Pollution

ধোঁয়ার দূষণের জেরে বিপন্ন ‘জীবনের অধিকার’

যদিও সংশ্লিষ্ট মামলার পরিপ্রেক্ষিতে পরিবেশ আদালতের বক্তব্য, বিএস ৪ মাপকাঠির নীচেও অনেক গাড়িই বর্তমানে কলকাতা ও হাওড়ায় চলছে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট গণপরিবহণ ব্যবস্থা ধাপে ধাপে বাতিল করতে হবে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০২০ ০৩:০২
Share:

—প্রতীকী ছবি।

পুরনো বাণিজ্যিক গাড়ি ধাপে ধাপে বাতিল করার ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের তরফে আন্তরিক কোনও প্রচেষ্টা নজরে পড়েনি। কাজের বিলম্বের জন্য রাজ্য সরকার গঠিত কমিটি সাম্প্রতিক কোভিড ১৯ পরিস্থিতির কথা জানিয়েছে। কিন্তু সেই সব কথা শোনা হবে না। এ বিষয়ে কাজ কত দূর এগিয়েছে, সে সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট কমিটিকে আগামী তিন মাসের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে হবে। বায়ুদূষণ সংক্রান্ত মামলায় সম্প্রতি রাজ্যকে এমনই নির্দেশ দিল জাতীয় পরিবেশ আদালত।

Advertisement

আদালত আরও জানিয়েছে, বায়ুদূষণের মাপকাঠিতে দেশের যে ১২২টি শহর (নন অ্যাটেনমেন্ট সিটিজ়) রয়েছে, তার মধ্যে কলকাতা এবং হাওড়াও পড়ে। ফলে সেই দিক থেকেও রাজ্যকে এই বিষয়ে অগ্রণী ভূমিকা নিতে হবে। এমনিতেই বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘদিন টালবাহানা চলছে বলে জানাচ্ছেন পরিবেশবিদেরা। এই বিষয়ে পরিবেশ আদালতের একাধিক নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও ১৫ বছরের পুরনো বাণিজ্যিক গাড়ি এখনও দিব্যি শহরে চলছে। অথচ বায়ুদূষণের উৎস খুঁজতে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ পরিবেশ আদালতের নির্দেশে ‘ন্যাশনাল এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং রিসার্চ ইনস্টিটিউট’-কে (নিরি) নিয়োগ করেছিল। নিরি-র রিপোর্টে দেখা গিয়েছে, কলকাতা ও হাওড়ায় বাতাসে ভাসমান ধূলিকণার (পিএম ১০) ও অতি সূক্ষ্ম ধূলিকণার (পিএম ২.৫) অন্যতম প্রধান উৎসই হল যানবাহনের ধোঁয়া (২২ শতাংশ)। মামলার আবেদনকারী সুভাষ দত্তের দাবি, ‘‘শুধুমাত্র শহরেই কমপক্ষে ১৫-১৬ লক্ষ পুরনো গাড়ি চলছে। সারা রাজ্যে সে সংখ্যাটা এক কোটিও হতে পারে। আদালতের একাধিক নির্দেশের পরেও রাজ্যের তরফে এ বিষয়ে কোনও উদ্যোগই দেখা যায়নি।’’

তবে শুধু পুরনো বাণিজ্যিক গাড়িই নয়, ভারত স্টেজ ৪ (বিএস ৪) দূষণ মাপকাঠি মেনে তৈরি হওয়া যাবতীয় বাণিজ্যিক ও ব্যক্তিগত মালিকানাধীন গাড়ি ধাপে ধাপে বাতিলের জন্যও রাজ্যকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। প্রসঙ্গত, দূষণ কমাতে গাড়ির ধোঁয়া নির্গমন সংক্রান্ত কঠিন বিধি রয়েছে সারা বিশ্বেই। ভারতে গাড়ির ধোঁয়া থেকে বায়ুদূষণ মাপার মাপকাঠি হল ‘ভারত স্টেজ’ (বিএস)। ২০০০ সালে শূন্য থেকে শুরু করে ধাপে ধাপে বেড়েছে এই মাপকাঠি। ২০১০ সালের ১ এপ্রিল থেকে দেশের ১৩টি শহরে বিএস ৪ বিধি চালু হয়। ২০১৭ সালের এপ্রিল থেকে দেশে সব ধরনের গাড়ির জন্যই তা চালু হয়েছে।

Advertisement

যদিও সংশ্লিষ্ট মামলার পরিপ্রেক্ষিতে পরিবেশ আদালতের বক্তব্য, বিএস ৪ মাপকাঠির নীচেও অনেক গাড়িই বর্তমানে কলকাতা ও হাওড়ায় চলছে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট গণপরিবহণ ব্যবস্থা ধাপে ধাপে বাতিল করতে হবে। তার পরে এমন একটা পরিস্থিতি তৈরি করতে হবে যাতে প্রথমে কলকাতা ও হাওড়া এবং পরবর্তীকালে, রাজ্যের অন্যত্র শুধুমাত্র বিএস ৬ মাপকাঠির গাড়িই (যে মাপকাঠিতে গাড়ির দূষণ আরও কম হবে) রাস্তায় চলে। আদালত জানিয়েছে, তা না হলে সংবিধানের ২১ নম্বর ধারাকেই (জীবনের অধিকার) লঙ্ঘিত করা হয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement