অঘটন: ভেঙে পড়েছে বাড়ির একাংশ। তখনও বেরোচ্ছে ধোঁয়া। মঙ্গলবার, কলুটোলা স্ট্রিটে। ছবি: সুমন বল্লভ।
কলুটোলা স্ট্রিটের জীর্ণ তেতলা বাড়ির আগুন সম্পূর্ণ নেভেনি মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত। বাড়ির পিছনের অংশ ভেঙে পড়েছিল সোমবার রাতেই। ফাটল দেখা দিয়েছে অন্যান্য অংশেও। বাসিন্দাদের সরিয়ে ফেলা হয়েছিল সোমবারই। এ দিন দেখা যায়, বাড়ির পিছনের অংশ থেকে বেরোচ্ছে কালো ধোঁয়া। এলাকা ভরে রয়েছে পোড়া গন্ধে। পুলিশ ঘিরে দিয়েছে বাড়িটি। দমকলের এক আধিকারিক জানান, সন্ধ্যা পর্যন্ত সেখানে দমকলের একটি ইঞ্জিন কাজ করেছে।
সোমবার সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ কলুটোলা স্ট্রিটের তেতলা এই পুরনো বাড়িতে আগুন লাগে। পুড়ে যায় উপরের দু’টি তলের বড় অংশ। পাশেই থাকেন বিপিন গনোত্রা। যিনি অগ্নিকাণ্ডের খবর পেলেই নেভানোর কাজে হাত লাগাতে ছুটে যান। সোমবার থেকেই তিনি ঘটনাস্থলে রয়েছেন। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘বেশ কয়েকটি ছোট ছোট জায়গায় আগুন ধিকিধিকি জ্বলছে। দমকলের কর্মীরা সেখানে কাজ করছেন।’’
স্থানীয় সূত্রের খবর, বাড়িটিতে তিনটি গুদাম ছাড়াও রয়েছে প্রায় ৩০টি দোকান। সব মিলিয়ে প্রায় ৫০০ জন কর্মী কাজ করতেন। উপরের তলায় থাকত চারটি পরিবার। এ দিন সকাল থেকে ভিড় করেন ব্যবসায়ী এবং কর্মীরা। দোকান খোলার দাবিতে তাঁরা দফায় দফায় বিক্ষোভ দেখান। এই বাড়িতে সপরিবার থাকতেন ইউসুফ আজিজ। তিনি বলেন, ‘‘এখানেই আমার জন্ম। এখন আত্মীয়ের বাড়িতে রয়েছি। কিন্তু ওখানে আর কত দিন থাকতে পারব?’’ মহম্মদ বুলন্দ আখতার খান নামে আর এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘আমি ছাড়াও দাদার পরিবার থাকত এই বাড়ির উপরের তলায়। দাদা এক বন্ধুর বাড়িতে রয়েছেন। আমি আজই বিহার থেকে এসেছি। কোথায় থাকব জানি না।’’ একটি দোকানের কর্মী সরাফত আলির আফশোস, ‘‘এখানে একটা চটি তৈরির কারখানা ছিল। কারখানা না খুললে রোজগার বন্ধ হয়ে যাবে।’’
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ওই বাড়িটি ওয়াকফ সম্পত্তি। কিন্তু আগুন লাগার ঘটনার এক দিন পরেও বোর্ডের তরফে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ওয়াকফ এস্টেটের এক আধিকারিক জানান, ওই বাড়ির ইসি নম্বর ১১৫০৪। তিনি আরও জানান, বিভিন্ন ওয়াকফ সম্পত্তি দেখাশোনার জন্য মোতায়াল্লি নিযুক্ত করা হয়। এ ক্ষেত্রে মোতায়াল্লি কিছু না জানানোয় বোর্ডের কাছে খবর পৌঁছয়নি। তবে বোর্ড চেয়ারম্যান আবদুল গনি বলেন, ‘‘আমরা খোঁজ নিয়ে দেখেছি, ওটা ওয়াকফ সম্পত্তি নয়।’’