Cycle

নয়া নির্দেশিকা নেই, সাইকেলে ছাড় নিয়ে জল্পনা

২০০৮ সালে প্রথম শহরের ৩৮টি রাস্তায় সাইকেল চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়। পরে সেই রাস্তার সংখ্যা বেড়ে হয় ১৭৪।

Advertisement

নীলোৎপল বিশ্বাস

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০২০ ০৩:২৫
Share:

ছবি: সংগৃহীত।

লোকাল ট্রেন এবং মেট্রো চালু হওয়ার পরে শহরের গতি ফিরেছে অনেকটাই। সম্প্রতি যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে নতুন মাঝেরহাট সেতুও। এই পরিস্থিতিতে করোনা-কালে ছাড় থাকা সাইকেল-যাত্রার কী হবে, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। আনলক-পর্বে লালবাজারের তরফে প্রতি মাসে নির্দেশিকা প্রকাশ করে সাইকেল-যাত্রায় ছাড়ের কথা ঘোষণা করা হলেও চলতি মাসে তা করা হয়নি। যার সূত্রে সাইকেল আরোহীদের একটা বড় অংশ প্রশ্ন তুলছেন, খোদ মুখ্যমন্ত্রী যে ছাড়ের কথা ঘোষণা করেছিলেন, তা উঠে গিয়ে কি আগের মতোই জরিমানা দিতে হবে? পুলিশের তরফে অবশ্য এর স্পষ্ট উত্তর মেলেনি।

Advertisement

২০০৮ সালে প্রথম শহরের ৩৮টি রাস্তায় সাইকেল চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়। পরে সেই রাস্তার সংখ্যা বেড়ে হয় ১৭৪। এই সিদ্ধান্তে সমালোচিত হয়ে ২০১৩ সালে এক সংশোধনীতে ৬২টি রাস্তা বাদ দিয়ে বাকি ১১২টি রাস্তায় সাইকেল চালানোর অনুমতি দেয় কলকাতা পুলিশ। ২০১৮ সালে আরও আটটি রাস্তায় সাইকেল নিষিদ্ধ হয়। করোনার আগে শহরের প্রায় ৬০টি রাস্তায় সাইকেল নিষিদ্ধ ছিল। ওই রাস্তায় সাইকেল চালাতে গিয়ে ধরা পড়লে ১০০ টাকা জরিমানা হত। বাজেয়াপ্ত হত সাইকেলটিও।

আনলক-পর্বে ছোঁয়াচ বাঁচিয়ে গন্তব্যে যাওয়ার চেষ্টায় লাফিয়ে বাড়তে থাকে সাইকেলের ব্যবহার। এরই মধ্যে গত ৩ জুন ‘বিশ্ব সাইকেল দিবসে’ এই যান ব্যবহারের সুফল নিয়ে টুইট করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পর থেকেই প্রতি মাসে সাইকেলে ছাড়ের কথা ঘোষণা করে নির্দেশিকা প্রকাশ করতেন পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা। যদিও এ বার তা করা হয়নি।

Advertisement

তবে কি ছাড় উঠে গেল?

ডিসি (ট্র্যাফিক) রূপেশ কুমার শুধু জানিয়েছেন, এ বার নয়া নির্দেশিকা প্রকাশ করা হচ্ছে না। যদিও বিভিন্ন ট্র্যাফিক গার্ড সূত্রের খবর, চলতি মাস থেকে সব বড় রাস্তায় সাইকেল নিষিদ্ধ করা হচ্ছে। ফলে বাইপাস, চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ, রেড রোড, ক্যামাক স্ট্রিট, হাওড়া সেতু, শেক্সপিয়র সরণি, পার্ক স্ট্রিট, লেনিন সরণি, শিয়ালদহ উড়ালপুল, বেলেঘাটা মেন রোডের মতো রাস্তায় সাইকেল আরোহীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারবে পুলিশ।

যদিও এর পরেও সমস্যা যাচ্ছে না। কারণ সাইকেল যে হেতু মোটরচালিত যান নয়, তাই সাইকেল আরোহীদের বিরুদ্ধে মোটরযান আইনে ব্যবস্থা নেওয়া যায় না। এ ক্ষেত্রে পুলিশের সম্বল কলকাতা পুলিশ আইনে ১০০ টাকা জরিমানা। যদিও যাঁরা সাইকেলের মতো পরিবেশবান্ধব যানের ব্যবহার বাড়ানোর পক্ষে, তাঁদের অভিযোগ, এই আইন অন্যায্য ভাবে চাপানো হয়। ফলে সাইকেল আরোহীদের সচেতন করার উপরেই জোর দিচ্ছে ট্র্যাফিক গার্ডগুলি।

কলকাতা পুলিশের এক আধিকারিকের দাবি, “ট্রেন চালু হওয়ায় শহরতলির লোকেদের সাইকেল করে কর্মস্থলে আসা কমে গিয়েছে। অতি সম্প্রতি নতুন মাঝেরহাট সেতুও খুলে যাওয়ায় বেহালার লোকজনেরও বাসে যাতায়াতের সমস্যা নেই। তা ছাড়া, শীতে দুর্ঘটনা বাড়ে। সাইকেল যেন সেই দুর্ঘটনা বাড়ার কারণ না হয়, সেটাই দেখা হবে।”সাইকেল নিষিদ্ধ হচ্ছে কি না, সেই ধোঁয়াশা রেখেই ওই পুলিশকর্তা বলেন, “নয়া নির্দেশিকা প্রকাশ হয়নি। সাইকেল বড় রাস্তায় না এলেই সমস্যা নেই।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement