বার্তাবাহী: স্বাস্থ্য পরীক্ষার সঙ্গে সঙ্গে ট্র্যাফিক-বিধি মেনে চলার বার্তা দিতে মাইক হাতে প্রচারে এক প্রাক্তন নার্স। বৃহস্পতিবার, রাসবিহারী মোড়ে। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক
গত সোম ও মঙ্গলবার শহরে করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন যথাক্রমে ৩৮৮ ও ৫৮৯ জন। বুধবার সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬২১-এ। প্রতিদিনই এ ভাবে সংক্রমিতের সংখ্যা বাড়তে শুরু করায় চিন্তিত চিকিৎসকেরা।
দক্ষিণ কলকাতার ৮ ও ১০ নম্বর বরোই আপাতত পুরসভার মাথাব্যথার প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ১০ নম্বর বরো এলাকার নিউ আলিপুর, গরফা, লেক, যাদবপুর, গল্ফ গ্রিন, রিজেন্ট পার্ক ও নেতাজিনগরে বেড়েই চলেছে সংক্রমিতের সংখ্যা। ৮ নম্বর বরো এলাকার গড়িয়াহাট, বালিগঞ্জ, ভবানীপুর, টালিগঞ্জও মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ওই দু’টি বরোয় সংক্রমিতের সংখ্যা কিছুতেই কমছে না। মঙ্গলবার ১০ নম্বর বরোয় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৯৯। বুধবার তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১১-তে। ৮ নম্বর বরোয় মঙ্গল ও বুধবার করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল যথাক্রমে ৯৬ ও ৬৩।
তবে কলকাতা পুরসভা সূত্রের খবর, গত কয়েক দিনে আর শুধু দক্ষিণেই সংক্রমণের বৃদ্ধি সীমাবদ্ধ নেই। এক দিকে ১৪ নম্বর বরোর বেহালা, পর্ণশ্রী, হরিদেবপুর ও ঠাকুরপুকুর এলাকায় সংক্রমণ বাড়ছে। সেই সঙ্গে করোনা বাড়ছে উত্তর কলকাতার এক নম্বর বরো এলাকার টালা ও চিৎপুরেও। উত্তর কলকাতায় তিন নম্বর বরোয় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা সব থেকে বেশি। বুধবার সেখানে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৪১। ওই বরো এলাকার মানিকতলা, ফুলবাগান, বেলেঘাটায় সংক্রমণের হার তুলনায় বেশি।
কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্য আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, পুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে প্রতিদিনই জ্বর-সর্দি নিয়ে আসা আক্রান্তদের দীর্ঘ লাইন দেখা যাচ্ছে। দিন তিনেক আগে দক্ষিণে করোনা বেশি হারে ছড়ালেও এখন উত্তরের বিভিন্ন ওয়ার্ডেও আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে।
করোনার দাপট বাড়ছে উত্তর ২৪ পরগনাতেও। বুধবার ওই জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৪৩৫। বিশেষত সল্টলেক, বারাসত, দমদমে দ্রুত সংক্রমণ বৃদ্ধি চিন্তা বাড়াচ্ছে প্রশাসনের।
পুরসভার চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, ফোনে আক্রান্তেরা জানিয়েছেন, তাঁদের বেশির ভাগই উপসর্গহীন। কারও হালকা জ্বর, সর্দি-কাশি রয়েছে। তাই বেশির ভাগই বাড়িতে থেকে চিকিৎসা করাচ্ছেন। পুর চিকিৎসকেরা আরও জানাচ্ছেন, সব বয়সের মানুষই আক্রান্ত হচ্ছেন। তবে করোনা পরীক্ষার সংখ্যা বাড়লে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়বে বলে মনে করছেন তাঁরা।
সংক্রমণ লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়লেও এখনও আমজনতার মাস্কে অনীহা চোখে পড়ার মতো। বক্ষরোগ চিকিৎসক অনির্বাণ নিয়োগীর কথায়, ‘‘প্রতিদিন আমাদের একই কথা বলতে হচ্ছে। মাস্কই এখন সম্বল। মানুষ না মাস্ক পরলে প্রশাসনকে পরাতে বাধ্য করাতে হবে।’’