—ফাইল চিত্র।
কোনও জলাশয়ে মাছ মরে গেলে জলদূষণ রুখতে সেগুলি অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়াই দস্তুর। কিন্তু সম্প্রতি সুভাষ সরোবরে যে সব মাছ মারা গিয়েছিল, সেগুলি অন্যত্র না সরিয়ে সরোবরের দ্বীপের মধ্যেই গর্ত করে রাখার অভিযোগ উঠেছে।
মৎস্য দফতরের এক আধিকারিক জানান, যে জলাশয়ে মাছ মারা গিয়েছে সেখান থেকে সমস্ত মরা মাছ সরিয়ে ফেলা উচিত। নয়তো পরবর্তীকালে দূষণের আশঙ্কা থেকেই যায়। রাজ্যের মৎস্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক গদাধর দাস বলেন, ‘‘শুনেছি, মরা মাছ সরোবরের ভিতরে থাকা কৃত্রিম দ্বীপে গর্ত করে রাখা গয়েছে। এই পদ্ধতি ঠিক নয়। কারণ, পরে বেশি বৃষ্টিতে অথবা মাটির ক্ষয় হলে পচনশীল মাছের জীবাণু সরোবরের জলে মিশবে।’’ তিনি জানান, নিয়ম অনুযায়ী মরা মাছ সরোবর চত্বরের বাইরে কোথাও সরিয়ে ফেলা দরকার।
কেএমডিএ সূত্রের খবর, গত শনিবার ভোরে বেলেঘাটার সুভাষ সরোবরে প্রচুর মাছ মরে ভেসে উঠেছিল। কিছু মরা মাছ সরোবর থেকে স্থানীয়েরা নিয়ে যান বলেও অভিযোগ উঠেছিল। বাকি মরা মাছ সংগ্রহ করে ওই দ্বীপে রাখা হয়। কেএমডিএ-র বক্তব্য, মৃত মাছ অন্যত্র রাখা নিয়ে সমস্যা হওয়ায় ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
‘ওয়েস্ট বেঙ্গল অ্যাঙ্গলার্স অ্যাসোসিয়েশন’ সুভাষ সরোবরে মাছ ধরা ছাড়াও জলের গুণমানের দেখভাল করে। অ্যাসোসিয়েশনের কার্যনির্বাহী সদস্য সুব্রত সেন অভিযোগ করেন, ‘‘মরা মাছ ফেলার জায়গা নিয়েই সমস্যা। বাইরে ফেলতে গেলে অনেকেই আপত্তি করেন। শুধু তা-ই নয়, মরা মাছ বাইরে থেকে নিয়ে গিয়েও অনেকে বিক্রি করতে পারেন। তবে মৎস্য দফতরের নির্দেশিকা পাওয়ার পরেই আমরা পুরসভার সঙ্গে কথা বলে অন্যত্র মাছ ফেলার ব্যবস্থা করছি।’’
মঙ্গলবার মৎস্য দফতরের আধিকারিকেরা সুভাষ সরোবর ঘুরে দেখেন। পরে তাঁরা জানান, শনিবারের পর থেকে নতুন করে মাছ মরেনি। জলে ওষুধ দেওয়া হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে, সরোবরের জলে কোনও দূষণ নেই বলেই অনুমান। তবে এখনও জলের নমুনার চূড়ান্ত রিপোর্ট মেলেনি। কেএমডিএ কর্তৃপক্ষের দাবি, মৎস্য দফতর ছাড়াও পরিবেশ দফতরকে দিয়ে জলের নমুনা পরীক্ষা করানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ দিনই পরিবেশ দফতর জলের নমুনা নিয়েছে।