প্রতীকী ছবি
রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের লকার থেকে প্রায় ৫৯ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার গয়না লোপাট হয়ে গিয়েছিল। সেই টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য ব্যাঙ্ককে বারবার জানিয়েও কাজ হয়নি। উত্তরবঙ্গের মাটিগাড়ার বাসিন্দা তাই বাধ্য হয়ে ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়ে রাজ্য ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে মামলা দায়ের করেছিলেন। গত ১৬ মার্চ আদালত ৪৫ দিনের মধ্যে ওই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ককে গয়নার মূল্য-সহ ক্ষতিপূরণ বাবদ অতিরিক্ত দেড় লক্ষ টাকা অভিযোগকারীকে ফিরিয়ে দিতে নির্দেশও দিয়েছিল। কিন্তু আদালতের বেঁধে দেওয়া সময় পেরিয়ে গেলেও মামলাকারী সেই টাকা পাননি। ফলে ফের ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করতে চলেছেন অভিযোগকারী।
ক্রেতা সুরক্ষা দফতর সূত্রের খবর, উত্তরবঙ্গের মাটিগাড়ার বাসিন্দা, অবসরপ্রাপ্ত কর্মী অমলকুমার শিকদার তাঁর স্ত্রীর যাবতীয় গয়না রেখেছিলেন সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার বাগডোগরা শাখার লকারে। ২০১৬ সালের ৫ মে ওই ব্যাঙ্কে বড় ডাকাতি হয়। অভিযোগকারী খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, তাঁর লকার থেকে কয়েক ভরি গয়না লুট হয়ে গিয়েছে। যার তৎকালীন মূল্য ৫৯ লক্ষ ৪৫ হাজার ৩০০ টাকা।
সেই টাকা ফেরতের দাবি জানিয়ে ওই ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষকে একাধিক বার লিখিত আবেদন জানানো সত্ত্বেও কোনও কাজ হয়নি বলে জানান অভিযোগকারী। পরের বছর এপ্রিলে রাজ্য ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে ক্ষতিপূরণের মামলা দায়ের করেন অমলবাবু ও তাঁর স্ত্রী ঝুমুরদেবী। অমলবাবুর অভিযোগ, “ঘটনার সময়ে ওই ব্যাঙ্কের নিরাপত্তা বিষয়ক কোনও পরিকাঠামো ছিল না। সিসি ক্যামেরা থাকলেও অচল ছিল। সেই সময়ে ব্যাঙ্ক সংস্কার হচ্ছিল। ঘটনার সময়ে ব্যাঙ্কের জানলা খোলা থাকায় তা ভেঙে সহজেই দুষ্কৃতীরা ব্যাঙ্কে ঢুকতে পেরেছিল। ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের চরম গাফিলতিতেই এত বড় ঘটনা ঘটেছিল।”
গত ১৬ মার্চ রাজ্য ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের বিচারক শ্যামল গুপ্ত এবং উৎপলকুমার ভট্টাচার্যও তাঁদের রায়ে এই ঘটনাকে ব্যাঙ্কের উদাসীনতা এবং গাফিলতি বলে আখ্যা দেন। এবং এর সমালোচনা করে ৪৫ দিনের ভিতরে গ্রাহককে টাকা ফেরত দিতে ব্যাঙ্ককে নির্দেশ দেন। এই রায় প্রসঙ্গে সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার এজিএম (জেনারেল) অনুপকুমার মণ্ডল বলেন, “বিষয়টি আমাদের আইনি বিভাগ দেখছে।”
টাকা এখনও ফেরত না পাওয়া প্রসঙ্গে মামলাকারীর আইনজীবী প্রতীতি দাস বলেন, “আদালত অবমাননার দায়ে শীঘ্রই ওই ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হবে।”