সতর্ক: করোনা আক্রান্ত পরিবারের সদস্যেরা বাইরে বেরোচ্ছেন, এই অভিযোগে ধর্না বাসিন্দাদের। শনিবার, ব্যারাকপুরের বড় কাঠালিয়ায়। নিজস্ব চিত্র
একই বাড়িতে তিন দফায় করোনা সংক্রমণ পাঁচ জনের। ফলে, মে মাসের শুরু থেকেই গৃহ-পর্যবেক্ষণে কাটাচ্ছে ব্যারাকপুর বড় কাঠালিয়ার গোটা একটি পাড়া। শুক্রবার রাতেই ফের একসঙ্গে আক্রান্ত হয়েছেন দু’জন।
প্রশাসনের তরফে ওই দিনই পাড়ার অন্তত ৫০টি পরিবারের সদস্যদের জানিয়ে দেওয়া হয়, আরও ১৪ দিন তাঁরা বাড়ি থেকে বেরোতে পারবেন না। এলাকার বাসিন্দারা এই খবরে প্রবল অসন্তোষ প্রকাশ করেন। আক্রান্তেরা কেন বাড়িতে থাকবেন ও তাঁদের বাড়ির লোকজনই বা কেন বাইরে বেরোচ্ছেন, এই প্রশ্ন তুলে শনিবার সকাল থেকে পাড়ার রাস্তায় ধর্নায় বসেন শ’খানেক বাসিন্দা। মাস্ক পরে, দূরত্ব-বিধি বজায় রেখে ধর্না চালিয়ে যান তাঁরা।
শেষ পর্যন্ত পুলিশ ও স্বাস্থ্য দফতরের কর্মীরা দুই আক্রান্তকে কোভিড হাসপাতালে নিয়ে যান। পাড়ার বাসিন্দাদের অভিযোগ, আক্রান্তদের পরিবারের লোকজন বাড়ি থেকে বেরিয়ে ঝুঁকি বাড়াচ্ছেন। তাঁরা এলাকায় পুলিশি নজরদারি বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন। পুলিশ জানায়, শনিবার থেকে নজরদারি বাড়ানো হচ্ছে।
মে মাসের প্রথম দিনেই করোনায় আক্রান্ত হন বড় কাঠালিয়ার এক ওষুধ ব্যবসায়ী। তখন থেকেই গোটা পাড়া গণ্ডিবদ্ধ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত হয়। প্রথম আক্রান্ত সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরার এক দিন আগে আক্রান্ত হয় ওই বাড়ির দুই শিশু। এক জন আড়াই এবং অন্য জন সাড়ে তিন বছরের। ফলে পাড়ার বাসিন্দাদের বন্দিদশা কাটেনি।
ওই শিশুরা সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরেনি এখনও। এরই মধ্যে শুক্রবার আক্রান্ত হন প্রথম আক্রান্তের এক ভাই ও পরিবারের আর এক সদস্য। শুক্রবার রাতে প্রশাসনের তরফে বিষয়টি জানানো হলে ক্ষোভে ফেটে পড়েন পাড়ার বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, আক্রান্তদের পরিবারের লোকেরা বাড়ি থেকে বেরোচ্ছেন। ঝুঁকি বাড়ছে তাঁদের। ওই পরিবারের সদস্য-সংখ্যা ২৩।
বাসিন্দারা দাবি জানান, ওই পরিবারের সকলকেই কোয়রান্টিন কেন্দ্রে পাঠাতে হবে। এরই মধ্যে আক্রান্তেরা বাড়িতে থেকে চিকিৎসা করানোর সিদ্ধান্ত নেওয়ায় ক্ষোভ বাড়ে। ধর্না শুরু হওয়ার পরে পুলিশ এসে কথা বললেও বাসিন্দারা রাস্তা থেকে ওঠেননি। শেষ পর্যন্ত দুপুরের দিকে আক্রান্তদের হাসপাতালে পাঠানো হয়। পুলিশ আক্রান্তদের পরিবারের লোকজনকে বাড়ি থেকে বেরোতে বারণ করেছে।