বন্ধ ওভারব্রিজ, ক্যান্টনমেন্ট স্টেশনে হয়রানি

বছরখানেক আগে বারুইপুর স্টেশনে ওভারব্রিজের চাঙড় ভেঙে মৃত্যু হয় এক যাত্রীর। তার পরেই বিভিন্ন স্টেশনে ওভারব্রিজগুলির স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও মেরামতিতে নামে রেল।

Advertisement

অরুণাক্ষ ভট্টাচার্য

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৩:৫২
Share:

জরাজীর্ণ: স্টেশনের সেই ওভারব্রিজ। ছবি: সজলকুমার চট্টোপাধ্যায়

রেলের খাতায় গুরুত্বপূর্ণ ‘মডেল’ স্টেশন। প্রতিদিন সেখান দিয়ে বিভিন্ন প্রান্তে ছুটছে শতাধিক ট্রেন। হাজার-হাজার যাত্রী দিনভর ওঠানামা করছেন স্টেশনে। অথচ, প্ল্যাটফর্ম পারাপারের জন্য রয়েছে একটি মাত্র ওভারব্রিজ। সেটিও বন্ধ গত ১৫ দিন ধরে! কারণ, জীর্ণ ওভারব্রিজটি মেরামত করছে রেল। এর জেরে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা। সবচেয়ে সমস্যা হচ্ছে মহিলা এবং বয়স্কদের ক্ষেত্রে। প্রায় হামাগুড়ি দিয়ে লাইনে নেমে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এক প্ল্যাটফর্ম থেকে অন্য প্ল্যাটফর্মে যেতে হচ্ছে তাঁদের। এটাই রোজকার ছবি শিয়ালদহ শাখার দমদম ক্যান্টনমেন্ট স্টেশনের।

Advertisement

বছরখানেক আগে বারুইপুর স্টেশনে ওভারব্রিজের চাঙড় ভেঙে মৃত্যু হয় এক যাত্রীর। তার পরেই বিভিন্ন স্টেশনে ওভারব্রিজগুলির স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও মেরামতিতে নামে রেল। পূর্ব রেল সূত্রের খবর, দিন পনেরো আগে দমদম ক্যান্টনমেন্ট স্টেশনে একমাত্র ওভারব্রিজটি সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে। তার পর থেকেই ভোগান্তির অন্ত নেই যাত্রীদের।

রেলের অবশ্য যুক্তি, কাজের জন্য সাময়িক এই ভোগান্তি মেনে নিতে হবে। এই যুক্তি মানতে নারাজ যাত্রীরা। তাঁদের দাবি, এমন গুরুত্বপূর্ণ একটি স্টেশনে কয়েক হাজার যাত্রীর কথা ভেবে একটি ওভারব্রিজ তৈরি করে তো পুরনোটি মেরামত করা যেত। দমদম ক্যান্টনমেন্টের স্টেশন ম্যানেজার গোবিন্দ কাঞ্জিলাল বলেন, ‘‘সমস্যা, ভোগান্তি হচ্ছে এ কথা ঠিক। তবে ওভারব্রিজ সারাতে এটুকু ভোগান্তি তো স্বীকার করতে হবে।’’

Advertisement

অফিসের সময়ে ওই স্টেশনে গিয়ে দেখা গেল, প্ল্যাটফর্ম থেকে প্রায় হামাগুড়ি দিয়ে লাইনে নেমে দু’নম্বর থেকে এক নম্বরে ট্রেন ধরতে যাচ্ছেন কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী মৌসুমী মিত্রের মতো অনেকে। কেন এমন ঝুঁকি নেওয়া? মৌসুমী বলেন, ‘‘প্ল্যাটফর্মের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত ঘুরে যেতে হলে ট্রেন ধরতে পারি না। রাতে প্ল্যাটফর্মের শেষ মাথা ঘুরে ফিরতে হয়। সেখানে এতটুকু আলো নেই। অন্ধকার রাস্তায় রীতিমতো ভয় করে।’’ সূর্য চক্রবর্তী নামে এক নিত্যযাত্রী বলেন, ‘‘যাঁরা সুভাষনগরের দিক থেকে দমদম বা শিয়ালদহ যেতে চান, তাঁদের ২ এবং ৩ নম্বর রেললাইন পেরিয়ে আসতে হয়। আগে বিকল্প ব্যবস্থা করে ওভারব্রিজ সংস্কারের কথা ভাবা উচিত ছিল রেলের।’’

ডিরোজিও কলেজের শিক্ষক সৈকত মণ্ডলের অভিযোগ, ‘‘এত গুরুত্বপূর্ণ একটা স্টেশন, অথচ টিকিট কাউন্টার রয়েছে শুধু এক নম্বর প্ল্যাটফর্মে। ফলে টিকিট কাটার জন্য দুই এবং তিন নম্বর প্ল্যাটফর্মের যাত্রীদের কষ্ট করে লাইন পেরিয়ে এক নম্বরে এসে ফের ফিরে গিয়ে ট্রেন ধরতে হয়।’’ আর এক যাত্রী রাখি বড়ুয়ার ক্ষোভ, ‘‘কত দিন এ ভাবে লাইন পারাপার করা যায়? অন্তত একটা আন্ডারপাসও তো করতে পারত রেল।’’

স্টেশন ম্যানেজার অবশ্য সমস্ত অভিযোগ গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখা হবে বলেই দায় সেরেছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement