ফাইল চিত্র।
করোনার কারণে আইএসসি পরীক্ষা স্থগিত রাখা হয়েছিল। কাউন্সিল ফর দ্য ইন্ডিয়ান স্কুল সার্টিফিকেট এগজামিনেশন (সিআইএসসিই) আগে জানিয়েছিল, এই পরীক্ষা পরে হবে। কিন্তু আইএসসি পরীক্ষার্থীদের একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণির স্কুলের পরীক্ষার যাবতীয় নম্বর এ বার কাউন্সিল চেয়ে পাঠানোয় প্রশ্ন উঠেছে, তবে কি এই পরীক্ষা হবে না? এ নিয়ে চিন্তিত অধ্যক্ষ, অভিভাবক এবং পরীক্ষার্থীরাও।
গত ২৩ মে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহের সভাপতিত্বে দেশের সমস্ত বোর্ড এবং শিক্ষামন্ত্রীদের সঙ্গে যে বৈঠক হয়েছিল, সেখানে বলা হয় অতিমারির আবহে দ্বাদশ শ্রেণির বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ে রাজ্যগুলি কী ভাবছে, ২৫ মে-র মধ্যে তা কেন্দ্রকে জানাতে। তার পরেই এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। প্রসঙ্গত, এই রাজ্যের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক যে হবে, তা বৃহস্পতিবার জানিয়েও দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ।
কাউন্সিলের পক্ষ থেকে আগেই ঘোষণা করা হয়েছিল, দশম শ্রেণির আইসিএসই পরীক্ষা বাতিল হচ্ছে। তবে বলা হয়েছিল, দ্বাদশ শ্রেণির অর্থাৎ আইএসসি পরীক্ষার দিনক্ষণ ঘোষণা হবে জুনের প্রথম সপ্তাহে। এরই মধ্যে কাউন্সিলের চিফ এগজিকিউটিভ ও সচিব জেরি অ্যারাথুনের নির্দেশ পৌঁছে গিয়েছে সব স্কুলে। সেখানে বলা হয়েছে, এ বারের আইএসসি পরীক্ষার্থীদের একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে স্কুল যে সব পরীক্ষা নিয়েছে, তার গড় নম্বর পাঠাতে। সঙ্গে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষার্থী এবং যারা গত বছর পাশ করেনি, তাদের যে সব পরীক্ষা স্কুল আগে নিয়েছিল, তারও গড় নম্বর পাঠাতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি একাদশ ও দ্বাদশে স্কুল বদল করেছে যে পরীক্ষার্থীরা, আগের স্কুল থেকে তাদের একাদশ শ্রেণির নম্বর এনে বর্তমান স্কুলকেই কাউন্সিলের কাছে গড় নম্বর হিসেবে জমা দিতে হবে। পরীক্ষার্থীদের একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষার মার্কশিটও জমা দিতে হবে। ৭ জুনের মধ্যে কাউন্সিলের নির্দিষ্ট পোর্টালে এই সব আপলোড করতে হবে বলে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
২৩ জুনের বৈঠকে কেন্দ্রের তরফে দু’টি পদ্ধতিতে পরীক্ষা নেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। একটি পদ্ধতি হল, শুধু দ্বাদশ শ্রেণির গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলির পরীক্ষা নেওয়া হোক। বাকি বিষয়গুলি স্কুলের অভ্যন্তরীণ মূল্যায়নের ভিত্তিতে হোক। অথবা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলিতে পরীক্ষার্থীরা যত নম্বর পাবে, তার উপরে নির্ভর করে বাকি বিষয়গুলির নম্বর দেওয়া হোক। দ্বিতীয় পদ্ধতি হল, সব বিষয়েই পরীক্ষা নেওয়া যেতে পারে, তবে পরীক্ষার সময়সীমা দেড় ঘণ্টা করা হোক। পরীক্ষা হোক ছোট প্রশ্নের ভিত্তিতে।
এক অধ্যক্ষ শুক্রবার বলেন, “পরীক্ষা নিয়ে এখনও কোনও ঘোষণা কাউন্সিলের পক্ষ থেকে করা হয়নি। এর মধ্যে আবার নম্বর চেয়ে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি একেবারেই আমাদের কাছে স্পষ্ট নয়।”
এ দিকে আইএসসি এবং সিবিএসই দ্বাদশের পরীক্ষা বাতিলের দাবিতে সুপ্রিম কোর্টে যে জনস্বার্থ মামলা হয়েছে, শুক্রবার ওই মামলার শুনানি ৩১ মে পর্যন্ত স্থগিত রাখা হয়। তবে বিচারপতিরা মৌখিক ভাবে জানিয়েছেন, ১ জুনের মধ্যে কেন্দ্রীয় সরকার বিষয়টি সমাধান করতে পারে।