গঙ্গার ঘাটে এ ভাবেই বস্তাবন্দি অবস্থায় পড়ে ছিল দেহ। শনিবার, হাওড়ায়। নিজস্ব চিত্র
ভোরবেলা গঙ্গার ঘাটে পড়ে ছিল মুখ বন্ধ করা একটি বস্তা। আর তার পাশেই দাঁড় করানো ছিল নম্বর প্লেটহীন একটি বাইক। সন্দেহ হতেই পুলিশে খবর দেন স্থানীয়েরা। পুলিশ সেখানে পৌঁছে বস্তার মুখ খুলতেই দেখা যায়, তার ভিতরে লাল ফুলহাতা জামা, কালো ট্রাউজ়ার্স পরা এক যুবকের দেহ! তাঁর বাঁ হাত মুঠো করে বুকের উপরে রাখা। তবে দেহের অন্য কোথাও কোনও আঘাতের চিহ্ন নেই। শনিবার ভোরে, হাওড়ার গোলাবাড়ির ঘটনা।
পুলিশ জানায়, মৃত ওই যুবকের পরিচয় জানা যায়নি। তবে বছর চল্লিশেক বয়সের ওই যুবককে কে বা কারা খুন করে বস্তায় দেহ ভরে ঘাটে ফেলে গেল, তা জানতে এলাকার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখার পাশাপাশি স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গেও কথা বলছেন হাওড়া সিটি পুলিশের তদন্তকারীরা। ডেপুটি কমিশনার (উত্তর) অনুপম সিংহ বলেন, ‘‘অন্য কোথাও খুন করে এখানে এনে ফেলা হয়েছে কিংবা দেহটি গঙ্গায় ভেসে এসেছে কি না, এখনও জানা যায়নি। বাইকটি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। সব দিকই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, গোলাবাড়ির চাউলপট্টি ঘাটের পাশেই রয়েছে একটি মন্দির। সেখানকার পুরোহিত সুরেশ পণ্ডা এ দিন ভোর ৪টে নাগাদ গঙ্গায় স্নান করতে যাওয়ার সময়ে ঘাটে বস্তাটি পড়ে থাকতে দেখেন। সন্দেহ হওয়ায় প্রথমে তিনি স্থানীয়দের ডেকে আনেন। তার পরে তাঁরাই খবর দেন পুলিশে। স্থানীয় বাসিন্দা প্রণব নন্দী বলেন, ‘‘ভোরে গঙ্গার ঘাটে বস্তা এল কী ভাবে, সেটা নিয়ে আমাদেরও সন্দেহ হয়েছিল। তার পরে পাশে দাঁড় করানো বাইকটি কার, সেটাও বোঝা যাচ্ছিল না। হতে পারে রাতের অন্ধকারে কেউ এসে ওই বস্তা ফেলে গিয়েছে।’’
পুলিশ এসে বস্তা থেকে দেহ উদ্ধারের পরেই পাশে দাঁড় করানো মোটরবাইকটি নিয়েও সন্দেহ তৈরি হয় তদন্তকারীদের। নম্বর প্লেটহীন ওই গাড়িটি কার, সেই খোঁজ শুরু হয়। কিন্তু মালিকের সন্ধান না মেলায় শেষে মোটরবাইকটি নিয়ে যায় পুলিশ। তদন্তকারীদের অনুমান, দেহটি খুব বেশি দিনের পুরনো নয়। সম্ভবত দুই-এক দিন আগেই খুন করা হয়েছে ওই যুবককে। এ দিন দেহ উদ্ধারের পরে তাই প্রশ্ন উঠছে, দেহটি গঙ্গায় ভেসে এলে তাতে পচন ধরল না কেন? জোয়ারে ভেসে এলেও চড়ায় আটকে না গিয়ে গঙ্গার ঘাটে বস্তাটি এল কী ভাবে? এই সব প্রশ্নের উত্তরই এখন খুঁজছেন তদন্তকারীরা। ওই যুবকের পরিচয় জানতে তার ছবি আশপাশের সমস্ত থানায় পাঠানো হয়েছে।