COVID-19

‘মাস্ক তো ব্যাগেই’, এমন প্রবণতাই বাড়াচ্ছে বিপদ

চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণ, করোনার নতুন স্ট্রেনে বেশি সংক্রমিত হচ্ছেন কমবয়সিরাই। কলকাতার বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে খোঁজ নিলেও সেই তথ্যই সামনে আসছে।

Advertisement

চন্দন বিশ্বাস

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০২১ ০৬:৩৯
Share:

ভয়ডরহীন: সংক্রমণ বাড়ায় বন্ধ করা হয়েছে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল। অথচ তার বাইরেই মাস্ক না পরে কমবয়সিদের নিজস্বী তোলার উন্মাদনা। শুক্রবার। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক

সচেতনতা বাড়াতে নেওয়া হয়েছে বিভিন্ন পন্থা। শহরের জায়গায় জায়গায় কলকাতা পুলিশের তরফে মাইকে প্রচার চালানো হচ্ছে। রাস্তায় বেরোলে বাধ্যতামূলক ভাবে মাস্ক পরা এবং ভিড় এড়ানোর কথা বার বার বলছেন চিকিৎসকেরা। কিন্তু যাঁদের উদ্দেশে এত কথা বলা, তাঁদেরই একাংশের ‘ডোন্ট কেয়ার’ মনোভাব আরও কঠিন করছে করোনার বিরুদ্ধে লড়াইকে। এমনটাই মনে করছেন শহরবাসীর একাংশ।

Advertisement

ভোল পাল্টে আরও ভয়াবহ রূপে দ্বিতীয় ঢেউ এসেছে অতিমারির। দেশে প্রতিদিন প্রায় দু’লক্ষের কাছাকাছি মানুষ নতুন করে সংক্রমিত হচ্ছেন। পিছিয়ে নেই বাংলাও। রোজই রেকর্ড ভাঙছে সেখানে। বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, এখনই ব্যবস্থা না নিলে এর পরে পরিস্থিতি পুরোপুরি হাতের বাইরে চলে যাবে।

চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণ, করোনার নতুন স্ট্রেনে বেশি সংক্রমিত হচ্ছেন কমবয়সিরাই। কলকাতার বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে খোঁজ নিলেও সেই তথ্যই সামনে আসছে। কিন্তু তার পরেও দোকান-বাজার, শপিং মল, বিভিন্ন জনবহুল স্থানে ঘুরে বেড়ানো তরুণ-তরুণীদের অধিকাংশের করোনা-বিধি মেনে চলার দিকে ভ্রূক্ষেপ নেই। প্রশ্ন করায় কেউ উত্তর দিচ্ছেন, ‘‘করোনা তো বয়স্ক মানুষদের জন্য ভয়ের।’’ কেউ আবার বলছেন, ‘‘স্যানিটাইজ়ার নিয়েই বেরিয়েছি। আর মাস্ক তো ব্যাগেই!’’

Advertisement

সব জেনেবুঝেও কমবয়সিদের কিছু না মেনে চলার এই প্রবণতা উদ্বেগ বাড়াচ্ছে চিকিৎসক মহলে। চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদারের কথায়, ‘‘করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে তুলনামূলক ভাবে কমবয়সিরাই বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। পরিসংখ্যান দিয়ে সেই তথ্য আপাতত উল্লেখ করা না গেলেও হাসপাতালগুলিতে তাঁদের ভিড় বাড়ছে। এর পরেও যদি আমরা সচেতন না হই, তা হলে করোনার বিরুদ্ধে লড়াই নাগালের বাইরে চলে যেতে বাধ্য।’’

নববর্ষের প্রথম দিন শহরের বিভিন্ন জায়গা ঘুরে দেখা গেল, বয়স্করা অনেকেই মাস্ক পরে বেরিয়েছেন। ব্যবহার করছেন স্যানিটাইজ়ারও। কিন্তু ঠিক উল্টো ছবি কমবয়সিদের মধ্যে। কালীঘাট মেট্রো স্টেশনের সামনে বান্ধবীকে নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন এক যুবক। দু’জনের মুখই খোলা। মাস্ক পরেননি কেন? যুবকের উত্তর, ‘‘বছরের প্রথম দিন বান্ধবীকে নিয়ে বেরিয়েছি। সারা বছরই তো মাস্ক পরি। একটা দিন না পরলে কিছু হবে না।’’

শহরের একটি শপিং মল থেকে বেরোনো তরুণীর আবার দাবি, ‘‘করোনা তো বয়স্কদের বেশি হয়, আমাদের অত নিয়ম না মানলেও চলবে।’’ তাঁর পাল্টা প্রশ্ন, ‘‘আর কত দিন বাড়িতে বন্দি হয়ে থাকব বলুন তো?’’

নাগরিকদের একাংশ বলছেন, এই বেলাগাম জনতাকে বাগে আনতে অবিলম্বে দরকার পুলিশি সক্রিয়তা। প্রয়োজন ব্যাপক ধরপাকড়। কিন্তু যেখানে এই তরুণ-তরুণীরা সব নিয়ম জেনেও তা না মেনে অবাধে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, সেখানে পুলিশের ধরপাকড় তাঁদের কতটা নিয়ম মানাতে পারবে, সেই প্রশ্ন কিন্তু রয়েই যাচ্ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement