—প্রতীকী ছবি।
পরীক্ষা দিতে যাওয়ার সময়ে ভিড়ের চাপে ট্রেন থেকে পড়ে যাওয়ায় কলেজছাত্রী সুনীতা বর্মার দু’টি পা-ই কাটা পড়েছে। বৃহস্পতিবার ওই ঘটনার পরে প্রথমে তাঁকে ব্যারাকপুরের বি এন বসু মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেখান থেকে নেওয়া হয় আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। দু’দফায় অস্ত্রোপচারেও কাটা পা জোড়া লাগানো যায়নি।
হাঁটুর নীচ থেকে কেটে যাওয়া পা-টি আর জোড়া না গেলেও বৃহস্পতিবার চিকিৎসকেরা চেষ্টা করেছিলেন, অন্য যে পায়ের পাতা কেটে গিয়েছে, সেটিকে বাঁচানোর। কিন্তু কাটা অংশটি যথাযথ ভাবে সংরক্ষণ না করায় তা-ও সম্ভব হয়নি। তবে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার ওই তরুণীর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল ছিল। আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের শল্য বিভাগের আইসিইউ-তে তিনি চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ দিন তাঁর পায়ের এক্স-রেও করা হয়েছে। চিকিৎসকেরা জানান, জখম তরুণীকে নিয়ে হাসপাতালে পৌঁছতে অনেকটা দেরি হওয়াতেই পা জোড়া লাগানো সম্ভব হয়নি। কেটে যাওয়া দু’টি পায়ের টুকরো ঠিক মতো সংরক্ষণ করা হয়নি বলেও জানিয়েছেন তাঁরা।
হুগলির চাঁপদানি এলাকার বাসিন্দা সুনীতা ব্যারাকপুরের স্বামী মহাদেবানন্দ কলেজে হিন্দি অনার্সের ছাত্রী। বৃহস্পতিবার পানিহাটি মহাবিদ্যালয়ে দ্বিতীয় সিমেস্টারের পরীক্ষা দিতে যাওয়ার সময়ে শ্যামনগর ঘাট পেরিয়ে ট্রেনে উঠেছিলেন তিনি। ভিড়ের কারণে দরজায় ঝুলন্ত অবস্থায় ছিলেন। ট্রেন পলতা স্টেশন পেরোনোর সময়ে ভিড়ের চাপে হাতল থেকে হাত ফস্কে যায় সুনীতার। তিনি পড়ে যান প্ল্যাটফর্ম ও চলন্ত ট্রেনের ফাঁকে।
বাড়ির কাছে লিট্টির দোকান চালিয়ে সংসার চলে তাঁদের। সুনীতার বাবা নেই, সৎমা ও ভাই রয়েছেন। বড় দিদির বিয়ে হয়ে গিয়েছে। দু’টি পা-ই কেটে বাদ যাওয়ায় ভেঙে পড়েছেন তাঁর পরিবারের লোকজন। সুনীতার সৎমা পুনম বর্মা বলেন, ‘‘কলেজের পরে দোকানে সময় দিত ও। এখন কী যে হবে! আমরা শেষ হয়ে গেলাম।’’