—প্রতীকী চিত্র।
সরকারি অফিসবাড়িতে ডেঙ্গির মশার লার্ভা পেয়েছিল বিধাননগর পুরসভা।
তবে, নির্দিষ্ট সময়ের পরে অফিসে কেউ থাকেন না। কিন্তু সম্প্রতি বেশ কিছু সরকারি আবাসন থেকে ডেঙ্গির মশার লার্ভা মিলছে। সেই সব আবাসনে বহু মানুষের বসবাস। ফলে ডেঙ্গি ছড়ানোর আশঙ্কাও রয়েছে ওই সব জায়গায়। কিন্তু শুধুমাত্র সরকারি নিয়ম-নীতির ফাঁসে পড়ে ওই সব আবাসন চত্বর অনেক ক্ষেত্রেই ডেঙ্গির মশা জন্মানোর সহায়ক হয়ে উঠছে বলে অভিযোগ। এমনকি, সাম্প্রতিক একটি বৈঠকে বিধাননগর পুরসভাকে এই সমস্যার কথা জানিয়েছেন আবাসিকেরা।
ডেঙ্গির মোকাবিলায় কী করণীয়, তা নিয়ে নাগরিকদের সঙ্গে বৈঠক করেছিল পুরসভা। সেখানে উপস্থিত ছিলেন ফাল্গুনী, শ্রাবণী, বিদ্যাসাগর, বৈশাখী, করুণাময়ী-সহ একাধিক সরকারি আবাসনের বাসিন্দারা। তাঁরা নিজেদের আবাসিক এলাকার নানা সমস্যার কথা পুর কর্তৃপক্ষকে জানান। যার মধ্যে আবাসন চত্বরে জল জমে থাকা, ডেঙ্গির মশা যাতে না জন্মায় সে দিকে নজরদারি, ওষুধ সময় মতো না ছড়ানোর মতো বিষয়গুলি তুলে ধরা হয়। রাজারহাট-গোপালপুর এলাকার একটি বহু পুরনো আবাসনের বাসিন্দারা জানান, তাঁদের আবাসনে নিকাশির বেহাল দশা। ভারী বৃষ্টিতে পাম্প করে জল বার করতে হয়।
পুর কর্তৃপক্ষ জানান, সল্টলেকে যে সব আবাসন রয়েছে, সেগুলি বিভিন্ন সরকারি দফতরের অধীনে। অধিকাংশ আবাসনেই লোকজন ভাড়ায় থাকেন। তাই কারও দায়বদ্ধতা নেই বলে দাবি পুরসভার। অনেক আবাসনে বেসরকারি আবাসনের মতো আবাসিকদের তেমন সংগঠনও নেই, যারা ডেঙ্গি মোকাবিলার কাজের তদারকি করবে। এক পুরকর্তার কথায়, ‘‘সল্টলেকে একাধিক আবাসন রয়েছে, যেগুলি রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দফতরের অধীন। এর সঙ্গে রয়েছে বেশ কিছু কেন্দ্রীয় সরকারি আবাসন। যেগুলির কয়েকটি কার্যত খণ্ডহরের চেহারা নিয়েছে। রক্ষণাবেক্ষণ বলে কিছু নেই সেখানে। মশা তো সীমারেখা মেনে ডিম পাড়বে না।’’
নাগরিকদের সঙ্গে ওই বৈঠকে সংশ্লিষ্ট আবাসনের লোকজনকে পুরসভার তরফে জানানো হয়েছে যে, আবাসন পরিচ্ছন্ন রাখার দায়িত্ব সেখানকার নাগরিকদেরই নিতে হবে। পুরসভা আবাসনের আশপাশ পরিষ্কার রাখার কাজ করবে। ফাল্গুনী, বিদ্যাসাগরের মতো দু’-একটি আবাসনের বাসিন্দারা জানান, তাঁদের যে কোনও সমস্যার জন্য সংশ্লিষ্ট ইঞ্জিনিয়ারের দফতরে গিয়ে আগে অভিযোগ জানাতে হয়। তার পরে সমস্যার সমাধান হতে অনেকটা সময় লাগে। সব সময়ে ইঞ্জিনিয়ারেরা আবাসনের অফিসে আসেনও না। এ হেন নানা কারণে ডেঙ্গির মরসুমে সরকারি আবাসনগুলির রক্ষণাবেক্ষণ ভাবাচ্ছে পুর কর্তৃপক্ষকে। বৈশাখীর কাছে কলকাতা পুলিশের যে আবাসন রয়েছে, এক সময়ে সেটিকে ডেঙ্গিপ্রবণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল। কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, পুরপ্রতিনিধিদেরও বলা হয়েছে আবাসনের বাসিন্দাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে।
যদিও পুরসভার এই প্রয়াস কতটা সফল হবে, তা নিয়ে সন্দেহ আছে বাসিন্দাদের একাংশেরই। কারণ, অতীতে একাধিক বার দেখা গিয়েছে, পরিকাঠামো ও লোকবলের অভাবে নগরোন্নয়ন দফতরের আবর্জনায় ভরে থাকা ফাঁকা জমি পুরসভাকেই পরিষ্কার করতে হয়েছে। তাই ডেঙ্গির মোকাবিলায় সরকারি আবাসনগুলি নিয়মিত পরিচ্ছন্ন রাখার কাজ সংশ্লিষ্ট দফতরগুলি কতটা করতে পারবে, তা নিয়ে সন্দিহান সেখানকার বাসিন্দারাই।