Metro Railways

Drainage system Blocked: খালে মেট্রোর স্তম্ভ, তাতেই কি রুদ্ধ নিকাশি?

ওই অঞ্চলে জল জমার সমস্যার সমাধানে বৃহস্পতিবার এলাকা পরিদর্শন করেন কলকাতা পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান ফিরহাদ হাকিম।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ জুলাই ২০২১ ০৬:১৮
Share:

বাইপাসের ধারে টিপি খালের উপরে এ ভাবেই রয়েছে মেট্রোর স্তম্ভ এবং ইস্পাতের অস্থায়ী কাঠামো। যার জেরে রুদ্ধ হয়ে যাচ্ছে জলের গতি। বৃহস্পতিবার। ছবি: দেশকল্যাণ চৌধুরী

মেট্রোর উড়ালপথ নির্মাণের জন্য বাইপাস সংলগ্ন খালে বসেছে স্তম্ভ ও অস্থায়ী ইস্পাতের কাঠামো। আর সেই কারণেই খালের গোটা চারেক চ্যানেলের গতি রুদ্ধ হয়ে গিয়েছে। সম্প্রতি টানা বৃষ্টিতে বাইপাস সংলগ্ন এলাকা-সহ যাদবপুরের বিস্তীর্ণ অঞ্চল থেকে জল না নামার জন্য নির্মীয়মাণ মেট্রোর এই কাজকেই দায়ী করছেন স্থানীয় পুর কোঅর্ডিনেটরেরা।

Advertisement

ওই অঞ্চলে জল জমার সমস্যার সমাধানে বৃহস্পতিবার এলাকা পরিদর্শন করেন কলকাতা পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান ফিরহাদ হাকিম। তিনি বলেন, ‘‘যাদবপুরে এ বার ভারী বৃষ্টিতে রেকর্ড পরিমাণ জল জমেছিল। বাইপাসে খালের উপরে মেট্রোর অস্থায়ী কাঠামো থাকার জন্য খালের জলের প্রবাহ আটকে গিয়েছে। খালের মধ্যে থাকা অস্থায়ী কাঠামোগুলি ২২ জুলাইয়ের মধ্যে সরিয়ে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ। আমরা ফের ২২ তারিখের পরে এলাকা পরিদর্শন করে কাজের অগ্রগতি খতিয়ে দেখব।’’

মেট্রো সূত্রের খবর, বাইপাসের অভিষিক্তা মোড়ের কাছে নিউ গড়িয়া-বিমানবন্দর মেট্রোর উড়ালপথ তৈরির জন্য স্তম্ভ নির্মাণের কাজ চলছে। সেখানে একটি নিকাশি খালের মধ্যে তিনটির মধ্যে দু’টি স্তম্ভ নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে। স্তম্ভের ভিতের কাছে ইস্পাতের পাতের তৈরি ‘শিট পাইল’ ব্যবহার করে জলের প্রবাহ অন্য দিকে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে। দীর্ঘ দিন অনুমতি না মেলায় ওই কাজ আটকে ছিল। মাস চারেক আগে কাজ শুরু হয়। মেট্রো সূত্রের খবর, আপাতত স্তম্ভের ভিতের কাছে জলের প্রবাহ যে দিক থেকে আসছে, সে দিকের কাঠামোর অংশটি আরও ভিতরে ঢুকিয়ে দেওয়া হবে, ফলে প্রবাহ রুদ্ধ হবে না। সেই সঙ্গে স্তম্ভের গোড়ার মাটিও আলগা হবে না। অন্য তিন দিকের পাইল তুলে ফেলা হবে। সপ্তাহখানেকের মধ্যে ওই কাজ সম্পূর্ণ হলে খালের ৬০ শতাংশ খুলে যাবে। পরের ধাপে ৪০ শতাংশে ‘শিট পাইল’ লাগিয়ে অবশিষ্ট একটি স্তম্ভ নির্মাণের কাজ সম্পূর্ণ করা হবে। সেচ দফতরের প্রয়োজনীয় অনুমতি এবং নজরদারিতেই এই কাজ হচ্ছে বলে জানান নির্মাণ সংস্থা রেল বিকাশ নিগম লিমিটেডের (আরভিএনএল) এক কর্তা।

Advertisement

সম্প্রতি টানা বৃষ্টিতে যাদবপুর, টালিগঞ্জ, কসবা এলাকায় জল জমে ছিল। ওই সব এলাকার জমা জলের সমস্যার সমাধানে এ দিন আরভিএনএল, সেচ, কেএমডিএ এবং কলকাতা পুরসভার আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন ফিরহাদ। এর পরে তিনি বাইপাসের নির্মীয়মাণ মেট্রো রেল এলাকা এবং নোনাডাঙা খাল পরিদর্শন করেন।

টালিগঞ্জ, যাদবপুর, কসবা এলাকার বৃষ্টির জল মূলত পাঁচটি খালের মাধ্যমে গিয়ে পড়ে বাইপাসের নোনাডাঙা খালে। তার পরে তা চৌবাগা হয়ে গিয়ে পড়ে বিদ্যাধরী নদীতে। সম্প্রতি ওই এলাকায় জল না-নামায় স্থানীয় কোঅর্ডিনেটরদের নজরে আসে যে, বাইপাসে টিপি (টালিগঞ্জ-পঞ্চান্নগ্রাম) খালের উপরে মেট্রোর অস্থায়ী ইস্পাতের কাঠামোর কারণে খালটির আটটি চ্যানেলের মধ্যে চারটি চ্যানেলের গতিপথই রুদ্ধ হয়ে গিয়েছে।

এ দিন ফিরহাদ জানান, ওই পাঁচটি খালের জলধারণ ক্ষমতা কত, তার রেকর্ড সেচ দফতরের কাছে নেই। খালগুলির গভীরতা সম্পর্কে জানতে সেচ দফতরকে সমীক্ষা করতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি ওই এলাকার সমস্ত খাল সংস্কার করতে বলা হয়েছে। বাইপাসের ধারে একাধিক বড় আবাসন তৈরি হওয়ায় সেখান থেকেও বৃষ্টির জল পাম্প করে বাইরে ফেলা হয়। সেই কারণেও আশপাশের এলাকা জলমগ্ন হচ্ছে। তাই ওই সমস্ত বড় আবাসন প্রকল্পের সংলগ্ন এলাকায় জমা জল সরাতে কী ভাবে আলাদা নিকাশি লাইন তৈরি করা যায়, সে বিষয়ে পুরসভার নিকাশি দফতরের ডিজি-কে খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে। নোনাডাঙা খালের দু’ধারে বস্তিবাসীদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করে কী ভাবে ওই খাল দ্রুত সংস্কার করা যায়, তা সেচ ও পুর নিকাশি দফতরকে দেখতে বলেছেন পুর কর্তৃপক্ষ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement