বেলেঘাটা ও বেহালা

থানার ভূমিকা খতিয়ে দেখছে লালবাজার

তৃণমূলের সমর্থকদের হাতে মার খাওয়ার পরে থানায় গিয়েছিলেন অভিযোগ দায়ের করতে। এফআইআর করার পরে সিপিএম সমর্থক ওই অভিযোগকারীকেই তৃণমূলের দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে থানার ভিতরে থেকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ।

Advertisement

শিবাজী দে সরকার

শেষ আপডেট: ১৮ মে ২০১৬ ০০:৪০
Share:

তৃণমূলের সমর্থকদের হাতে মার খাওয়ার পরে থানায় গিয়েছিলেন অভিযোগ দায়ের করতে। এফআইআর করার পরে সিপিএম সমর্থক ওই অভিযোগকারীকেই তৃণমূলের দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে থানার ভিতরে থেকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। সিপিএমের ওই কর্মীকে নিয়ম মেনে গ্রেফতার করা হয়েছিল কি না, তা জানতে অনুসন্ধান শুরু করল লালবাজার। এর পাশাপাশিই বেহালায় প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক কুমকুম চক্রবর্তীর ঘটনায় পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ উঠেছিল। তার তদন্তভারও গোয়েন্দাদের হাতে দেওয়ার বিষয়ে ভাবনাচিন্তা চলছে বলে লালবাজারের একাংশের সূত্রে খবর।

Advertisement

পুলিশ সূত্রে খবর, বেলেঘাটা থানার অতি সক্রিয়তার বিরুদ্ধে ডেপুটি কমিশনারের (ইএসডি) কাছে ওই অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল সিপিএমের তরফে। তার ভিত্তিতেই এক অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন। চলতি সপ্তাহেই ওই রিপোর্ট জমা পড়ার কথা। ধৃত সুশান্ত দে-র পুলিশ হেফাজত হয়েছিল। মঙ্গলবার তাঁর আইনজীবী ইয়াসিন রহমান বলেন, ‘‘সুশান্তবাবুকে আজ অন্তবর্তী জামিন দেওয়া হল। পরবর্তী হাজিরা ৩০ মে।’’

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার রাতে বেলেঘাটার নবাব বাগানে সিপিএম কর্মী সুশান্ত দে-র বাড়িতে তাঁকে মারধর করে দুষ্কৃতীরা। প্রহৃত হয় তাঁর প্রতিবন্ধী ছেলেও। পুলিশের একাংশের দাবি, ঘটনায় তৃণমূলের কয়েক জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাতে গেলে বেলেঘাটা থানা উল্টে সুশান্তবাবুকেই গ্রেফতার করে। পুলিশের শীর্ষ মহলে অভিযোগ দায়ের করে সিপিএম দাবি করে, সুশান্ত দে-র গ্রেফতার যথাযথ নয়। তাঁকে মিথ্যা অভিযোগে ধরা হয়েছে। গোটা ঘটনাটি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেয় লালবাজার।

Advertisement

যদিও পুলিশের একাংশ জানায়, তৃণমূলের দাবি, বৃহস্পতিবার সুশান্তবাবু আগে তৃণমূল সমর্থক গৌতম দাস ওরফে বুড়োকে মেরে হাত ভেঙে দেন। তাঁদের ব্যাখ্যা, এফআইআর রুজু করতে বৃহস্পতিবার সুশান্তবাবুকে ডাক্তারি পরীক্ষা করিয়ে আসতে বলা হয়। সে দিন আসেননি তিনি। ইতিমধ্যে গৌতমবাবু হাত ভাঙার ডাক্তারি পরীক্ষা করিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন। তাই শুক্রবার সুশান্তবাবু ডাক্তারি পরীক্ষার নথি নিয়ে এলে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। সুশান্তবাবুর এফআইআর-এ নাম থাকা চার তৃণমূল কর্মীকেও গ্রেফতার করা হয়েছে বলে দাবি পুলিশের।

তবে বেহালায় সিপিএমের প্রাক্তন বিধায়ক কুমকুম চক্রবর্তীর বাড়িতে বোমাবাজিতে অভিযুক্ত তৃণমূল-আশ্রিত দুষ্কৃতীদের ধরতে পারেনি পুলিশ। পুলিশের নিচুতলার একাংশের দাবি, স্থানীয় থানার বদান্যতায় এমন ঘটেছে। বেহালায় সিপিএম এজেন্টের বাড়িতে গুলির ঘটনায় তদন্তভার দিতে হয় গুন্ডাদমন শাখাকে। পরে পুরী থেকে দুই অভিযুক্ত ধরা পড়ে। তাদের সঙ্গে শাসক দল ও পুলিশের একাংশের যোগাযোগের প্রমাণ মেলে।

লালবাজারের একাংশের দাবি, প্রাক্তন বিধায়কের বাড়িতে হামলার ঘটনায় স্থানীয় থানার নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ ওঠায় তদন্তভার গোয়েন্দাদের দেওয়ার ভাবনা চলছে। পাটুলিতে ভোট পরবর্তী সংঘর্ষে শাসক দলের অভিযুক্ত ১৬ জন আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন পাওয়ার পরে বাকিদের ধরতে পুলিশ উদ্যোগী নয় বলেও অভিযোগ উঠেছে। ঘটনায় পুলিশকর্তাদের নিগ্রহের অভিযোগও ওঠে। তাতেও অভিযুক্তদের চিহ্নিতই করতে পারেননি তদন্তকারীরা। পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘বেহালা ও পাটুলি থানাকে বলা হয়েছে অভিযুক্তদের চিহ্নিত করে গ্রেফতার করতে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement