প্রতীকী ছবি।
সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের আঁচ লেগেছে কলকাতা মেট্রোর একাধিক স্টেশনে। বিভিন্ন স্টেশনের কর্মী, চালক, কারশেড এবং সাব-স্টেশনের কর্মীদের মধ্যেও উদ্বেগজনক হারে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে। ফলে পরিষেবা সচল রাখা নিয়েই সংশয় দেখা দিয়েছে। সব থেকে খারাপ অবস্থা দক্ষিণেশ্বর থেকে কবি সুভাষ পর্যন্ত বিস্তৃত উত্তর-দক্ষিণ মেট্রোর। তবে যাত্রী কম এবং ট্রেনও কম চলায় তুলনামূলক ভাবে সুবিধাজনক অবস্থায় রয়েছে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো।
উত্তর-দক্ষিণ মেট্রোর বেশির ভাগ স্টেশনেই কেউ না কেউ কোভিড সংক্রমিত। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত, দক্ষিণেশ্বর স্টেশনে এক জন, নোয়াপাড়ায় চার জন, বেলগাছিয়ায় তিন জন সংক্রমিত। ওই স্টেশনে আরও এক জন উপসর্গ নিয়ে অসুস্থ। এ ছাড়াও গিরিশ পার্ক, মহাত্মা গাঁধী রোড এবং সেন্ট্রাল স্টেশনে এক জন করে, এসপ্লানেডে দু’জন, পার্ক স্ট্রিটে চার জন, ময়দান এবং রবীন্দ্র সদন স্টেশনে এক জন করে, নেতাজি ভবনে ছ’জন, কালীঘাটে পাঁচ জন, রবীন্দ্র সরোবর এবং কবি নজরুল স্টেশনে তিন জন করে সংক্রমিত হয়েছেন বলে খবর। আক্রান্তদের মধ্যে যেমন আছেন স্টেশন সুপার, ট্র্যাফিক সুপারভাইজ়ার, বুকিং কাউন্টারের কর্মী, তেমনই আছেন সাফাইকর্মীরাও। সূত্রের খবর, এ ছাড়াও প্রায় ৩০ জন মোটরম্যান বা মেট্রোচালক, কারশেড এবং মেট্রোর সাব স্টেশনগুলির একাধিক কর্মী সংক্রমিত। সব থেকে খারাপ অবস্থা সম্পূর্ণ মহিলা পরিচালিত স্টেশন নেতাজি ভবনের। সেখানে ছ’জন মহিলাকর্মী সংক্রমিত। তার পরেই রয়েছে কালীঘাট স্টেশন, যেখানে পাঁচ জন সংক্রমিত।
এর মধ্যেই সকাল সাড়ে ৬টা থেকে রাত প্রায় ১০টা ৪৫ মিনিট পর্যন্ত পরিষেবা চালু রাখার কাজ সামলাতে হচ্ছে কর্মীদের। আগের তুলনায় এখন মেট্রোয় ট্রেনের সংখ্যাও বেড়েছে। পাশাপাশি মাস কয়েক আগে দক্ষিণেশ্বর পর্যন্ত পরিষেবা সম্প্রসারিত হয়েছে। কিন্তু পুরনো কর্মীদের দিয়েই সেই পথে মেট্রো চলছে বলে অভিযোগ। ফলে কাজের চাপও বেড়েছে। এই অবস্থায় পার্ক স্ট্রিটের মেট্রো ভবনের কর্মীরা বাড়ি থেকে কাজের সুযোগ পেলেও পরিষেবার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত মেট্রোর ট্র্যাফিক বিভাগের কর্মীদের নিয়মিত কাজে আসতে হচ্ছে। ফলে তাঁদের সংক্রমণের আশঙ্কা
অনেক বেশি।
তাই পরিষেবায় যুক্ত কর্মীদের রোটেশন পদ্ধতিতে এক দিন অন্তর কাজ এবং পরিষেবার সময় কমানোর দাবি উঠেছে। মঙ্গলবার রাজ্যের শাসক দল ঘনিষ্ঠ আইএনটিটিইউসি অনুমোদিত মেট্রোর প্রগতিশীল শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন মেট্রো রেলের জেনারেল ম্যানেজারকে চিঠি দিয়েছে। সংগঠনের সভাপতি মদন মিত্র ওই চিঠিতে ছ’দফা দাবি জানিয়েছেন। সেখান এক দিন অন্তর কাজের দাবি, পরিষেবার সময় পুনর্বিবেচনা করা ছাড়াও ট্রেন, কন্ট্রোল রুম, সাব স্টেশন, চালকদের কামরা, কারশেড নিয়মিত জীবাণুমুক্ত করার দাবি জানানো হয়েছে। মেট্রোর এক আধিকারিক বলেন, “মেট্রো পরিষেবা ভেঙে পড়লে শহরের গণপরিবহণের হাল আরও খারাপ হবে।” তবে মেট্রোর কর্তারা জানাচ্ছেন, সংক্রমণ ঠেকাতে সব পদক্ষেপ করা হবে।