ভাঙড়-কাণ্ডের পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ ছিল দলের বিরুদ্ধে কোনও অনাস্থা আনা যাবে না। এর পরে আবার সম্প্রতি বিধানসভায় বিল পাশ হয়েছে। যার জেরে পঞ্চায়েতের সব স্তরেই নির্বাচনের পরে আড়াই বছরের মধ্যে অনাস্থা আনা যাবে না। তা সত্ত্বেও শাসক দলের এক পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনলেন তাঁরই দলের ৯ সদস্য।
ঘটনাস্থল রাজারহাটের জ্যাংড়া-হাতিয়ারা ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত। চলতি মাসের ১৪ তারিখ পঞ্চায়েত প্রধান শিবু গায়েনের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনতে চেয়ে রাজারহাটের বিডিও-র কাছে আবেদন জানান ন’জন সদস্য। কিন্তু এই ঘটনাকে ঘিরে কার্যত ফের গোষ্ঠী কোন্দল প্রকাশ্যে এল। যাঁরা অনাস্থা এনেছেন, তাঁরা বিধায়কের বিরুদ্ধ গোষ্ঠী, সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদারের অনুগামী বলেই পরিচিত। যাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা, সেই শিবুবাবু বিধায়ক সব্যসাচী দত্তের ঘনিষ্ঠ।
অনাস্থা-আবেদনকারীদের একাংশের অভিযোগ, পঞ্চায়েত আইন মেনে কাজ করছেন না প্রধান। উন্নয়ন হয়নি। তাই আইন মেনে এক বছর বাদে অনাস্থা আনতে বিডিও-কে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
পাল্টা দাবিতে প্রধানের অনুগামীরা জানান, এ ভাবে অনাস্থা আনায় দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হল। শিবুবাবু সর্বসম্মত ভাবে প্রধান নির্বাচিত হন। তাঁদের দাবি, পঞ্চায়েতে ২৫ সদস্যের মধ্যে ৯ জন আবেদন করেছেন। অধিকাংশ যে প্রধানের পক্ষে, তা স্পষ্ট। শিবুবাবুর বক্তব্য, “সব শুনেছি। যা বলার দল বলবে।”
বিধানসভায় বিল পাশ হওয়ার পরে আবেদন আদৌ গ্রহণ করা হবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠলেও পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের ব্যাখ্যা, “বিধানসভায় বিল পাশের পরে রাজ্যপালের অনুমোদনের প্রয়োজন। তা পেলে সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে।”
রাজারহাট-নিউ টাউনের বিধায়ক সব্যসাচী দত্ত বলেন, “দলের প্রতি যাঁদের আস্থা নেই, তাঁরা এই অনাস্থা এনেছেন।” সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার অবশ্য জানান, তিনি এ নিয়ে কিছু জানেন না। উত্তর ২৪ পরগনার তৃণমূল পর্যবেক্ষক, খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, “বিধানসভায় বিল পাশ হয়েছে। সেখানেই দলের সিদ্ধান্ত স্পষ্ট। এ ভাবে দলকে না জানিয়ে অনাস্থা আনা যাবে না। এ বিষয়ে দলীয় নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”