সোমবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে আনন্দপুর থানা এলাকার চৌবাগার একটি বাড়িতে। প্রতীকী ছবি।
এক গৃহবধূর অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। তাঁর নাম বিচিত্রা মণ্ডল (২২)। সোমবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে আনন্দপুর থানা এলাকার চৌবাগার একটি বাড়িতে। গলায় ওড়না বেঁধে সিলিং ফ্যান থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় ওই তরুণীর দেহ উদ্ধার হয়। প্রাথমিক ভাবে পুলিশের ধারণা, এটি আত্মহত্যা। একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে আনন্দপুর থানা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, চৌবাগা স্কুল রোডের বাসিন্দা এক যুবকের সঙ্গে ওই এলাকারই বাসিন্দা বিচিত্রার বছর তিনেক আগে বিয়ে হয়। তাঁদের তিন বছরের একটি ছেলে রয়েছে। স্থানীয়েরা জানান, সোমবার সকাল ৯টা নাগাদ নিজেদের বাড়ির সামনেই খেলছিল শিশুটি। সেই সময়ে বাড়ির দরজা ভেজানো ছিল। খেলতে খেলতে শিশুটি হঠাৎ বাড়ির দরজা খুলতেই মাকে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলতে দেখে চিৎকার শুরু করে। যা শুনে পাশের বাড়ির লোকজন ছুটে আসেন। খবর পেয়ে চলে আসে আনন্দপুর থানার পুলিশ। বিচিত্রাকে উদ্ধার করে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত বলে ঘোষণা করেন।
স্থানীয় সূত্রের খবর, বিয়ের পর থেকেই বিচিত্রার সঙ্গে বনিবনা ছিল না তাঁর স্বামীর। ওই তরুণীর বিরুদ্ধে বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কের অভিযোগও তুলেছিলেন স্বামী। এ নিয়ে দম্পতির মধ্যে মাঝেমধ্যেই অশান্তি হত বলে প্রতিবেশীরা জানান। এমনকি, বছরখানেক আগেও এক বার বিচিত্রা গায়ে কেরোসিন ঢেলে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন বলে তাঁর পরিবারের সদস্যেরা জানিয়েছেন। মৃতার এক আত্মীয়া মধুমিতা মণ্ডল বলেন, ‘‘বিচিত্রা কারও সঙ্গে কথা বলত না। বাড়িতে একা থাকত।’’ ওই তরুণীর মা পূর্ণিমা নাড়ু দিল্লিতে পরিচারিকার কাজ করেন। তিনি বলেন, ‘‘মেয়ের সঙ্গে জামাইয়ের অশান্তির কথা শুনে আমি দিল্লি থেকে দিনকয়েক আগে কলকাতায় আসি। রবিবার রাতে ওকে অনেক করে বুঝিয়েছিলাম। অশান্তি করতে বারণ করেছিলাম। কিন্তু মেয়েটা অকালে নিজের জীবন শেষ করে দিল।’’
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, প্রগতি ময়দান থানা এলাকার বাসিন্দা এক যুবকের সঙ্গে বিচিত্রার সম্পর্ক গড়ে ওঠার অভিযোগ ঘিরেই মূলত স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে অশান্তি চলছিল। যা রবিবার রাতে চরমে ওঠে। পেশায় আনাজ বিক্রেতা বিচিত্রার স্বামী সোমবার ভোরে আনাজ বিক্রি করতে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। তিনি চলে যাওয়ার পরে বাড়ির সমস্ত কাজকর্ম করেন ওই তরুণী। তাঁর মা বলেন, ‘‘সোমবার সকাল ৯টা নাগাদ মেয়েকে ফোন করলে রেগে ফোনটা কেটে দেয়। তার পরেই ওই কাণ্ড ঘটায়।’’ বিচিত্রার ছেলেকে কী ভাবে সামলানো হবে, এখন তা নিয়েই দুশ্চিন্তায় পরিবারের সদস্যেরা।