প্রতীকী ছবি।
কলকাতার যে সব এলাকায় করোনা-পজ়িটিভ রোগীর সন্ধান মিলছে, সে সব এলাকার এক কিলোমিটার অংশকে বিচ্ছিন্ন করে নজরদারি চালানো হোক— এমনই প্রস্তাব দিল কলকাতা পুলিশ ও প্রশাসন। শুক্রবার নবান্নে রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিংহের উপস্থিতিতে এক ভিডিয়ো-বৈঠক হয় কলকাতা-সহ সাতটি জেলার প্রশাসনিক ও পুলিশকর্তাদের। যোগ দেন কলকাতার পুর কমিশনার খলিল আহমেদ ও পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মাও।
পুরসভা জানাচ্ছে, করোনাভাইরাস যে হেতু মানুষ থেকে মানুষে সংক্রমিত হয়, তাই তা এ শহরে ছড়ালে বিপদ বাড়বে। সে কথা মাথায় রেখে করোনা প্রতিরোধে এখনই সতর্ক হতে পুর প্রশাসনকে নির্দেশ দেন মুখ্যসচিব। বৈঠকে কলকাতার বিষয়ে পুলিশ এবং প্রশাসনের তরফে একটি পরিকল্পনা পেশ করা হয়। তাতে বলা হয়, যে সমস্ত এলাকায় করোনা-পজ়িটিভ রোগী পাওয়া গিয়েছে, সেখানে নিয়মিত জীবাণুনাশক স্প্রে করা দরকার। ওই সমস্ত এলাকার বাসিন্দাদের সাময়িক ভাবে আইসোলেশনে রাখাও প্রয়োজন। বৈঠকে বলা হয়, ওই সব এলাকার বাজার-দোকানও বন্ধ রাখা দরকার। তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের যাতে খাদ্যসামগ্রী পেতে কোনও অসুবিধা না হয়, তা নিশ্চিত করেই যা ব্যবস্থা নেওয়ার নিতে হবে। চিহ্নিত করা এলাকার সীমানায় খাদ্যসামগ্রীর গাড়ি নিয়মিত যাবে এবং সেখান থেকেই বাসিন্দারা তা সংগ্রহ করতে পারবেন।
এ ছাড়া, বিভিন্ন এলাকার মানুষজন যাতে বাইরে বেরোলেই মাস্ক পরেন, তা-ও নিশ্চিত করতে হবে। এমনটাই বলা হয়েছে বৈঠকে। তখনই মুখ্যসচিব নির্দেশ দেন, করোনা মোকাবিলায় বাসিন্দাদের সুস্থ রাখতে পুলিশ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করবে ঠিকই, তবে তাদের মনে রাখতে হবে, বাড়াবাড়ি না-করে কড়াকড়ি করলেই চলবে।
আলোচনায় আরও একটি বিষয় উঠে আসে। তা হল, প্রথম দিকে করোনা সংক্রমণের ক্ষেত্রে বিদেশ-যোগ বেশি পাওয়া যাচ্ছিল। এখন বিমান, ট্রেন সবই বন্ধ। তা সত্ত্বেও কিছু পজ়িটিভ রোগীর সন্ধান মিলছে। এ জন্য বিভিন্ন হাসপাতাল ও বাজারে নজরদারি চালাতে বলা হয়েছে। লকডাউন ভেঙে ভিড় করা বন্ধ করতে প্রশাসনকে কড়া হওয়ার কথাও বলা হয় বৈঠকে।
হাসপাতাল, স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং চিকিৎসকদের দেওয়া তথ্য এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছ থেকে পাওয়া রিপোর্ট নিয়ে করোনা-প্রবণ জায়গাগুলি চিহ্নিত করা যেতে পারে। সেই কাজ দ্রুত শুরু করার কথা বলা হয় বৈঠকে।
কলকাতা পুর এলাকার ক্ষেত্রে ওয়ার্ড-ভিত্তিক স্থান বাছা হবে, না রাস্তা ধরে বিচ্ছিন্ন এলাকা চিহ্নিত করা হবে, তা নিয়ে ভাবনাচিন্তা চলছে। পুরসভা সূত্রের খবর, শহরের বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডে ইতিমধ্যেই করোনা-পজ়িটিভ রোগীর সন্ধান মিলেছে। সেখানে বাড়তি নজর দিতে বলা হয়েছে। সামাজিক দূরত্ব বজায় না রাখলে সংক্রমণ বাড়তে পারে। তাই যত দ্রুত জায়গা চিহ্নিতকরণের কাজ হবে, ততই মঙ্গল।