চক্ররেলের লাইনের পোস্টের উপর ভেঙে পড়েছে ক্রেন।—নিজস্ব চিত্র।
বি বা দী বাগে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর নির্মীয়মাণ স্টেশনে বুধবার কংক্রিটের চাঙড় খসে এক শ্রমিকের মৃত্যুর পরে শুক্রবার বিকেলে দুর্ঘটনা চক্ররেলে। এ দিন বন্দর এলাকায় সুইং ব্রিজের কাছে হুড়মুড় করে একটি ক্রেন ভেঙে পড়ায় চক্ররেলে ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয়। আহত হন দু’জন ট্রেনযাত্রী।
এ দিনের দুর্ঘটনায় চক্ররেলের ওভারহেড তারের একটি স্তম্ভ দুমড়ে গিয়ে লোকাল ট্রেনের একটি কামরার উপরে এসে পড়ে। তবে সেই সময় ট্রেনের গতিবেগ খুব কম থাকায় বেশি যাত্রীর আঘাত লাগেনি। ওভারহেড তার ছিঁড়ে যাওয়ায় রাত পর্যন্ত মাঝেরহাট থেকে বি বা দী বাগের মধ্যে চক্ররেলে ট্রেন চালানো যায়নি। পরে বি বা দী বাগ এবং কলকাতা স্টেশনের মধ্যে ট্রেন চলাচল শুরু হয়।
রেল সূত্রের খবর, এ দিন বিকেল ৫টা ৪৫ মিনিট নাগাদ মাঝেরহাট-হাবড়া লোকাল খিদিরপুর স্টেশন থেকে ছেড়ে প্রিন্সেপ ঘাটের দিকে আসছিল। কলকাতা বন্দর এলাকায় সুইং ব্রিজের কাছে ট্রেনটি মাটির উপরে থাকা উড়ালপথ (ভায়াডাক্ট) ধরে আসার সময় একটি ক্রেনের ভারবাহী অংশ আচমকা ভেঙে পড়ে। ট্রেনের ওভারহেড তারের স্তম্ভের উপরে ওই অংশটি ভেঙে পড়ায় তা কার্যত দুমড়ে যায়। স্তম্ভের আঘাতে ভেঙে যায় ট্রেনের কয়েকটি জানলা। কিছু পরে ট্রেনটি থেমে যায়। ওই দুর্ঘটনায় দু’জন যাত্রীর অল্পবিস্তর আঘাত লাগে। পুলিশ দু’জনকেই হাসপাতালে নিয়ে যায়।
দুর্ঘটনার সময় ট্রেনের গতিবেগ খুব কম থাকায় বিপত্তি এড়ানো গিয়েছে বলে রেলের খবর। তবে বন্দরের ঠিকাদার সংস্থার ক্রেন কেন এ ভাবে আচমকা হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ল, সেই প্রশ্ন উঠছে সংশ্লিষ্ট মহলে। দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত লোকাল ট্রেনটিকে রাত পর্যন্ত সরিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি। পূর্ব রেলের শিয়ালদহ ডিভিশনের রেলওয়ে ম্যানেজার প্রভাস দানসানা পরে ঘটনাস্থলে যান। তিনি বলেন, ‘‘কী ভাবে এমন দুর্ঘটনা ঘটল, সেই কারণ খুঁজতে রেলের পক্ষ থেকে তদন্ত করা হবে।’’
বন্দরের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সঞ্জয় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বন্দরের এলাকার মধ্যে একটি বেসরকারি সংস্থার ক্রেনের সাহায্যে মালপত্র ওঠানো-নামানো হচ্ছিল। সেই সময় চক্ররেলের লাইনে ক্রেনের একাংশ ভেঙে পড়ায় ওভারহেড তারের একটি বৈদ্যুতিক স্তম্ভ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পুরো ঘটনার তদন্ত করবে ডক সেফটি কমিটি। তদন্তে গাফিলতি প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্ট সংস্থার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’