—প্রতীকী চিত্র।
রাজ্যে ডেঙ্গিতে মৃত্যু অব্যাহত। মশাবাহিত ওই রোগে শুক্রবার সন্ধ্যায় ফের এক জন মারা গিয়েছেন। যা ধরে শুধু চলতি মাসেই রাজ্যে ডেঙ্গিতে ন’জনের মৃত্যুর খবর প্রকাশ্যে এল। যদিও ডেঙ্গির তথ্য জানাতে এখনও পর্যন্ত মুখে কার্যত কুলুপ এঁটে রয়েছে স্বাস্থ্য দফতর।
বেসরকারি সূত্রের খবর, মৃত যুবকের নাম রমেশ দাস (৩৮)। তিনি নদিয়ার কাষ্ঠডাঙা-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের রায়কাশ এলাকার বাসিন্দা। জানা যাচ্ছে, রমেশ গত রবিবার থেকে জ্বরে ভুগছিলেন। হরিণঘাটা গ্রামীণ হাসপাতাল ও কল্যাণী জওহরলাল নেহরু মেডিক্যাল কলেজে (জেএনএম) চিকিৎসা চলাকালীন তাঁর ডেঙ্গি ধরা পড়েনি। তবে বৃহস্পতিবার কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে তাঁর ডেঙ্গি রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে। পরের দিন শুক্রবার সেখানেই মারা যান ওই বিজেপি নেতা।
অন্য দিকে, রাজ্যে এখন ডেঙ্গির কোন সেরোটাইপের বাড়বাড়ন্ত হচ্ছে, তা জানতে এ বছরও পরীক্ষা শুরু করেছে নাইসেড। সংস্থার অধিকর্তা শান্তা দত্ত বলেন, ‘‘ডেঙ্গির সেরোটাইপ চিহ্নিত করার কাজ শুরু হয়েছে। তার জন্য বেলেঘাটা আইডি হাসপাতাল থেকে নমুনা চাওয়া হয়েছে।’’ হাসপাতালের তরফেও পজ়িটিভ নমুনাগুলি নাইসেডে পাঠানো শুরু হয়েছে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীর পাশাপাশি বাইরে থেকে রক্ত পরীক্ষা করাতে আসা রোগীদের নমুনাও নাইসেডে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আইডি-র অধ্যক্ষ।
সূত্রের খবর, নদিয়া জেলার কয়েকটি জায়গার সঙ্গে হরিণঘাটারও ডেঙ্গি পরিস্থিতি ক্রমশ খারাপ হচ্ছে। এ বছরে শুক্রবার পর্যন্ত হরিণঘাটা ব্লকে ১০৫ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন। বর্তমানে ১২ জন সক্রিয় ডেঙ্গি-আক্রান্ত আছেন বলে ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা যাচ্ছে। এ দিকে, রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তার কথায়, ‘‘সামগ্রিক পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হচ্ছে। এখনও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে বলা চলে না।’’ রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর সূত্রের খবর, ১৯ থেকে ২৬ জুলাই পর্যন্ত কলকাতা পুরসভার ৪০ জন আক্রান্ত বাদ দিলে রাজ্যের আরও ৪৭টি পুরসভা মিলিয়ে মোট ১৭৭ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত।
সূত্রের খবর, রাজ্যে সব থেকে বেশি ডেঙ্গি আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে বিধাননগর পুর এলাকায়। সেখানে এখনও পর্যন্ত ২৭ জন আক্রান্ত। এর পরেই রয়েছে দুর্গাপুর (১৯), রানাঘাট (১৬), বারাসত (১১), হাওড়া (৭)। এই তথ্য জানিয়ে ইতিমধ্যেই কলকাতা-সহ বাকি ৪৭টি পুরসভার কর্তৃপক্ষকে সতর্ক হওয়ার চিঠি পাঠানো হয়েছে রাজ্য নগরোন্নয়ন সংস্থা বা সুডা-র তরফে। তাতে সংস্থার অধিকর্তা নির্দেশ দিয়েছেন, মশাবাহিত রোগ মোকাবিলায় সংশ্লিষ্ট পুরসভা কী ব্যবস্থা নিয়েছে, সেটির রিপোর্ট ৮ অগস্টের মধ্যে দফতরকে জানাতে হবে। চিঠির সঙ্গেই কোন পুরসভার কোন বাসিন্দা আক্রান্ত হয়েছেন, সেই তালিকাও সংযুক্ত করা হয়েছে।