—প্রতীকী চিত্র।
দুর্গাপুজো শেষ। এ বার বিধাননগরের পুরকর্তাদের ভাবাচ্ছে বড় বড় মণ্ডপ। কারণ, ডেঙ্গির আতঙ্ক এখনও রয়েছে। এরই মধ্যে মণ্ডপের পরিত্যক্ত সরঞ্জামে জল জমে থাকার আশঙ্কা প্রতি বারের মতোই রয়ে গিয়েছে। পুর কর্তৃপক্ষ চাইছেন, মাঠগুলিকে দ্রুত আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে। যদিও সেই কাজ যে সহজ নয়, মানছেন তাঁরা। ওই পুর এলাকার শুধু সল্টলেক সাব-ডিভিশনেই সাড়ে চারশোর বেশি পুজো হয়। রাজারহাটেও অজস্র ছোট-বড় পুজো রয়েছে। দুর্গাপুজো শুরুর আগে ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণে পুজোর উদ্যোক্তাদের সঙ্গে পুরসভার বৈঠকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, পুজোর পরে ১৫ দিনের মধ্যে মণ্ডপ খুলে ফেলতে হবে, যাতে বাঁশ বা মণ্ডপের সামগ্রী মশার আঁতুড়ঘর হতে না পারে।
বড় কিছু পুজোর মণ্ডপের আবার হাতবদলও ঘটে। জনপ্রিয় কিছু মণ্ডপ কালী বা জগদ্ধাত্রী পুজোতেও ব্যবহার করা হয়। তাই বিভিন্ন পুজো কমিটি মণ্ডপ দীর্ঘদিন রেখে দর কষাকষি করেই কাটিয়ে দেয়। সেই ফাঁকতালে বাড়তে থাকে মশার প্রকোপ।
জনস্বাস্থ্য বিষয়ক চিকিৎসক অনির্বাণ দলুইয়ের মতে, ঘটা করে থিমের পুজো হওয়ার পরে মণ্ডপ খুলে এলাকা পরিষ্কার করতে দীর্ঘ সময় নেন উদ্যোক্তারা। সেটাই বহু ক্ষেত্রে ডেঙ্গির প্রকোপ বাড়িয়ে তোলে। অনির্বাণের কথায়, ‘‘বর্ষার পরেও এক থেকে দু’মাস ডেঙ্গির মরসুম চলে। এখন সেটাই চলছে। মণ্ডপে বাঁশ-সহ নানা সামগ্রী পড়ে থাকে। ফলে, যত দ্রুত মণ্ডপ খুলে এলাকা পরিচ্ছন্ন করা যায়, ততই ভাল।’’ চিকিৎসকদের অনেকেই জানাচ্ছেন, তাঁরা বিভিন্ন মণ্ডপ ঘুরে দেখেছেন, সরকারি নির্দেশ মেনে অনেক জায়গায় বাঁশের উপরের খোলা অংশ ঢাকা হয়নি।
বিধাননগর পুরসভার মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) বাণীব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, সরকারি ছুটি শেষে দফতর খুললেই বৈঠক ডেকে পুজো কমিটিগুলিকে মণ্ডপ খোলার নির্ধারিত সময় মনে করিয়ে দেওয়া হবে। পুরপ্রতিনিধিদেরও বলা হবে, ওয়ার্ডে মণ্ডপ খোলানোর কাজে যেন নজর রাখা হয়।
বিধাননগর পুর এলাকায় বাগুইআটি অঞ্চল ডেঙ্গিপ্রবণ বলে পরিচিত। এ বারেও সেখানে অনেকে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন। সেখানকারই একটি পুজোর যুগ্ম সম্পাদক উৎপল চন্দ্র বলেন, ‘‘আমাদের মাঠে ক্রিকেটের অনুশীলন হয়। তাই নির্ধারিত সময়ে মাঠ পরিষ্কার করতে হয়। এ বারেও শিল্পীকে সেটা বলা হয়েছে।’’ মণ্ডপ বিক্রির কথা চলছে, সল্টলেকের এমন একটি পুজোর আহ্বায়ক সুপ্রিয় চক্রবর্তী বললেন, ‘‘পুরসভার নির্ধারিত সময়েই মণ্ডপ খোলা হবে। কথা চলছে। মণ্ডপ বিক্রি হলে আগেই খালি হবে মাঠ।’’