প্রতীকী ছবি।
বিসর্জনের শোভাযাত্রায় চলছিল নাচগান। অভিযোগ, অনেকেই ছিলেন নেশাগ্রস্ত অবস্থায়। সেই সময়ে মোটরবাইক আরোহী এক তরুণ-তরুণী শোভাযাত্রার ভিতর দিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে তাঁদের আটকে বেধড়ক মারধর করার অভিযোগ উঠল একদল যুবকের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে হাওড়ার শিবপুরের মন্দিরতলা মোড়ে। জায়গাটি রাজ্যের সচিবালয় নবান্ন থেকে সিকি কিলোমিটার দূরে। অভিযোগ, মারধরের জেরে বাইকচালক তরুণের জামা-প্যান্ট ছিঁড়ে যায়। ছিনতাই করা হয় তরুণীর মোবাইল ও নগদ টাকা। আরও অভিযাগ, তরুণীকে সিগারেটের ছেঁকা দেওয়ার চেষ্টাও করে মত্ত যুবকেরা। রাতেই পুলিশে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন কলেজপড়ুয়া ওই তরুণী ও তাঁর বন্ধু। মূল দুই অভিযুক্তের খোঁজ চালাচ্ছে পুলিশ। তবে শুক্রবার রাত পর্যন্ত কেউ ধরা পড়েনি।
পুলিশ সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার রাতে ওষুধ কিনে এক বন্ধুর সঙ্গে মোটরবাইকে বাড়ি ফিরছিলেন শিবপুরের অপ্রকাশ মুখার্জি লেনের বাসিন্দা ওই তরুণী। তখন নবান্নের কাছে শিবপুর মন্দিরতলা দিয়ে কালীপুজোর বিসর্জনের শোভাযাত্রা যাচ্ছিল। অভিযোগ, শোভাযাত্রা থামিয়ে রাস্তায় চলছিল উদ্দাম নাচগান। রাস্তা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় যানজট হয়। তা কাটিয়ে তাঁরা শোভাযাত্রার ভিতর দিয়েই বেরোতে চেষ্টা করছিলেন বলে তরুণীর দাবি।
আক্রান্ত তরুণী বলেন, ‘‘বিসর্জন দিতে যাওয়া কিছু যুবক আমাদের আটকায়। ওরা নেশাগ্রস্ত ছিল। অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। প্রতিবাদ করায় আমার বন্ধুকে বেধড়ক মারধর শুরু করে ওই যুবকেরা। আমি বাঁচাতে গেলে আমাকেও মারধর করা হয়। আমার মোবাইল, টাকা কেড়ে নেয়। পথচলতি কিছু মানুষ, যাঁরা বাঁচাতে এগিয়ে এসেছিলেন, ওরা তাঁদের এবং আমাকে সিগারেটের ছেঁকা দেওয়ার চেষ্টা করে।’’ তরুণীর দাবি, অভিযুক্ত যুবকেরা শিবপুর মালিবাগান এলাকার বাসিন্দা বলে তাঁরা জেনেছেন। তরুণী আরও জানান, তিনি এখনও পর্যন্ত তাঁর মোবাইল ও টাকা ফেরত পাননি।
ঘটনার পর থেকে আতঙ্কিত হয়ে রয়েছেন ওই তরুণ-তরুণী। পুলিশ জানিয়েছে, তরুণীর সঙ্গে থাকা ওই যুবকের বাড়ি শিবপুরের চ্যাটার্জিহাটের শরৎ চ্যাটার্জি রোডে। ঘটনা প্রসঙ্গে আক্রান্ত তরুণীর দিদি বলেন, ‘‘যে যুবকেরা আমার বোন এবং ওর বন্ধুর গায়ে হাত দিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিক পুলিশ। নবান্নের কাছাকাছি মন্দিরতলার মতো গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় যেখানে সর্বক্ষণ পুলিশি প্রহারা থাকে, সেখানে এই ঘটনা ঘটে কী ভাবে? আমরা জেনেছি, যখন ঘটনাটি ঘটে, তখন সেখানে পুলিশ ছিল। তা সত্ত্বেও তারা ব্যবস্থা নেয়নি কেন? আমরা এর বিচার চাই। দোষীদের দ্রুত গ্রেফতার করতে হবে।’’
নবান্নের অদূরে জনসমক্ষে মহিলাকে যৌন হেনস্থা, মারধর ও ছিনতাইয়ের মতো ঘটনার অভিযোগে পুলিশও নড়ে বসেছে। রাতেই অভিযুক্তদের খোঁজে গেলে তারা পালায় বলে পুলিশের দাবি। হাওড়া সিটি পুলিশের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘তরুণীর অভিযোগ পেয়েই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থা, মারধর, ছিনতাইয়ের মামলা রুজু করা হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব তাদের গ্রেফতার করা হবে।’’