অর্থাভাবে পুজালিতে প্রকল্প রূপায়ণে বিলম্ব

প্রস্তাব উঠেছিল প্রায় পাঁচ বছর আগে। তবু আজও পুজালি পুরসভার ‘নেতাজি উদ্যানে’র কাজ শেষ হল না। প্রকল্পের সাত ভাগের এক ভাগ কাজ হয়েছে মাত্র। পুজালি পুরসভার দাবি, এই উদ্যান থেকে আয়েরও পরিকল্পনা আছে। তাই প্রকল্প শেষ করতে বদ্ধপরিকর পুরসভা। অনুমোদন পেতে দেরি হওয়ায় কাজ শেষ হতে সময় লাগছে বলে পুর-কতৃর্পক্ষ জানাচ্ছেন। সেই সঙ্গে রয়েছে অর্থের অভাবও।

Advertisement

জয়তী রাহা

শেষ আপডেট: ০৯ মে ২০১৫ ০১:৩১
Share:

শেষ হল না প্রকল্প। ছবি: অরুণ লোধ।

প্রস্তাব উঠেছিল প্রায় পাঁচ বছর আগে। তবু আজও পুজালি পুরসভার ‘নেতাজি উদ্যানে’র কাজ শেষ হল না। প্রকল্পের সাত ভাগের এক ভাগ কাজ হয়েছে মাত্র। পুজালি পুরসভার দাবি, এই উদ্যান থেকে আয়েরও পরিকল্পনা আছে। তাই প্রকল্প শেষ করতে বদ্ধপরিকর পুরসভা। অনুমোদন পেতে দেরি হওয়ায় কাজ শেষ হতে সময় লাগছে বলে পুর-কতৃর্পক্ষ জানাচ্ছেন। সেই সঙ্গে রয়েছে অর্থের অভাবও। তা সত্ত্বেও পুরসভার আশ্বাস, প্রাথমিক ভাবে চলতি বছরের শীতেই উদ্যানের কিছুটা অংশ চালু হবে।

Advertisement

দক্ষিণ ২৪ পরগনায় গঙ্গাতীরবর্তী পুজালি পুরসভা তৈরি হয়েছে ১৯৯৬-এ। গঙ্গার তীরে পিকনিকের জন্য একটি পার্কও করেছে পুরসভা। শীতকালে সেখানে প্রতি দিন যথেষ্ট ভিড় থাকে বলে জানাচ্ছেন পুর-কর্তৃপক্ষ। পুরপ্রধান ফজলুল হক বলেন, ‘‘পুরসভার নিজস্ব আয় খুবই কম। আয় বাড়ানোর পাশাপাশি এলাকার সবুজায়ন রক্ষায় আরও পিকনিক স্পট করার কথা ভাবা হয়েছিল। চাহিদার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে একটি আধুনিক মানের উদ্যান তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল কয়েক বছর আগে। সেই মতো ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে তৈরি হচ্ছে এটি।’’

পুরসভা সূত্রের খবর, উদ্যানটি ১৪,০০০ বর্গমিটার এলাকা জুড়ে। রাজ্যের থেকে পুরসভা জায়গাটি ৩৩ বছরের জন্য লিজ নিয়েছে। গঙ্গার তীরে হওয়ায় পোর্টের অনুমোদন নিতেই এক বছর লেগেছে। ২০১৩-র শেষে অনুমোদন মেলে এবং ১৪-র জানুয়ারি থেকে কাজ শুরু হয়েছে।

Advertisement

প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে চলতি বছরের শীতেই সাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হতে পারে নেতাজি উদ্যান। প্রস্তাবে আছে, ১৫টি করে কটেজ এবং ছাউনি দেওয়া চারদিক খোলা জায়গা থাকবে। এর মধ্যে বাথরুম-সহ ছ’টি ডিলাক্স কটেজ থাকছে। গ্রাম বাংলার নকশায় হচ্ছে কটেজগুলি। এই মুহূর্তে সাতটি কটেজ হয়ে রয়েছে। যার পাঁচটি সাধারণ ও দু’টি ডিলাক্স। নারী ও পুরুষদের জন্য দু’টি টয়লেট ব্লকও করা হয়েছে। এর মূল প্রবেশ পথটি ফণীভূষণ পাঠক রোড দিয়ে। বাঁধ রোডের উপরে হচ্ছে বেরনোর রাস্তা। এখনও পর্যন্ত প্রায় ৯০ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। যার ৩৫ লক্ষ টাকা বিধায়ক তহবিলের, মিউনিসিপ্যাল অ্যাফেয়ার্স দফতরের কেইউএসপি-র তরফে ৪৫ লক্ষ টাকা এবং বাকি টাকা
পুজালি পুরসভার।

বোটিংয়ের জন্য একটি জলাশয় তৈরির পরিকল্পনাও রয়েছে। গঙ্গার সমান্তরালে নদীর মতোই সেটি বয়ে যাবে। জলাশয় পারাপারে তিনটি ফুটওভার ব্রিজ হবে। থাকবে শিশু উদ্যান, কমিউনিটি পার্ক, বসার ব্যবস্থা, ঝর্না, সৌর পার্ক, ওয়াচ টাওয়ার। প্রকল্প শেষ হলে নেতাজি উদ্যানে সৌরশক্তি ব্যবহার হবে। ডায়মন্ড হারবার থেকে কলকাতা বন্দরে যাওয়া জাহাজগুলি এই নদী পথেই যাতায়াত করে। ফলে খুব কাছ থেকে জাহাজ দেখা যাবে। থাকবে গোল্ডেন ফ্লাওয়ার, ছাতিম, কদম, জারুল, হিজল, রক্তকরবী, শিমূল, সুলতান চম্পা, ইন্ডিয়ান কোরাল, এলিফ্যান্ট অ্যাপেল-সহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ-গাছালি ঘেরা বাগান। এ ছাড়াও ওখানে অনেক গাছ রয়েছে। সেই সবও থাকবে। গঙ্গার একেবারে ধারে থাকায় দু’ফুট উচ্চতা পর্যন্ত পাঁচিলে ঘেরা থাকবে এলাকাটি। তার উপরে হবে ফেন্সিং। পুজালি পুরসভার ইঞ্জিনিয়ারিং ইনচার্জ সুজিত পাল বলেন, ‘‘উদ্যানের তৈরির মোট খরচ ধরা হয়েছে সাত কোটি টাকা। বাকি পাঁচ কোটি ৯০ লক্ষ টাকার জন্য কেন্দ্র ও রাজ্যের কাছে আবেদন করা হয়েছে। পুজালি পুরসভাও নিজস্ব তহবিল থেকে টাকা দেবে। যে ভাবে অর্থের যোগান আসবে সে ভাবেই কাজ হবে। পুরো কাজ শেষ হতে আরও পাঁচ বছর লেগে যাবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement