ফাইল চিত্র।
আদালতের কথা মতো রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিবের সঙ্গে বৈঠকে বসলেন আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আন্দোলনকারী পড়ুয়া-চিকিৎসকদের প্রতিনিধিরা। কিন্তু শুক্রবার সেই বৈঠকের পরেও কোনও সমাধানসূত্র বেরোয়নি বলেই দাবি আন্দোলনকারীদের। তাঁদের কথায়, ‘‘মৌখিক আশ্বাস ছাড়া কিছুই মেলেনি। তাই আমরাও নিজেদের সিদ্ধান্তে অনড় থাকছি।’’
যা থেকে স্পষ্ট, গত কয়েক মাস ধরে আর জি কর হাসপাতালে বিভিন্ন দাবি নিয়ে যে আন্দোলন চলছে, তা চলবে। পাশাপাশি, অধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবিতে যে অনশন শুরু হয়েছে, তা-ও চালিয়ে যাওয়ার কথাই জানাচ্ছেন পড়ুয়া-চিকিৎসকদের একাংশ। ওই মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অচলাবস্থা কাটাতে কলকাতা হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছিল। গত ২৫ অক্টোবর সেই মামলার শুনানিতে আন্দোলনকারী পড়ুয়াদের দাবি মতো তাঁদের সঙ্গে স্বাস্থ্যসচিবের বৈঠকের ব্যবস্থা করে দিয়েছিল আদালত। এ দিন সকালে আন্দোলনকারী পড়ুয়া-চিকিৎসকদের ছ’জন প্রতিনিধি পৌঁছন স্বাস্থ্য ভবনে। সেখানে স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম, স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা দেবাশিস ভট্টাচার্য-সহ আরও তিন কর্তা ছিলেন।
সূত্রের খবর, প্রায় ১৫ মিনিট ধরে আলোচনা চলে। অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের পদত্যাগের বিষয়টি দিয়ে আলোচনা শুরু করার পাশাপাশি বার বারই তা তুলে ধরেন আন্দোলনকারীরা। কিন্তু স্বাস্থ্যসচিব জানিয়ে দেন, অধ্যক্ষের বদলি বা অপসারণের বিষয়টি সরকারি নিয়মের মধ্যে পড়ে। তাই সেটি নিয়ে কিছু করা সম্ভব নয়। সরকার ঠিক করবে, কোথায় কোন অধ্যক্ষ থাকবেন। আন্দোলনকারীদের অন্য সমস্যাগুলি শুনতে চান স্বাস্থ্যকর্তারা। তখন ছাত্র সংসদ তৈরি, হস্টেল কমিটি গঠন, হস্টেলের পরিকাঠামোর উন্নয়ন-সহ অন্যান্য বিষয়গুলি জানান পড়ুয়া-চিকিৎসকেরা। তাঁদেরই এক জনের কথায়, ‘‘স্বাস্থ্যসচিব সব শুনে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন। কিন্তু জোরালো ভাবে কোনও কথা বলেননি। সবটাই মৌখিক প্রতিশ্রুতি।’’
পড়ুয়া-চিকিৎসকদের প্রতিনিধিরা জানাচ্ছেন, তিন-চার বছর ধরে আর জি করে পড়াশোনা করা পড়ুয়াদের পরিচয়পত্র ছাড়া ঢুকতে বাধা দেওয়া, রাত ১০টার পরে মহিলা পড়ুয়ারা হস্টেলের বাইরে থাকবেন না এমন নির্দেশ জারি করে তাঁদের অপমান করা হয়েছে। সেটি কী ভাবে অধ্যক্ষ করলেন, তা-ও জানতে চান ওই প্রতিনিধিরা। পাশাপাশি, অনশনরত পড়ুয়াদের বাড়িতে পুলিশ পাঠিয়ে অভিভাবকদের কেন অপমান করা হল, সেই প্রশ্নও তোলেন তাঁরা। এক পড়ুয়ার কথায়, ‘‘প্রশ্নগুলির উত্তরে স্বাস্থ্যসচিব দুর্ভাগ্যজনক বলে মন্তব্য করেন। কিন্তু যাঁর জন্য এই সব ঘটনা, সেই অধ্যক্ষের অপসারণের বিষয়ে কিছু বলেননি।’’
এক স্বাস্থ্যকর্তার কথায়, ‘‘পড়ুয়ারা সমস্যাগুলি জানিয়েছেন। পুরো বিষয়টি লিখিত আকারে আদালতকে জানানো হবে। আগে থেকে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে না।’’ আগামী ২ নভেম্বর মামলার পরবর্তী শুনানি।