বিপজ্জনক: পরিত্যক্ত গাড়ির চাকায় জমে রয়েছে জল। শুক্রবার, বিধাননগর (উত্তর) থানায়। ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য
এক দিকে আইনি বাধ্যবাধকতা। অন্য দিকে রোগের আশঙ্কা। দুইয়ের মাঝে পড়ে বেকায়দায় বিধাননগরের পুলিশ। থানা চত্বরে বা কাছাকাছিই রাখতে হয় দুর্ঘটনা ও অন্য মামলায় বাজেয়াপ্ত করা গাড়ি। আর সেই সব গাড়িই হয়ে উঠেছে ডেঙ্গির মশার জন্মস্থান।
শুক্রবার বাগুইআটি থানায় অভিযান চালিয়ে এমনই দাবি করল বিধাননগর পুরসভা। বৃহস্পতিবার রাতে পুরসভা খবর পায়, ওই থানার ওসি কল্লোল ঘোষ-সহ চার পুলিশকর্মী ডেঙ্গিতে আক্রান্ত। এক মহিলা পুলিশকর্মীকে হাসপাতালেও ভর্তি করতে হয়েছে। এ দিন সকালে পুরসভার কেন্দ্রীয় দল ওই থানায় যায় মশার লার্ভা খুঁজতে। আজ, শনিবার বিধাননগর উত্তর ও দক্ষিণ থানাতেও অভিযান হওয়ার কথা।
পুরকর্মীদের দলটি বাগুইআটি থানায় গিয়ে দেখে, থানা চত্বরে রাখা পরিত্যক্ত গাড়ি, টায়ার, ভাঙা কাপ-সহ বিভিন্ন আবর্জনার ভিতরে জমে রয়েছে জল। সেই জলে ভর্তি মশার লার্ভা। পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের ভারপ্রাপ্ত তথা পুর প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য প্রণয় রায় জানান, থানার পাশে একটি মন্দিরের জমিতে ওই সব গাড়ি ও আবর্জনা ছিল। জায়গাটিও জঙ্গলে ভরে রয়েছে। মন্দির কমিটি এবং পুলিশকর্মীদের সচেতন করা হয়েছে। মন্দির কমিটিকে বলা হয়েছে জঙ্গল পরিষ্কার করাতে। পুলিশকর্মীরা জানান, মশা থেকে বাঁচতে থানার জানলায় জালও বসানো হয়েছে।
বাগুইআটি থানার মতোই পরিত্যক্ত গাড়িতে ডেঙ্গির মশার লার্ভা থাকার আশঙ্কায় ভুগছেন বিধাননগর (উত্তর) থানার পুলিশকর্মীরাও। এ দিন ওই থানার বাইরে দেখা গেল পরিত্যক্ত গাড়ির ছড়াছড়ি। রয়েছে ভাঙা রিকশা, বাইক-সহ পরিত্যক্ত টায়ারও। তার মধ্যে জমা জলে কিলবিল করছে মশার লার্ভা। প্রায় একই ছবি ধরা পড়েছে বিধাননগর কমিশনারেটের অধীন পাঁচ নম্বর সেক্টরের ইলেকট্রনিক্স কমপ্লেক্স থানাতেও। বিধাননগর (দক্ষিণ) থানার উল্টো দিকে গাড়ি রাখা হলেও পুলিশকর্মীরা জানান, সন্ধ্যা নামলেই মশার উপদ্রব শুরু হয়ে যায়। পুলিশ সূত্রের খবর, রাজারহাট, নিউ টাউন, বিমানবন্দর-সহ অন্য থানাগুলির চত্বরে বা কাছাকাছি জায়গায় রাখা থাকে বাজেয়াপ্ত করা গাড়ি রাখা থাকে। সেখানেও মশা কম নয়।
বিধাননগর পুলিশের এক পদস্থ আধিকারিক জানান, মামলার সঙ্গে যুক্ত গাড়ি থানা চত্বর বা আশপাশের জমিতে রাখতেই হয়। বছরের পর বছর পড়ে থাকা গাড়ি এক সময়ে মশা আর পোকামাকড়ের বিচরণভূমি হয়ে ওঠে।
গত মঙ্গলবারই করুণাময়ীর আন্তর্জাতিক বাস টার্মিনাসে ডেঙ্গির মশার লার্ভা পেয়েছিল পুরসভা। সে দিন পর্যন্ত বিধাননগরে ডেঙ্গিতে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৩৭। শুক্রবার সেই সংখ্যা বেড়ে ৮০-তে পৌঁছেছে। এই সংখ্যা শুধুমাত্র অক্টোবর মাসেই। যা দেখে পরিস্থিতি উদ্বেগজনক বলেই মনে করছে পুরসভা।