COVID 19

কোভিড হলে যাব কোথায়, দিশাহারা বিধাননগর

সল্টলেকে এই সময়ে কোনও জনপ্রতিনিধি নেই।

Advertisement

কাজল গুপ্ত

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০২১ ০৫:১০
Share:

প্রতীকী ছবি।

হাসপাতালে শয্যা নেই। তাই ডাক্তারের পরামর্শ মতো বাড়িতেই চলছে চিকিৎসা। উপরন্তু, অক্সিজেন পেতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। রীতিমতো আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছে বিধাননগরের বাসিন্দাদের মধ্যে। তাঁদের বক্তব্য, কোনও কোনও ক্ষেত্রে বিদায়ী কাউন্সিলর কিংবা বিদায়ী বিধায়ক ব্যক্তিগত উদ্যোগে পাশে দাঁড়ালেও প্রশাসনের সহযোগিতা কী ভাবে পাওয়া যাবে, তা স্পষ্ট হচ্ছে না। এই অভিযোগ অবশ্য মানতে নারাজ বিধাননগর পুরসভা। তাদের দাবি, সাধ্যমতো সহযোগিতা করার চেষ্টা চলছে।

Advertisement

বাস্তবের ছবিটা কিন্তু অন্য কথাই বলছে। সম্প্রতি করোনায় আক্রান্ত খোদ বিধাননগর পুরসভার এক বিদায়ী কাউন্সিলরকে অনেক চেষ্টার পরে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা গিয়েছে। তিনি জানান, কোথাও জায়গা পাওয়া যাচ্ছিল না। এই অভিজ্ঞতা শুধু এক জনের নয়, অনেকেরই হয়েছে। বিধাননগরে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। পুরসভা সূত্রের খবর, গত ২৪ ঘণ্টায় সেখানে আক্রান্ত হয়েছেন ৫০০ জন। অ্যাক্টিভ কেসের সংখ্যা তিন হাজার ছুঁইছুঁই।

বিধাননগরের ৩০ নম্বর ওয়ার্ডে শতাধিক বাসিন্দা করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন বিদায়ী কাউন্সিলর অনিতা মণ্ডল। সমস্যার কথা স্বীকার করে তিনিও জানিয়েছেন যে, সরকারি হাসপাতালে জায়গা মিলছে না। তবে চেষ্টা করা হচ্ছে। এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘বিদায়ী কাউন্সিলরের চেষ্টা সত্ত্বেও সরকারি হাসপাতালে জায়গা মিলছে না। কোনও মতে একটি বেসরকারি হাসপাতালে জায়গা মিলেছে। গোটা বিধাননগর পুর এলাকা এবং পার্শ্বস্থ বিভিন্ন জায়গাতেও ছবিটা এক।

Advertisement

বিধাননগরের ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডের ১৩ জন বাসিন্দা করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন সম্প্রতি। স্থানীয় প্রশাসনের বক্তব্য, বহু চেষ্টা করেও সরকারি হাসপাতালে জায়গা মিলছে না। সমস্যার কথা মেনে নিয়ে স্থানীয় ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডের বিদায়ী কাউন্সিলর নির্মল দত্ত বলেন, ‘‘সরকারি হাসপাতালে জায়গা মিলছে না। গরিব মানুষের পক্ষে বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হওয়া সম্ভব নয়। এলাকায় অন্তত একটি সেফ হোম চালু করা যায় কি না, সে ব্যাপারে পুরসভার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে।’’ বাড়িতেই চিকিৎসাধীন এক বাসিন্দা জানান, প্রয়োজন হলে অক্সিজেন কোথায় পাবেন, তা নিয়েই চিন্তিত তিনি।

সল্টলেকের এক বাসিন্দা কুমারশঙ্কর সাধু জানান, রোগীকে বাড়িতে রেখে কী ভাবে চিকিৎসা হবে, সেটাই বোঝা যাচ্ছে না। উপরন্তু সল্টলেকে এই সময়ে কোনও জনপ্রতিনিধি নেই। ফলে সব মিলিয়ে দিশাহারা অবস্থা।

যদিও বিদায়ী জনপ্রতিনিধিদের একাংশের বক্তব্য, মানবিকতার খাতিরেই তাঁরা সাধ্যমতো বাসিন্দাদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন। বিদায়ী দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু জানান, প্রশাসন সাধ্যমতো চেষ্টা করছে। ব্যক্তিগত ভাবে তিনিও সাধ্যমতো পাশে দাঁড়িয়েছেন।
বাসিন্দাদের বক্তব্য, সকলের পক্ষে স্থানীয় কাউন্সিলর বা এলাকার বিধায়কের সঙ্গে যোগাযোগ করা মুশকিল। সে ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষ পরিষেবা পাবেন কী ভাবে, তা নিশ্চিত করুক প্রশাসন।

কোভিড পরিস্থিতিতে দক্ষিণ দমদম, দমদম ও নিউ টাউনে সেফ হোম চালু হলেও বিধাননগরে এখনও তা হয়নি। সেখানকার এক পুরকর্তা জানান, সেফ হোম পরিকল্পনায় রয়েছে। সাধ্যমতো চেষ্টাও চলছে। নিউ টাউন এলাকার একটি সেফ হোম এখনও পুরো ভর্তি নয়। গত বছর সেফ হোম চালু করা হলেও খালি ছিল। ফলে চাহিদা অনুসারে পরিকল্পনা কার্যকর করার কথা ভাবা হচ্ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement