প্রতীকী ছবি।
বৃদ্ধা মায়ের পেনশন তোলার জন্য প্রতি মাসে মানিকতলার কাছে ব্যাঙ্কে আসতেন তিনি। কিন্তু পাটুলির বাসিন্দা করবী মিশ্র এ বার ভেবে পাচ্ছিলেন না, লকডাউনের মধ্যে কী ভাবে ব্যাঙ্কে এসে মা কুঞ্জবালা মিশ্রের পেনশন তুলবেন। ই-পাসের জন্য কলকাতা পুলিশের কাছে আবেদন জানালেও তা নাকচ হয়ে যায়। বাধ্য হয়ে করবীদেবী ইমেল করে রেখেছিলেন পুলিশকে।
বুধবার বিকেলে সেই ইমেল চোখে পড়ে পুলিশের। পাটুলি থানার কাছে খবর পৌঁছলে অফিসারেরা করবীদেবীর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করে জানতে চান, তিনি কী ভাবে ব্যাঙ্কে যাবেন। করবীদেবী জানান, স্থানীয় কারও কাছ থেকে গাড়ি ভাড়া করবেন। সেই মতো গাড়ির নম্বর জোগাড় করে রাখতে বলা হয়। বৃহস্পতিবার থানা থেকে রুটিনমাফিক যাচাই করতে অফিসারেরা করবীদেবীর বাড়ি যান। দেখা যায়, ৮০ বছরের কুঞ্জবালাদেবী শয্যাশায়ী। অফিসারেরা করবীদেবীকে জানান, তিনি যেন থানা থেকে পাস সংগ্রহ করে গাড়ি নিয়ে ব্যাঙ্কে চলে যান। কিন্তু এর মিনিট দশেকের মধ্যে থানায় খবর পৌঁছয়, মারা গিয়েছেন কুঞ্জবালাদেবী।
সেই খবর পেয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে যান থানার অফিসারেরা। অনেকেই আফশোস করতে থাকেন, আগেই পাসের ব্যবস্থা করে দিলে হয়তো পেনশনটা তুলে নিতে পারতেন করবীদেবী। পরে ফোনে ওই মহিলা বলেন, ‘‘মা পাঁচ বছর ধরে শয্যাশায়ী। এটিএম কার্ড বানাতে পারিনি। আমার দাদাও শয্যাশায়ী। তাই আমাকেই পেনশন তুলতে যেতে হত।’’
তবে পেনশন তোলার ব্যবস্থা না করতে পারলেও মায়ের শেষকৃত্যে যাতে সমস্যা না-হয়, তার জন্য পুলিশ তাঁকে খুবই সাহায্য করেছে বলে এ দিন জানিয়েছেন করবীদেবী। পুলিশের একটি সূত্র জানাচ্ছে, রোজ বিভিন্ন সাহায্য চেয়ে তাদের কাছে এমন কয়েকশো ইমেল জমা পড়ছে। সেগুলি পড়ে সমস্যা সমাধানের আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছেন শীর্ষ কর্তারা।