প্রতীকী ছবি।
করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি নিয়েই শহরের বাস ডিপোগুলিতে কাজ করতে হচ্ছে রাজ্য পরিবহণ নিগমের কর্মী এবং আধিকারিকদের। ইতিমধ্যে একাধিক কর্মী এবং আধিকারিক আক্রান্ত হলেও কলকাতার কোথাও ডিপো বন্ধ হয়নি। অভিযোগ, সরকারি তরফেও সংক্রমণ ঠেকানোর জন্য তৎপরতা দেখা যায়নি। এই অবস্থায় পরিস্থিতি সামাল দিতে রাজ্য পরিবহণ নিগমের সল্টলেক ডিপোয় বিশ্বকর্মা পুজোর খরচের টাকা বাঁচিয়ে কর্মী এবং আধিকারিকেরা জীবাণুনাশক টানেল বসালেন। প্রায় ৩৫ হাজার টাকা খরচ করে কলকাতার একটি পেশাদার সংস্থাকে দিয়ে তাঁরা ওই কাজ করিয়েছেন। ত্বকের ক্ষতি করে না এমন রাসায়নিক দিয়ে ওই টানেলে জীবাণুমুক্ত করার কাজ চলছে। সল্টলেকে ভূতল পরিবহণ নিগমের ডিপোতেও কর্মী এবং আধিকারিকেরা যৌথ ভাবে এমন পদক্ষেপ করেছেন বলে জানা গিয়েছে।
পরিবহণ দফতর সূত্রের খবর, কসবা এবং বিধাননগর— এই দু’জায়গায় ডিপো লাগোয়া এলাকায় পাবলিক ভেহিকল্স ডিপার্টমেন্টের (পিভিডি) অফিস রয়েছে। ব্যক্তিগত এবং বাণিজ্যিক গাড়ির মালিকানা ও কর সংক্রান্ত প্রয়োজন মেটাতে সেখানে ইদানীং বহু মানুষ আসছেন। ভিড়ের মধ্যে দূরত্ব-বিধি মানা হচ্ছে না বলে অভিযোগ। আরও অভিযোগ, অনেকের মুখে মাস্কও থাকছে না। ফলে সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা বাড়ছে। সল্টলেক ডিপোর একতলায় পিভিডি-র অফিস থাকায় নিগমের কর্মীদের প্রায়ই ওই ভিড় ঠেলে অফিসে পৌঁছতে হচ্ছিল। এই অবস্থায় খানিকটা মরিয়া হয়েই কর্মী এবং আধিকারিকেরা এই টানেল বসিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে পরিবহণ নিগমের এক কর্মী বলেন, ‘‘এই বছরে এমনিই বিশ্বকর্মা পুজোয় আড়ম্বরের সুযোগ নেই। তাই সংক্রমণ থেকে বাঁচতে এই উদ্যোগ।’’
সমস্যার চিত্র প্রায় এক কসবা ডিপোতেও। সকাল থেকে ভিড় গিজগিজ করছে ডিপোয়। করোনায় মারা গিয়েছেন সেখানকার এক কর্মী। তার পরেও পরিস্থিতি বদলায়নি। ওই ডিপোর কর্মীরা অবশ্য এখনও এমন টানেল বসিয়ে উঠতে পারেননি। সংক্রমণের ঝুঁকি নিয়েই কাজ করতে হচ্ছে তাঁদের।
কলকাতার ডিপো ছাড়াও পরিবহণ দফতরের অফিসগুলিতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, কালনা-সহ একাধিক ডিপো বন্ধ রাখতে হয়েছে। তবে কলকাতায় সংক্রমণ বাড়লেও ডিপো বন্ধ রাখা হয়নি। যাত্রী-স্বার্থের কথা ভেবে প্রতিদিন বাস নিয়ে বেরোচ্ছেন কর্মীরা। রাস্তায় বাসের জোগান ঠিক রাখতে গিয়ে যে ভাবে প্রতিদিন তাঁদের ছুটতে হচ্ছে, তাতে রীতিমতো আশঙ্কিত তাঁরা। যদিও পরিবহণ দফতরের আধিকারিকেরা এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)