অসতর্ক: হাওড়া ময়দানে করোনা-বিধি ভঙ্গের দৃশ্য। এমন অসতর্কতাই সংক্রমণ বাড়াচ্ছে বলে মত প্রশাসনের। ফাইল চিত্র
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের হিসেব অনুযায়ী, হাওড়ায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ফের বাড়ছে। কিন্তু হাওড়ার কোভিড হাসপাতালগুলিতে রোগী ভর্তির সংখ্যা ক্রমাগত কমে যাচ্ছে। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, বর্তমানে হাওড়া জেলার আটটি কোভিড হাসপাতালে মোট শয্যার মাত্র ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ ভর্তি রয়েছে। বাকি ৭০ শতাংশ ফাঁকাই পড়ে আছে। এমনকি, এক-এক সময়ে একটি হাসপাতালে মাত্র দু’-তিন জন রোগী ভর্তি থাকছেন, এমন ঘটনাও ঘটছে।
এর কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, এখন করোনার উপসর্গযুক্ত পজ়িটিভ রোগীর সংখ্যা হু হু করে বাড়ছে। কিন্তু আক্রান্তদের অধিকাংশই কোভিড হাসপাতালে ভর্তি না হয়ে বাড়িতে থেকে চিকিৎসা করাচ্ছেন। সুস্থতার হারও প্রায় ৯০ শতাংশ ছুঁয়ে ফেলেছে।
রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের হিসেবে, হাওড়ায় করোনা সংক্রমণের হার ধীরে ধীরে কমছিল। কিন্তু সম্প্রতি সেই সংখ্যা বাড়তে থাকায় ফের উদ্বেগ দেখা দিয়েছে চিকিৎসক মহলে। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা জানান, সেপ্টেম্বরের প্রথম দিকে দৈনিক সংক্রমণের সংখ্যা যেখানে একশোর নীচে নেমে এসেছিল, সেই সংখ্যা বর্তমানে ফের দুশোর কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছে। এই সংখ্যা আরও বাড়বে বলে মনে হয়।
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের ওই কর্তা বলেন, ‘‘বর্তমানে সংক্রমণের হার ফের বাড়লেও রোগীরা হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন না। অধিকাংশ হাসপাতালেই ৬৫-৭০ শতাংশ শয্যা ফাঁকা রয়েছে। লোকজন এখন বাড়িতে থেকেই চিকিৎসা করাচ্ছেন।’’রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের দেওয়া সাম্প্রতিক তথ্য থেকে জানা যাচ্ছে, মোট ১৩০০টি শয্যার মধ্যে বালিটিকুরি ইএসআই হাসপাতাল, উলুবেড়িয়া ইএসআই হাসপাতাল, সঞ্জীবন হাসপাতাল, আইএলএস গোলাবাড়ি হাসপাতাল, নারায়ণা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল, সত্যবালা আইডি হাসপাতাল, টি এল জয়সওয়াল হাসপাতাল ও বালিটিকুরি কোভিড হাসপাতালে মোট প্রায় ৫০০ জন রোগী ভর্তি রয়েছেন।
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের বক্তব্য, বর্তমানে কোভিড নিয়ে মানুষের ভয় অনেকটাই কমে গিয়েছে। রাস্তাঘাটেও বহু মানুষ মাস্ক না পরে বেরোচ্ছেন। হাওড়া ময়দানের মতো জনবহুল জায়গায় এমন ছবি প্রতিদিনই দেখা যাচ্ছে। উপসর্গবিহীন কোভিড পজ়িটিভ যাঁরা, তাঁরা প্রায় সকলেই বাড়িতে চিকিৎসা করাচ্ছেন। এঁদের অনেকে আবার রিপোর্ট নেগেটিভ আসার আগেই রাস্তায় বেরিয়ে পড়ছেন। যার ফলে তাঁদের সংস্পর্শে এসে আরও অনেকে সংক্রমিত হচ্ছেন।