প্রতীকী ছবি
এক দিকে মায়ের বকুনি সত্ত্বেও বাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন এক তরুণী। সে দিন তাঁর বাড়ির কিছুটা দূরের বাসিন্দা আর এক যুবকও পিকনিক থেকে হঠাৎ বেরিয়ে যান। শুক্রবার সারা রাত দু’জনেরই কোনও খোঁজ মেলেনি।
শনিবার সকালে দুই পরিবারই জানতে পারে, বাড়ি থেকে প্রায় চার কিলোমিটার দূরে রাস্তার ধারের নয়ানজুলিতে শুক্রবার রাতে উল্টে গিয়েছিল একটি গাড়ি। তারই ভিতরে উদ্ধার হয়েছে ওই যুবক ও তরুণীর মৃতদেহ। ঘটনাটি ঘটেছে ব্যারাকপুর-বারাসত রোডের শিউলি এলাকায়। পুলিশ জানায়, মৃত যুবকের নাম রাজিবুল ইসলাম (৩৩)। তিনি বারাসতের নীলগঞ্জ এলাকায় থাকতেন। আর নীলগঞ্জ বাজারের কাছে পশ্চিম সূর্যপুরের বাসিন্দা ওই তরুণীর নাম রূপা সাহা (২৫)।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ ব্যারাকপুরের দিক থেকে তীব্র গতিতে গাড়িটি বারাসতের দিকে আসছিল। আচমকাই সেটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশের নয়ানজুলিতে গিয়ে পড়ে। টিটাগড় থানার পুলিশ ও দমকল গিয়ে গাড়িটি উদ্ধার করলে চালকের পিছনের আসন থেকে রাজিবুল ও রূপাকে পাওয়া যায়। স্থানীয় লোকজনের দাবি, ঘটনার পরে এক যুবককে পাঁক মাখা অবস্থায় জল থেকে উঠে পালাতে দেখা গিয়েছিল। তবে তিনিই গাড়ির চালক কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
পুলিশ সূত্রের খবর, ফেসবুকের মাধ্যমে মাস চারেক আগে রাজিবুলের সঙ্গে পরিচয় হয় রূপার। বছর সাতেক আগে এলাকারই এক যুবকের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল রূপার। কিন্তু দু’বছর আগে বিবাহ-বিচ্ছেদ হয়ে যায় তাঁর। এর পরে পাঁচ বছরের ছেলেকে নিয়ে পশ্চিম সূর্যপুরে মা-বাবার বাড়িতেই থাকতেন তিনি। শুক্রবার রাত ৮টা নাগাদ স্কুটার সারানোর জন্য বাড়ি থেকে বেরোনোর কথা বলতেই তরুণীকে বকাবকি করেছিলেন মা মিনতি সাহা। রূপার এক দিদি আলপনা গায়েন বললেন, ‘‘বকুনি খেয়ে রাগ করে বোন বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। সকালে খবর পাই, দেহ মিলেছে।’’
অন্য দিকে, রাজিবুলের পরিজনেরা পুলিশকে জানিয়েছেন, ওই যুবক বাড়ির কাছেই পিকনিক করতে গিয়েছিলেন। সেখান থেকেই বেরিয়ে যান রাজিবুল। প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান, ওই দু’জনে মিলে ব্যারাকপুরের দিকে কোথাও গিয়েছিলেন। সেখান থেকেই তাঁরা গাড়িতে ফিরছিলেন। দু’জনেই মত্ত অবস্থায় ছিলেন বলে দাবি তদন্তকারীদের। এক পুলিশকর্তা বলেন, ‘‘গাড়িটি কে চালাচ্ছিলেন, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। নয়ানজুলিতে উল্টে যাওয়ার পরে বোঝা মুশকিল, গাড়িতে কে কোথায় বসেছিলেন। সব দিকই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’