকায় মাছের দামও বাড়েনি।’’